দেশে মহামারী করোনা ভাইরাস(কোভিড-১৯) শুরুর দিক থেকেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষের জন্য কাজ করছেন চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইপিআই টেকনিশিয়ান ভাষান কীর্তনিয়া। বাড়ি বাড়ি গিয়ে করোনা স্যাম্পল সংগ্রহ করা থেকে শুরু করে মৃতদেহ দাফন ও সৎকারও করেছেন তিনি। করোনার ভয়কে জয় করে এখনও তিনি নিয়মিত এ কাজ করে চলছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, করোনা ভাইরাস সংক্রমণ শুরু হওয়ার কিছুদিন পূর্বেই অবসরে চলে যান স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ল্যাব টেকনিশিয়ান। ফলে করোনা টেস্টের জন্য স্যাম্পল সংগ্রহের কাজে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নামতে হয় ভাষান কীর্তনিয়াকে। এ কাজ করতে গিয়ে তিন বার করোনায় আক্রান্ত হন তিনি। সর্বশেষ যখন আক্রান্ত হন, তখন তার মৃত্যু ঝুঁকি ছিল শতভাগ। তবুও তিনি থেমে যান নি। নিজের স্ত্রী, সন্তান ও পরিবারের সদস্যদের মৃত্যু ঝুঁকিতে রেখে তিনি তার কাজ করেন আপন গতিতে। দিনরাত তিনি করোনা রোগীদের নিরলস সেবাদানের পাশাপাশি বাড়ি বাড়ি গিয়ে স্যাম্পল সংগ্রহ করেন। দেশে করোনার টিকাদান কর্মসূচি শুরু হওয়ার পর তার কাজ আরো বেড়ে যায়। একদিকে স্যাম্পল সংগ্রহ আর অন্যদিকে টিকাদান কার্যক্রম। তারপরও থেমে যাননি তিনি। সকাল থেকে সারাদিন এমনকি কোনোদিন গভীর রাত পর্যন্ত মানুষের সেবাদান করছেন ভাষান।
টিকার সেবা নিতে আসা কয়েকজনের সঙ্গে তারা বলেন, আমরা এসেই ভাষান দাদার সাথে কথা বলি। তিনি খুব সহজভাবে আমাদের সেবা দেন। টিকা কার্ড সংক্রান্ত ও অন্যান্য সমস্যা তিনি খুব দ্রুত সমাধান করে দেন। আমরা যখনই আসি তখনই তার কাছে সেবা পাই। কোনোপ্রকার অনিয়ম নেই তার কাছে। আমরা তার সুস্থতা কামনা করি। তার সেবা পেয়ে খুশি প্রবাসীরাও।
মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নুসরাত জাহান মিথেন বলেন, ‘করোনা মহামারীর এই সময়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছে ইপিআই টেকনিশিয়ান ভাষান কীর্তনিয়া। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পক্ষ থেকে তাকে আমরা কাজের জন্য অনেক চাপে রেখেছি। জনবল সংকটের কারণে এমনটা হয়েছে। তারপরও ভাষান থেমে যাননি। প্রতিনিয়তই কাজ চালিয়ে গিয়েছেন।’
আগামী দিনগুলোতেও এভাবে নিরলস সেবাদান করতে চান ভাষান কীর্তনিয়া। তিনি বলেন, ‘মানুষের জন্য কিছু করতে পারার মাঝেই জীবনের স্বার্থকতা নিহিত। করোনায় আমি চেষ্টা করছি দেশের মানুষের সেবায় নিয়োজিত থাকার। আগামী দিনগুলোতও এভাবে সেবাদানে নিয়োজিত থাকব। সবার কাছে দোয়া চাই।’
Leave a Reply