বিশ্বব্যাপী উচ্চশিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর গড় অনুপাতের নূন্যতম মানদন্ড ধরা হয় ১:২০। অর্থ্যাৎ প্রতি ২০ শিক্ষার্থীর জন্য একজন করে শিক্ষক থাকতে হবে। তবে এবার এ মানদন্ড বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়েছে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯ টি বিভাগ। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) সর্বশেষ প্রকাশিত ৪৮তম বার্ষিক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, পাবিপ্রবির মোট ২১ টি বিভাগে পরিচালিত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম। এর মধ্যে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপাতে সবচেয়ে পিছিয়ে লোকপ্রশাসন এবং সমাজকর্ম বিভাগ। বিভাগ দুটিতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর গড় অনুপাত যথাক্রমে ১:৬৪ এবং ১:৫৪। অর্থ্যাৎ প্রতি ৬৪ এবং ৫৪ জন শিক্ষার্থীর জন্য বিভাগদুটিতে হয়েছেন মাত্র একজন শিক্ষক। যা বিশ্বব্যাপী প্রচলিত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর গড় অনুপাতের মানদন্ডের ধারের কাছেও নেই। এরপরের অবস্থান রয়েছে ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ এবং ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ।
এছাড়া যেসব বিভাগে শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাতে আন্তর্জাতিক মান নেই সেগুলো হলো – কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেকট্রিক্যাল ইলেকট্রনিক এন্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং, ইনফরমেশন এন্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, আর্কিটেকচার, নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা, গণিত, ফার্মেসি, রসায়ন, পরিসংখ্যান, ব্যবসায় প্রশাসন, অর্থনীতি, বাংলা, ইংরেজি, ইতিহাস ও বাংলাদেশ স্টাডিজ বিভাগ।
তবে শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাতে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ এবং পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ। উভয় বিভাগে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপাত যাথক্রমে ১:১৪ এবং ১:২০।
ইউজিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫৪৮৭ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে রয়েছেন মোট ১৭৭ জন শিক্ষক। অর্থ্যাৎ প্রতি ৩১ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে শিক্ষক আছেন একজন করে। এর মধ্যে আবার ৩৫ জন শিক্ষক আছেন শিক্ষাছুটিতে।
এ বিষয়ে ছাত্র উপদেষ্টা দপ্তরের পরিচালক ড. মোঃ নাজমুল হোসেন বলেন – ” পাবিপ্রবিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের এই সমস্যা ব্যতীত আরো অনেক সমস্যা রয়েছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসন অর্থ্যাৎ আমাদের অভিভাবক উপাচার্য এবং উপ-উপাচার্য এসব বিষয় নিয়ে সমস্যা সমাধানে খুবই সচেষ্ট। উনাদের নেতৃত্বে বর্তমানে একটি কারিকুলাম তৈরি হচ্ছে যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের অনুপাত কেমন হবে তাদের স্ট্যান্ডার্ড মান অনুযায়ী ক্রেডিট কেমন হবে এই বিষয়ে আলোকপাত চলছে যাতে করে শিক্ষার্থীদের এই সমস্যা গুলোকে সমাধান করা যায়। ”
তবে শিক্ষক সংকটের এই বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখার আহ্বান জানিয়েছে সাধারন শিক্ষার্থীরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২ ব্যাচের একাধিক বিভাগের শিক্ষার্থীরা জানায় শিক্ষক সংকটের জন্য আমরা সেমিস্টার ঠিকসময় মতো শেষ করতে পারছি না। নতুন কারিকুলাম কার্যকর হয়েছে ২০২০-২০২১ সেশনের শিক্ষার্থীদের থেকে। অথচ তাদেরসহ পূর্বের ব্যাচগুলোর জন্য নির্দিষ্ট কোনো সিলেবাস বা কারিকুলাম আসছে না। যার ফলে বিভিন্ন অনিশ্চয়তা কাজ করছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে।
Leave a Reply