কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার হারবাং ইউনিয়নে হেফজখানা ও এতিমখানার জায়গায় সীমানা বিরোধকে কেন্দ্র করে দখলবাজদের হামলায় ১জনকে গুরুতর আহত করার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে ৪ঠা মার্চ (মঙ্গলবার) বিকেল ৫টার দিকে হারবাং ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের করমুহুরীপাড়া ইবনে আব্বাছ (রাঃ) হেফজখানা ও এতিমখানার চলাচলের রাস্তার সামনে। এ হামলার ঘটনায় গুরুতর আহত ব্যক্তি ওই হেফজখানা ও এতিমখানা পরিচালনা কমিটির সহসভাপতি মৃত আলী হোছন এর ছেলে ছৈয়দ আলম (৪২)। এ ঘটনার পর ভুক্তভোগী ছৈয়দ আলম বাদী হয়ে চকরিয়া থানায় ৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরো ২/৩ জনকে অভিযুক্ত করে একটি এজাহার দায়ের করেছেন। এতে অভিযুক্তরা হলেন- একই এলাকার মৃত আব্দুল মজিদের ছেলে মনজুর আলম (৫০), মৃত মোঃ শাহা আলমের ২ ছেলে মোঃ শরীফ (২৮) ও শহিদুল ইসলাম খোকন (৩০)। থানায় দায়েরকৃত এজাহার সূত্রে জানা যায়, ইবনে আব্বাছ (রাঃ) হেফজখানা ও এতিমখানার পশ্চিম সীমানার পরে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বসতভিটা। সেই সুবাদে উক্ত হেফজখানা ও এতিমখানার পশ্চিম প্বার্শের সীমানার বেশকিছু জায়গা গায়ের জোরে দখলের অপচেষ্টা চালায় মনজুর আলম গংরা। ওই হেফজখানা ও এতিমখানার সীমানার জায়গা মনজুর আলম গংরা দখলের চেষ্টা করছেন মর্মে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে ওই ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা কমিটির সহসভাপতি ছৈয়দ আলম নালিশ করলে গণ্যমান্য ব্যক্তিগণ তারা উভয়পক্ষকে নিয়ে ইতিপূর্বে অনেকবার সালিশি বৈঠক করেন। সালিশি বৈঠকে উভয়পক্ষের সম্মতিক্রমে গতকাল বিকালে হেফজখানা ও এতিমখানার জমির পরিমাপের সিদ্ধান্ত হয়। সালিশি বৈঠকের বিচারকদের সিদ্ধান্তমতো ১জন ভূমি পরিমাপক (সার্ভেয়ার) দিয়ে ইবনে আব্বাছ (রাঃ) হেফজ খানা ও এতিমখানার পশ্চিম সীমানার জায়গা পরিমাপ করা হচ্ছিলো। পরিমাপের এক পর্যায়ে অভিযুক্ত মনজুর আলম গংরা সালিশ-বিচার মানবে না বলে জোর পূর্বক সীমানার খুঁটি তুলে ফেলে। হঠাৎ অভিযুক্ত মনজুর আলম গংদের এমন আচরণে সহসভাপতি ছৈয়দ আলম ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরাসহ শালিসি বৈঠকের বিচারকরা নিরুপায় হয়ে সেখান থেকে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু, চলে যাওয়ার পথিমধ্যে উক্ত হেফজখানা ও এতিমখানার সামনের রাস্তায় পৌঁছলে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা অশ্লীল ভাষায় গালি-গালাজ করতে থাকে। এসময়, এঘটনাকে প্রমাণ হিসেবে রাখতে ছৈয়দ আলম তার মোবাইলে ভিডিও ধারণ করার চেষ্টা করলে, অভিযুক্ত মনজুর আলম গংরা তার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে ধারালো দা, লোহার রড, লোহার হাতুড়ী, ও লাঠিসহ দেশীয় অবৈধ অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পরিকল্পিতভাবে হামলা চালায়। একপর্যায়ে তারা ছৈয়দ আলমের হাতে থাকা একটি ইনফিনিক্স কোম্পানীর মোবাইল ফোন জোরপূর্বক কেড়ে নিয়ে রাস্তায় আছাড় মেরে ক্ষতি সাধন করে। যার বাজার মূল্য সতের হাজার ৫শত টাকা। পরে, মনজুর আলমের হাতে থাকা লোহার হাতুড়ী দিয়ে ছৈয়দ আলমকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথা লক্ষ্য করে স্বজোরে আঘাত করলে উক্ত আঘাত ছৈয়দ আলম তার ডান হাত দিয়ে প্রতিহত করার চেষ্টাকালে তার ডান হাতের কব্জিতে স্বজোরে লেগে গুরুতর হাঁড়ভাঙ্গা জখম হয়। একই সময় মোঃ শরীফের হাতে থাকা লোহার রড দিয়ে মাথা লক্ষ্য করে স্বজোরে আঘাত করলে, উক্ত আঘাত লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে তার ডান পায়ের পাতায় লেগে জখম হয়। ২ধাপে আঘাতের ফলে ছৈয়দ আলম মাটিতে পড়ে গেলে ৩নং অভিযুক্ত শহিদুল ইসলাম খোকন তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গলা চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে ও শক্ত কাঠের লাঠি দিয়ে ছৈয়দ আলমের সর্বশরীরে এলে এলোপাতাড়ীভাবে আঘাত করে ফুলা জখম করে। পরে ছৈয়দ আলমের শৌর-চিৎকারে পাড়া প্রতিবেশিরা এগিয়ে এসে অভিযুক্ত মনজুর আলম গংদের কবল থেকে গুরুতর জখম অবস্থায় উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য চকরিয়া সরকারি হাসপাতালে এনে ভর্তি করেন। কর্তব্যরত ডাক্তার জখমের চিকিৎসা করেন। চিকিৎসা পরবর্তী থানায় এজাহার দায়ের করে বাড়িতে চলে গেলে বর্তমানেও অভিযুক্ত মনজুর আলম গংরা অশ্লীল ভাষায় গালি-গালাজ ও বিভিন্নভাবে হুমকি প্রদর্শন করে আসছেন বলে জানা যায়। এমতাবস্থায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে জানা গেছে ভুক্তভোগী ছৈয়দ আলম। এদিকে, এজাহারের প্রধান অভিযুক্ত মনজুর আলমের কাছে জানতে তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ ঘটনা অস্বীকার করে বলেন, ছৈয়দ আলমের উপর আমরা কোন ধরনের হামলা করিনি। বরং ছৈয়দ আলম আমাদের উপর হামলা করেছে। আমাদের উপর হামলার ঘটনায় আমরা চকরিয়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করছি এবং অভিযোগের পর হারবাং পুলিশ ফাঁড়ি থেকে পুলিশ এসে ঘটনার বিষয়ে তদন্ত করে গেছে।
Leave a Reply