চকরিয়া উপজেলার বরইতলী ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের উর্বর দুই/তিন ফসলি জমির টপ সয়েল (জমির উপরিভাগের মাটি) কাটার ধুম পড়েছে। আর্থিকভাবে সাময়িক লাভবান হলেও এতে ফসল উৎপাদন ব্যাপকহারে হ্রাস পাওয়ার আশঙ্কা করছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ। চকরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এসএম নাসিম হোসেন বলেন, শস্যভান্ডার খ্যাত এ অঞ্চলের অধিকাংশ জমিই উর্বর পলি মাটি সমৃদ্ধ। আমরা সবসময় কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে থাকি টপসয়েল বিক্রির কারণে জমি চাষাবাদের অযোগ্য হয়ে পড়ে। ফলে ভালো বীজ ও অধিক সার ব্যবহারের পরেও কাঙ্ক্ষিত ফসল হয় না। তিনি আরো বলেন, এসব জমিতে বছরে দু’টি মৌসুমে ধান, সরিষা, রসুন, মরিচ ও শীতকালীন সবজি ব্যাপকভাবে উৎপাদন হয়। কিন্তু কিছু অসাধু মাটি ব্যবসায়ী কৃষকদের অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে এসব জমির টপ সয়েল কিনে নিচ্ছেন। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বরইতলী ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে দুই বা তিন ফসলি জমির টপ সয়েল কেটে বিক্রির হিড়িক পড়েছে। বড় বড় ট্রাকে এসব মাটি পরিবহনের সময় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গ্রামীণ রাস্তাঘাটও। নানা দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে সাধারণ মানুষকে চলাচল করতে হচ্ছে এসব রাস্তায়। সরেজমিন প্রতিবেদন করতে গিয়ে দেখা যায়, বরইতলী ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের শান্তিবাজার ফতেহ আলী সিকদারপাড়া এলাকায় স্কেভটর দিয়ে কৃষি জমির টপ সয়েল কেটে মাটি বিক্রি করছে স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামিলীগের নেতা শাহাদত হোসেন। এ ব্যাপারে স্থানীয় কৃষিবিদরা বলেন, টপ সয়েল জমির প্রাণ। জমির উপরের আট থেকে ১০ ইঞ্চিই হলো টপ সয়েল। আর ওই অংশেই থাকে মূল জৈবশক্তি। কৃষকরা জমির টপ সয়েল বিক্রি করে নিজেদের পায়ে কুড়াল মারছেন। মাটি বিক্রির সঙ্গে সঙ্গে তারা জমির উর্বরতা শক্তিই বিক্রি করে দিচ্ছেন। জমির এ ক্ষতি ১০ বছরেও পূরণ হবে না। যেভাবে মাটি বিক্রি হচ্ছে তাতে করে ফসল উৎপাদন আশঙ্কাজনক হারে হ্রাস পেতে পারে। এসব বিষয়ে কোনো নীতিমালা না থাকায় কৃষক ও মাটি ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না প্রশাসন। টপসয়েল কাটার বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাহাত উজ জামানের কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঐ এলাকায় জমির টপসয়েল কাটছে এ বিষয়ে অবগত ছিলাম না। এসব বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply