কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের মালুমঘাটস্থ ফাঁসিয়াখালী রেঞ্জ কার্যালয়ের ৪/৫গজ সামনে সংরক্ষিত রিজার্ভ বনভূমি থেকে গাছ কাটছেন বনদস্যূরা। এমন খবরে গাছ উদ্ধার করতে ছুটে যান বনকর্মীরা। ঘটনাস্থলে বনকর্মীদের উপস্থিতি টের পেয়ে বনদস্যুরা বনকর্মীদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে থাকে। তখন বনকর্মীরাও তাদের আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি ছুড়ে। ফলে এসময় বনকর্মী ও বনদস্যুদের সাথে বন্দুকযুদ্ধ সংঘটিত হয়। এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় ১পথচারী সহ বনবিভাগের ৫জন লোক গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরতর আহত হয়। শনিবার (৬ মে) বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে ৫টা ২০মিনিট পর্যন্ত রেঞ্জ অফিসের সামনে ডুমখালী-রিজার্ভ পাড়া এলাকায় এমন ঘটনা ঘটেছে বলে জানা যায়। এ ঘটনার পর সন্ধ্যা ৬টার দিকে চকরিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি (নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট) রাহাত-উজ-জামান এর উপস্থিতিতে বনবিভাগের দায়িত্বরত সহকারী বন সংরক্ষক (ACF) শীতল পাল ও চকরিয়া থানার ওসি তদন্ত আব্দুল জব্বার, অপারেশন অফিসার রাজিব চন্দ্র সরকারের নেতৃত্বে সঙ্গীয় পুলিশ সদস্যসহ বনবিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে ফের অভিযান পরিচালনা করা হয়। এবিষয়ে ডুলাহাজারা বনবিট কর্মকর্তা অবনি কুমার রায় জানান, ঘটনার দিন দুপুরে রেঞ্জ কার্যালয়ের পশ্চিমপাশে সংরক্ষিত রিজার্ভ বনভূমিতে গাছ কর্তন সহ নতুনভাবে ঘর নির্মাণের কাজ করছেন বনদস্যূরা। এমন সংবাদের ভিত্তিতে আমি সহ আমার অফিসের কয়েকজন কর্মচারীকে সাথে নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে কর্তনকৃত গাছগুলো উদ্ধার করি। এসময় অতর্কিত অবস্থায় রিজার্ভ পাড়া নামক এলাকার চিহৃিত বনদস্যূ ও সন্ত্রাস রমিজ উদ্দিন, নবী হোসেন রবি, নুরুল আলম, ইব্রাহিম, বাবুল, মিয়া, বাদশা, মানোয়ার আলম মনিয়া সহ আরো অনেক লোকজন অস্ত্র, কিরিচ, দা, শক্ত কাঠের লাঠি নিয়ে দৌঁড়ে আসতেছে দেখে আমরাও দৌঁড়ে রেঞ্জ অফিসের সামনে মহাসড়কে আসি। এসময় তারা আমাদের লক্ষ্য করে ফাঁকা গুলি বর্ষণ করতে থাকে। এমতাবস্থায় আমি ও আমার কর্মচারীরা দৌঁড়ে অফিসে ঢুকে অস্ত্র নিয়ে বের হয়ে উপরের দিকে গুলি ছুড়লে সাথে সাথেই তারা ফের আমাদের লক্ষ্য করে অন্তত ৫০ রাউন্ড গুলি বর্ষণ করে। আমরাও তাদের তাড়াতে অন্তত ১৫/১৬ রাউন্ড গুলি বর্ষণ করি।এসময় আমি বিটকর্মকর্তা অবনি কুমার রায়, সূর্য কুমার সিংহ, গোলাম জিলানী মিয়াজী, রহিম উদ্দিন ও সাহেদুল ইসলাম গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুত্বর আহত হই। এ ঘটনার পর সকলকে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এরপরে ঘটনার খবর পেয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি), সহকারী বন সংরক্ষক (ACF), চকরিয়া থানার ওসি তদন্তসহ একদল পুলিশ এবং বনবিভাগের কর্মরত কর্মচারী মিলে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসময় অবৈধভাবে উত্তোলনকৃত ঘরটি গুড়িয়ে দেওয়া হয়। পরে ঐ এলাকাতে অভিযান পরিচালনার করা হচ্ছে টের পেয়ে সবাই পালিয়ে যায়। এরপর ঘটনার সংবাদ পেয়ে ছুঁটে আসেন কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) আনোয়ার হোসেন সরকার।এবিষয়ে বনদস্যুদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অপরদিকে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বনবিভাগ আর বনদস্যূদের পাল্টা গোলাগুলির ঘটনায় নেজাম উদ্দিন নামের একজন কাঁচা মাছ ব্যবসায়ী পথচারীর মাথায় গুলি লেগে আহত হয়েছে। এসময় তাকে উদ্ধার করে দ্রুত নিকটস্থ মেমোরিয়াল খ্রিষ্টান হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে।
Leave a Reply