সংগঠনের নামে চাঁদাবাজি, যানজটে জনদূর্ভোগ নিরসন ও নিষিদ্ধ গাড়ির লাইন অপসারণের উদ্যোগ নিলেন চকরিয়ার মালুমঘাট হাইওয়ে থানা পুলিশ। তাদের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা যায়। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে দিনদিন দূর্ঘটনা বেড়েই চলছে। মহাসড়কে নিষিদ্ধ গাড়ির স্টেশন, বিভিন্ন সমিতির নামে অবৈধভাবে চাঁদাবাজি, বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো ও যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং, লবণ বোঝাই গাড়ির পানিতে রাস্তা পিচ্ছিল ইত্যাদি হলো এই মহাসড়কে দূর্ঘটনার অন্যতম কারণ। সরেজমিনে জানা গেছে, চকরিয়া পৌরশহরের হাসপাতাল সড়ক, বাঁশঘাটা সড়ক, মালুমঘাট ও খুটাখালী স্টেশনের মহাসড়ক কিনারায় রয়েছে অবৈধ টমটম, অটোরিকশা ও সিএনজি’র লাইন। গাড়িগুলো পৌরশহর ও মালুমঘাট, খুটাখালী থেকে বিভিন্ন গ্রামে যাতায়াতে ব্যবহার করা হচ্ছে। স্থানীয়দের অভিমতে মহাসড়ক সংলগ্ন স্টেশনে টমটম, অটোরিকশা ও সিএনজির লাইন হওয়ায় পর্যটন রাজধানী কক্সবাজারে দূরপাল্লার যানবাহন যাতায়াতে চরম ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে। খুটাখালী স্টেশনেও বাড়ছে যানজট। দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে পৌরশহর ও উল্লেখিত বাজারে আগত লোকজনের। এই টমটম, অটোরিকশা ও সিনএনজি’র লাইন নিরাপদ দুরত্বে অপসারণ করে পৌরশহরের চিরিংগা স্টেশন, মালুমঘাট, খুটাখালী স্টেশনকে যানজটমুক্ত করার দাবি উঠেছে ভুক্তভোগীদের। তারও ভয়াবহ চিত্র লক্ষ্য করা গেছে একই উপজেলার ডুলাহাজারা বাস স্টেশনে। এখানে রয়েছে মহাসড়কের উপর হিউম্যান হলার জিটু গাড়ির লাইন। অনুমোদন বিহীন হলেও এ যানবাহনে মহাসড়ক দিয়ে আশপাশের স্টেশনেসহ পৌর শহরে যাতায়াত করছে লোকজন। পার্কিং এ আলাদা কোন স্থান না রেখে মহাসড়কের উপর লাইন দিয়ে বসে আছে একাধিক বৈধ-অবৈধ সংগঠন। তারা এসব গাড়ি থেকে দৈনিক ভিত্তিতে চাঁদা উত্তোলন করে আসছে। প্রতিটি গাড়ি থেকে ১০০-২০০ টাকা করে চকরিয়া পৌর শহর ও ডুলাহাজারা স্টেশনে পৃথকভাবে চাঁদা আদায় করে যাচ্ছে একাধিক চক্র। তবে জড়িতদের মধ্যে সরকার অনুমোদিত একটিমাত্র সমিতি পাওয়া গেলেও চাঁদা আদায়ে অন্য কারো বৈধতার অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। কোন সমিতির গাড়ি তা নিশ্চিত হতে হিউম্যান হলার জিটু গাড়ির সামনে লাগানো হয়েছে বিশেষ ধরনের স্টিকার। ঈদগাঁওসহ কক্সবাজারের বিভিন্ন এলাকার গাড়িও এই ডুলাহাজারা জিটু গাড়ির লাইনে স্থান পাচ্ছে বলে জানা গেছে। জিটু গাড়ির লাইন আর বাজারে মহাসড়ক কিনারায় ভাসমান দোকানে এখানে সার্বক্ষণিক যানজট লেগেই আছে। এতে যেমন দূর্ঘটনার শঙ্কা বাড়ছে, তেমনি বাড়ছে এ বাজারে আগত মানুষজনের ভোগান্তি। সকাল সন্ধ্যায় এই ডুলাহাজারা স্টেশনে অর্ধ শতাধিক জিটু গাড়ি অবস্থান করায় দূরপাল্লার গাড়িগুলো জ্যামে আটকে থাকতে হচ্ছে দীর্ঘক্ষণ পর্যন্ত। তাই অবৈধ সমিতির নামে চাঁদাবাজি বন্ধ করে মহাসড়ক থেকে এই লাইন নিরাপদ স্থানে সরানোর দাবি উঠেছে। অপরদিকে মালুমঘাট স্টেশনের মহাসড়কের উপর রয়েছে অটোরিকশার লাইন। আগে এই লাইনের অস্তিত্ব না থাকলেও সম্প্রতি করা হয়েছে। মহাসড়কের মালুমঘাট স্টেশনে সকাল সন্ধ্যা সার্বক্ষনিক এ অটোরিক্সার লাইন দৃশ্যমান হচ্ছে। যে যায়গায় সরকার মহাসড়কে ত্রি হুইলার নিয়ন্ত্রণে যুদ্ধ চালাচ্ছে, সেখানে অটোরিক্সার নতুন লাইন দুঃখজনক বলে প্রতিক্রিয়া জনমনের। এ ব্যাপারে মালুমঘাট হাইওয়ে থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) ইমন কান্তি চৌধুরী জানান, আমি এখানে নতুন এসেছি। অবৈধ সমিতির নামে চাঁদাবাজি সহ মহাসড়ক দখল করে সব অনিয়ম লক্ষ্য করে যাচ্ছি। অতিসত্বর আমরা এসবের বিরুদ্ধে অভিযানে নামছি। মহাসড়কের উপর ত্রি হুইলার ও অনুমোদন বিহীন গাড়ির লাইন কিছুতেই থাকতে পারবে না। জড়িতদের বিরদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
Leave a Reply