কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার হারবাং ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড করমুহুরীপাড়া গ্রামে চুরির অপবাদ দিয়ে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে জাহেদুল ইসলাম (২২) ও মো. শাহাজাহান (২৮) নামের ২ যুবককে মারধর ও জুতার মালা গলায় পরিয়ে নির্যাতন চালানো হয়েছে। নির্যাতনের সেসব ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলে এলাকায় নিন্দার ঝড় উঠেছে। এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন স্থানীয়রা। । এছাড়াও, দুই যুবককে গলায় জুতা পরিয়ে শাস্তি দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় হারবাং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেহেরাজ উদ্দিন মিরাজ। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, কতিপয় উশৃংখল লোকজন চুরির অভিযোগে তাদেরকে আটক করে এইধরনের অমানবিক শাস্তি দিয়েছে। এদিকে, এ ঘটনার পর শনিবার (১৩ জানুয়ারি) রাতে ভুক্তভোগীদের মধ্যে জাহেদুল ইসলামের স্ত্রী তাহেরা আক্তার মুন্নি (২০) বাদী হয়ে ৭ জনকে অভিযুক্ত করে এবং আরো আছে মর্মে থানায় একটি এজাহার দায়ের করেছেন। এ ঘটনার সাথে জড়িত অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন- মৃত ওয়াজেদ আলীর ছেলে বেলাল আহমদ (৪৫), সামশু আলমের ছেলে নেজাম উদ্দিন (৩৮), মনিরুজ্জামানের ছেলে জয়নাল আবেদীন (৩৫), মৃত নুরুল ইসলাম প্রঃ বাদশার ছেলে আলমগীর(৪০), মৃত কামাল হোসেনের ছেলে জসিম উদ্দিন (৩৬), ইসরাফিলের ছেলে আব্দুল মালেক (৩২), আবদু রশিদের ছেলে ইদ্রিস আহমদ (২৯)। তারা প্রত্যেকে একই এলাকার বাসিন্দা বলে জানা গেছে। দায়েরকৃত এজাহার সূত্রে জানা যায়, পূর্ব শত্রুতার আক্রোশে গত ১১ জানুয়ারী সকাল আনুমানিক ৯টার দিকে উল্লেখিত অভিযুক্ত ব্যক্তিরা জাহেদুল ইসলাম ও মো. শাহাজাহানের বসতবাড়িতে অনধিকার প্রবেশ করে জোরপূর্বক টানা-হেচড়া করে কাজ আছে বলে বাহির করে নিয়ে আসে। এসময় জাহেদুল ইসলামের ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী উপরোল্লিখিত অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বাঁধা প্রদান করলে তারা জাহেদের স্ত্রীকে ধাক্কা মেরে মাটিতে ফেলে দেয়। একইভাবে শাহাজাহানের স্ত্রী কমরু জান্নাত তার স্বামীকে জোরপূর্বক নিয়ে যাওয়ার সময় বাঁধা প্রদান করলে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা তাকেও মারধর করে। পরে, জাহেদুল ইসলাম ও মো. শাহাজাহানকে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে গিয়ে জনৈক ছগিরার দোকানের সামনে বৈদ্যুতিক খুঁটির সাথে রশি দিয়ে বেঁধে লোহার রড ও লাঠি দিয়ে বেদড়ক মারধর করে এবং গলায় জুতার মালা পরিয়ে উল্লেখিত স্থান থেকে করমুহুরীপাড়া স্টেশনে নিয়ে আসে। এসময় অভিযুক্ত ব্যক্তিরা তাদের চুল ন্যাড়া করার চেষ্টা করলে জরুরি সেবা ৯৯৯ এ ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে হারবাং ফাঁড়ির পুলিশ গিয়ে তাদের চুল ন্যাড়া করতে বাঁধা প্রদান করেন এবং জাহেদ ও শাহাজাহানকে উদ্ধার করে ফাঁড়িতে নিয়ে আসেন।
এবিষয়ে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, চুরির ঘটনায় দুই যুবককে গলায় জুতা পরিয়ে শাস্তি দেওয়ার ঘটনাটি একটি বড় অপরাধ। চুরি করে থাকলে তাদেরকে পুলিশের হাতে সোপর্দ করবে এটাই নিয়ম। কিন্তু উশৃংখল লোকজন বিচারের নামে আইন লঙ্গন করেছেন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবার থানায় লিখিত এজাহার দায়ের করেছেন। তদন্তপূর্বক জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply