রিক্সাচালক শাকিল হাসানের স্ত্রীর আগের দুইটি বাচ্চা পেটে থাকতে পরিনত হওয়ার আগেই নষ্ট হয়ে গেছে। এবারের বাচ্চা নিয়ে তাই দরিদ্র এই পরিবার উচ্ছসিত ছিল একটু বেশীই। কিন্তু সন্তান জন্ম নেয়ার পরে দারিদ্রতার সাথে সাথে অসহায় হয়ে পরেছে পুরো পরিবার। সোমবার দুপুরে ফরিদপুর প্রেসক্লাবে উপস্থিত হয়ে কান্নাজড়িত কন্ঠে নিজেদের অসহায়ত্বের কথা তুলে ধরেন এই প্রতিবেদকের কাছে। দেশবাসির কাছে আকুতি জানান বাচ্চাটি বাচাতে সহায়তা করার। গত শুক্রবার রাতে ফরিদপুর সদর উপজেলার শিবরামপুর এলাকার নানাবাড়িতে রিক্সাচালক শাকিল হাসান ও আমেনা বেগমের ঔরসে জন্ম নেয় এক ফুটফুটে শিশু। বাড়িতে স্বাভাবিক ভাবেই জন্ম নেয় বাচ্চাটি। কিন্তু জন্মের পরে বাচ্চাকে দেখে শিউরে উঠে সবাই। প্রথমত বাচ্চাটির দুইটি পা’ই বাঁকা, দ্বীতিয়ত বাচ্চাটির প্রসাব পায়খানা রাস্তা নেই। পরদিন শনিবার বাচ্চাটিকে নিয়ে তার মা ও নানা আসেন ফরিদপুর শিশু হাসপাতালে, সেখানে বাচ্চাকে ভর্তি না নিয়ে পাঠানো হয় ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে। সেখানে একদিন রেখে বাচ্চার যথাযত চিকিৎসা সেখানে নেই জানিয়ে ঢাকা শিশু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয় সেখানকার চিকিৎসকরা। অর্থাভাবে ঢাকা নিতে না পেরে বাচ্চাটিকে নানা বাড়িতে নিয়ে যায় পরিবার। কোন ভাবে টাকা ম্যানেজ করতে না পেরে দেশবাসীর কাছে বাচ্চাকে বাচানোর আকুতি জানাতে বাচ্চাকে নিয়ে মা আমেনা বেগম আসেন ফরিদপুর প্রেসক্লাবে।পরীক্ষা করে দেখা গেছে, বাচ্চাটির প্রসাব পায়খানার রাস্তা নেই, পিঠে একটা টিউমারের মত আছে। নাভী দিয়ে মাঝে মাঝে রক্ত ঝড়ছে। দুটি পা বাঁকা। ফরিদপুর সদর উপজেলার স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মাহফুজুর রহমান ভুলু জানান, ‘সব শুনে মনে হচ্ছে বাচ্চাটির অনেক গুলো সমস্যা আছে, সেক্ষেত্রে বিশেষায়িত কোন হাসপাতালে তাকে চিকিৎসা দিতে হবে। এধরনের চিকিৎসা বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয়(পিজি) ও ঢাকা শিশুতে হয়ে থাকে। শিশু সার্জারি চিকিৎসকগনই ভাল বলতে পারবেন, তবে আমার জানা মতে প্রসাব পায়খানার রাস্তা না থাকলে বেশ কয়েকটি সার্জারি করতে হবে, এই চিকিৎসা বেশ ব্যায় বহুলও বটে। শিশুটির নানা আবু তালেব জানান, তার জামাই রিক্সা চালায়। এই দিয়ে যা আয় হয় তাতে কোন রকম সংসার চলে। আমিও দরিদ্র মানুষ। ঠিকমত খাওয়া দাওয়াই চলে না এই শিশুর চিকিৎসা করাবো কিভাবে? আমাদের পক্ষে এই শিশুর চিকিৎসা করানো সম্ভব না। দেশের দশ জন যদি সাহায্য করে তাহলে হয়ত আমার নাতিটার চিকিৎসা হবে। আমি দেশের মানুষের কাছে নাতিটাকে বাচানোর জন্য আবেদন জানাচ্ছি। শিশুটির মা কান্নজাড়িত কন্ঠে বলেন, আপনাদের দুয়ারে আসছি, বাচা মরা আল্লাহর হাতে, আমার বাচ্চাটার চিকিৎসা যাতে করাতে পারি সেই ব্যবস্থাটা আপানারা দশজনে করে দেন। বিষয়টি ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকারকে জানানো হলে তিনি তাৎক্ষনিক ৫ হাজার টাকা অর্থ সহায়তা প্রদান করেন। জেলা প্রশাসক জানান, পরবর্তীতে প্রয়োজন হলে জেলা প্রশাসন থেকে আরো সহায়তা করা হবে। পরিবারের সদস্যদের কোন বিকাশ নম্বর বা ব্যাংক এ্যাকাউন্ট নেই। তাই কোন সহৃদবান ব্যাক্তি সহায়তা করতে চাইলে এই প্রতিবেদকের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। তরিকুল ইসলাম হিমেল ০১৭৭৭ ৭৭ ৮১ ৬৫,
অথবা শিশুটির নানা আবু তালেব ০১৭২৭৯৫৭৩৫৪, আত্মীয় সোনিয়া আক্তার ০১৭২৭৮২৯৯০৯(বিকাশ) নম্বরে যোগাযোগ করতে পারেন।
Leave a Reply