কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠেছে ৫৮টি করাতকল রয়েছে। এর মধ্যে ৪৯টি করাতকলই অবৈধ। এসব করাতকল উচ্ছেদে বন বিভাগ ও প্রশাসনের নেই কোন উদ্যোগ। বন বিভাগের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চকরিয়া উপজেলার ১৮টি ইউনিয়নের মধ্যে ফাঁসিয়াখালী ও বমুবিলছড়িতে কোনো করাতকল নেই। অন্য ১৬টি ইউনিয়নে ৪৩টি করাতকল রয়েছে। চকরিয়া পৌরসভায় আছে ১৪টি করাতকল। এসব করাতকলের মধ্যে নয়টির মাত্র অনুমোদন রয়েছে। ৪৯টি করাতকল চলছে অবৈধভাবে। বনাঞ্চলের তিন কিলোমিটারের ভেতরে হওয়ায় বন বিভাগ এসব করাতকলের অনুমোদন দেয়নি।
চকরিয়া পৌরসভার মগবাজার এলাকার একটি করাতকলের মালিক বলেন, ‘করাতকলের লাইসেন্স নিতে কয়েকবার আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু অনুমোদন না পাওয়ায় আমাদের করাতকলগুলো অবৈধ থেকে গেছে। তবে করাতকলে সংরক্ষিত বনের গাছ চেরাই হচ্ছে না দাবি করে তিনি বলেন, মানুষের বসতভিটার গাছ চেরাইয়ের জন্য করাতকল বসানো হয়েছে। স্থানীয় লোকজন জানান, এলাকার কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি ও কাঠ পাচারকারী চক্র এসব করাতকল বসিয়েছে। প্রতি রাতে বনাঞ্চলের মূল্যবান গাছ কেটে চেরাইয়ের জন্য করাতকলে নেওয়া হয়। গভীর রাতে চেরাই শেষে কাঠগুলো বিভিন্ন ট্রাক ও নৌকায় করে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হয়। বন উজাড়ের কারণে হুমকির মুখে পড়েছে জীববৈচিত্র্য ও প্রাকৃতিক পরিবেশ। সূত্র জানায়, অবৈধ করাতকল গুলোতে নামমাত্র অভিযান চালিয়ে কোন কাজ হচ্ছে না। এসব নামমাত্র অভিযানের এক মাস না পেরোতেই ফের চালু করা হয় করাতকলগুলো। সরেজমিন দেখা গেছে, চকরিয়া উপজেলার খুটাখালী ও ডুলাহাজারা বাজার এলাকায় ৪টি করে ৮টি, পহরচাঁদা, বদরখালী বাজার ও বেতুয়া বাজার এলাকায় তিনটি করে ৯টি এবং পৌরসভার মৌলভীরকুমে ৫টি করাতকল আছে। এ ছাড়া লামার চিরিঙ্গা, বাঁশঘাট, মগবাজার, শিকলঘাট, একতা বাজার, রসুলাবাদ, শান্তিবাজার, ডেইঙ্গাকাটা, ইলিশিয়া বাজার, মরংঘোনা, আকতার মিয়ার কাছারী এলাকা, বহদ্দারকাটা, রামপুর, বাটাখালী সেতু এলাকা, নাথপাড়া, নয়াপাড়া, মাঝেরফাঁড়ি সেতু এলাকা ও মানিকপুর মগপাড়া এলাকায় একটি করে করাতকল আছে। এসব করাতকলের অবস্থান নদী, মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়ক ঘেঁষে। ফলে প্রতিনিয়ত দূর্ঘটনার শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ ও যানবাহন। এ বিষয়ে জানতে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেপি দেওয়ানের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
Leave a Reply