কক্সবাজারের চকরিয়ার ফাঁসিয়াখালীতে গরুসহ আটক হওয়া ৪ গরুচোরকে পুলিশে সোর্পদ না করে ছেড়ে দিলেন ফাঁসিয়াখালী ইউপির ২নং ওয়ার্ডের এমইউপি ও প্যানেল চেয়ারম্যান আবদুল হক মানিক। জানা যায়, গত ৩০ জানুয়ারি উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের অলিশাহ বাজার এলাকায় গরুসহ এ ৪ গরুচোরকে আটক করে স্থানীয়রা।
এবিষয়ে গরুচোরদের তথ্যদাতা মোঃ শওকত ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলার পর বের হয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। তারা জানান, এমইউপি আব্দুল হক মানিক চোর চক্রের কাছ থেকে ছেড়ে দেওয়ার কথা বলে হাতিয়ে নেয় টাকা। চোরদের কাছ থেকে অবৈধভাবে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পর চোরগুলোকে ছেড়ে দিতে জনসম্মুখে সাজান নাটক! বলতে গেলে সেই সাঁজানো নাটকের একটি দৃশ্যপট হচ্ছে: অবৈধভাবে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পর চোরদের ছেড়ে দিতে এমইউপি আবদুল হক মানিক ফন্দি আটলেন গরুচোরের তথ্য দাতাকে বেঁধে রেখে গরুচোরদের ছেড়ে দিবেন। ঠিকই যেই কথা সেই কাজ। মূহুর্ত পার না হতেই স্থানীয় গ্রাম পুলিশকে মেম্বার আবদুল হক মানিক নির্দেশ দিয়ে দিলেন, চোরদের ছেড়ে দিয়ে চোরের তথ্য দাতা যুবক মোঃ শওকতকে বেঁধে রাখতে। যা এক প্রকার কৌশলে তথ্যদাতাকে চোর বানানোর অপচেষ্টা। যা দেখার পর ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের দিগরপানখালী অলিশাহ বাজারে উপস্থিত উৎসুক জনতা রীতিমতো হয়েছেন অবাক। এক পর্যায়ে চোরের তথ্যদাতা মোঃ শওকতকে মারধর করার চেষ্টা করলে উপস্থিত উৎসুক জনতা এমইউপি আব্দুল হক মানিকের সাথে প্রতিবাদে জড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে এমইউপি আব্দুল হক মানিক চোরদের ছেড়ে দিয়ে ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়। এদিকে গরুচোর চক্রের সদস্যরা হলেন যথাক্রমে; চকরিয়া পৌরসভা ৪নং ওয়ার্ডের গ্রামীণ ব্যাংক সেন্টার এলাকার আবুল হাসেম, ফাঁসিয়াখালী ৬নং ওয়ার্ডের ডেইলপাড়া এলাকার জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে এহেসানুল করিম, আবুল কাসেমের ছেলে আবুতালেব ও দিগরপানখালী ২নং ওয়ার্ডের গিয়াস উদ্দিনের ছেলে ফাহিম। এদিকে, গরুচোর চক্রের সদস্য আবুল হাসেমের বিরুদ্ধে এর আগেও ছাগল, কবুতর, মুরগি, ইজিবাইকের চার্জার চুরি করে ধরা খাওয়ার তথ্য ও রয়েছে এ প্রতিবেদকের কাছে। এ বিষয়ে এমইউপি আব্দুল হক মানিকের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি, চোর ধরার বিষয়টি স্বীকার করলেও টাকা হাতিয়ে নিয়ে চোর ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তিনি এসময় আরো বলেন, স্থানীয়রা চোরদের ছেড়ে দিয়েছে। তখন প্রতিবেদক তার কাছে একজন জনপ্রতিনিধির উপস্থিতিতে কীভাবে জনগন চোর ছেড়ে দিতে পারে এমন প্রশ্ন করলে তিনি এ প্রশ্নের কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। অপরদিকে এ ঘটনার বিষয়ে ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিন হেলালীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গত ৩০জানুয়ারি সকালের দিকে অলিশাহ বাজারে ৪জন গরুচোরকে আটক করার ব্যাপারে আমি সেদিন সাথে সাথে অবগত হয়েছিলাম। ওই সময় আমি কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপারের একটি গুরুত্বপূর্ণ মিটিংয়ে থাকার কারণে ২নং ওয়ার্ডের এমইউপি আব্দুল হক মানিককে বলেছিলাম গ্রাম পুলিশ দিয়ে আটককৃত সেই গরুচোরগুলোকে ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে আসতে। কিন্তু ঘটনার কিছুক্ষণ পর ঐ এলাকার কিছু লোকজনের মাধ্যমে জানতে পারি গরুচোরগুলোকে আইনের কাছে সোপর্দ না করে এবং ইউনিয়ন পরিষদের আনতে বললে সেখানেও না এনে এমইউপি আব্দুল হক মানিক ছেড়ে দিয়েছে বলে জানতে পারি। কিন্তু আব্দুল হক মানিকের কাছে আমি জানতে চাইলে সে আমাকে স্থানীয় জনতা চোরগুলোকে ছেড়ে দিয়েছে বলে জানিয়েছে। আমি এ বিষয়ে আরো খোঁজখবর নেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
Leave a Reply