বান্দার সকল প্রকার ইবাদত- বন্দেগি শুধুমাত্র মহান আল্লাহকে রাজি-খুশি করার জন্যই করতে হবে।যাবতীয় ইবাদত একমাত্র আল্লাহর জন্যই করা এবং এতে আল্লাহ ব্যাতিত অন্য কাউকে সন্তুষ্ট করার ইচ্ছে বা নিজের নফসের(মনের) খাহেশকে মিশ্রিত না করার নাম হলো ইখলাস তথা খাঁটি বা সহীহ নিয়ত।
অবশ্য কোন কোন ইবাদতে কিছু কিছু পার্থিব উপকারও হাসিল হয়ে থাকে। যেমন, নামাজের দ্বারা শরীরের কসরত হয়,রোযার দ্বারা পাকস্থলীর উন্নতি হয় প্রভৃতি, তবে সেটাকে উদ্দেশ্য বানিয়ে ইবাদত করা যাবে না। বরং ইবাদত হতে হবে একমাত্র আল্লাহ তা’য়ালার রেজামন্দী হাসিলের উদ্দেশ্যে।
এই ইখলাস বা খাঁটি নিয়ত না হলে ইবাদাতে ছওয়াব পাওয়া যাবে না। তাই ইবাদতের ছওয়াব ও ফজিলত অর্জনের জন্য সহীহ্ নিয়ত বা ইখলাস জরুরি।
সহীহ্ বোখারীর প্রথম হাদিস এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি মিম্বরের উপর উঠে বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃ) কে বলতে শুনেছি-” যাবতীয় কাজের ফলাফল নিয়তের দ্বারা হয়।প্রত্যেক ব্যাক্তি তা-ই পাবে, যা সে নিয়ত করেছে।কাজেই যার হিজরত দুনিয়াবি কোন স্বার্থ হাসিলের জন্য কিংবা কোন রমনীকে বিবাহ করার জন্য হয়েছে, তার হিজরত সেদিকেই হয়েছে-যে জন্য সে হিজরত করেছে।
(সহীহ বোখারী, হাদিস নং-১)
ব্যাখ্যাঃ আলোচ্য হাদিসে সহীহ্ নিয়তের গুরুত্ব, পন্থা ও স্বরূপ সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। কোন কাজে বিশুদ্ধ নিয়ত না থাকলে সে কাজ আল্লাহর নিকট গ্রহনযোগ্য হবে না। তাই আল্লাহর নিকট কোন কাজের পুরস্কার পেতে হলে, সে কাজে নিয়তের বিশুদ্ধতা থাকা অপরিহার্য।
এ জন্যই উক্ত হাদিসে হিজরতের মত একটি মাকসুদ লি- গাইরিহী বিষয়কে উল্লেখ করে অত্যন্ত সহজভাবে সহীহ্ নিয়ত বা ইখলাস ও গলদ নিয়তের মধ্যে পার্থক্য বোঝানো হয়েছে। এবং এতদুভয়ের পরিণাম উল্লেখ করে মহান আল্লাহর নিকট কবূলিয়্যাত পেতে সহীহ্ নিয়ত করার প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
এ হাদিস দ্বারা এটাও বোঝা গেলো, যারা দুনিয়াবি স্বার্থ হাসিলের জন্য কোন নেক কাজ করবে,তারা দুনিয়াই লাভ করবে,কিন্তু পরকালে তার কোন প্রতিদান পাবে না। অধিকন্তু নেকের কাজ দুনিয়াবি নিয়তে করার কারণে পরকালে শাস্তি ভোগ করবে।
উল্লেখিত হাদিসটির আরেকটি তাৎপর্য হলো- আমল নিয়তের মাধ্যমেই গ্রহনযোগ্য হয়। এ হিসেবেই নামাজ,রোযা প্রভৃতি ইবাদতে নিয়তকে ফরজ করা হয়েছে।
” নিয়ত ব্যাতিত ইবাদত শুদ্ধ হয় না বা আমল আমলরুপে পরিগনিত হয়না।”।
প্রতিটি আমলে সহীহ্ নিয়তের গুরুত্বের কারণে শ্রেষ্ঠ হাদিসগ্রন্থ সহীহ্ বোখারীর প্রথমেই ইমাম বোখারী(র.) এ হাদিস টি উপস্থাপন করেছেন।
সুতরাং আমরা আমাদের কর্মের উত্তম প্রতিদান ও উভয় জাহানের সাফল্যের জিন্দেগী লাভ করতে চাইলে নিয়তকে বিশুদ্ধ করে দ্বীনের ইবাদত ও দুনিয়ার কাজ সবই আল্লাহর সন্তুষ্টি ও আখিরাতের সাফল্যকে মাকসাদ বানিয়ে করতে হবে। তাহলেই আমরা দুনিয়ার পেরেশানি থেকে মুক্ত হয়ে দুনিয়াতে শান্তি ও স্বস্তির জিন্দেগী ও পরকালের চিরসুখের সাফল্যময় জীবন লাভ করতে পারবো ইনশাআল্লাহ।
লেখকঃ হাফেজ আব্দুল মুকিত বিশ্বাস
মাশাআল্লাহ 💕💕
অনেক সুন্দর হয়েছে 💓💓