আগে ৭ মার্চে পাড়া-মহল্লায় বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ মাইকে বাজানো হতো। এখন অনেকটা কমে গেছে। যুগের পরিবর্তন ও মানুষের জানার আগ্রহ কম থাকায় এমনটি হচ্ছে। তবে আমাদের মনে রাখতে হবে, এই ভাষণই জাতিসত্ত্বার মূল। এই শেকড় থেকে যদি আমরা সরে যাই তাহলে আমাদের অস্তিত্ব বিলীন হওয়া সময়ের ব্যাপার মাত্র।’
বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) পুরান ঢাকার কবি নজরুল সরকারি কলেজে এক আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন ঢাকা-৬ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে এই আলোচনা সভা ও বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে কবি নজরুল সরকারি কলেজ।
মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বলেন, ‘আজ আমরা স্বাধীন দেশে স্বাধীনভাবে বাস করছি; বাংলা ভাষায় কথা বলছি। দেশের অনেক নাগরিক সুবিধা ভোগ করছি। তার সবই সম্ভব হয়েছে দেশ স্বাধীন হয়েছে বলেই। তাই শেকড় থেকে কখনোই সরে যাওয়া যাবে না।’
৭ মার্চ ভাষণের স্মৃতিচারণ করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বলেন, ‘৭ মার্চের আগের দিন বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক সহকর্মীরা চিরকুটে লিখে দিয়ে যাচ্ছিলেন কি বিষয়ে বক্তব্য দিতে হবে। বঙ্গবন্ধু চিরকুটগুলো আমার বাবার (অভিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ হানিফ) হাতে দিয়ে বলেছিলেন আমি যখন বক্তব্য দিতে মঞ্চে উঠবো; তখন এই চিরকুট আমার হাতে দিবি। পরে যখন বঙ্গবন্ধু বক্তব্য দিতে উঠলেন তখন বাবা চিরকুটগুলো তাঁর হাতে দেন। তখন বঙ্গবন্ধু বাবাকে বলেন, ‘এই চিরকুটগুলো তোর কাছে রাখ। আজ আমি মনের মতো কথা বলবো। বঙ্গবন্ধুর সেই মনের কথাই ৭ মার্চের ভাষণ। সেই বক্তব্যই ছিলো বাঙ্গালীর কাছে স্বাধীনতার বার্তা, এই বক্তব্যের মধ্যেই ছিলো যে তোমরা প্রস্তুত হও দেশ স্বাধীন করতে। যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করতে হবে এটাই ছিলো মূল বক্তব্য।’
পুরান ঢাকার মানুষ বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে ছিলেন উল্লেখ করে সাঈদ খোকন বলেন, ১৯৭০ এর ঐতিহাসিক নির্বাচনে পুরান ঢাকার কোতয়ালি-সূত্রাপুর আসন থেকে নির্বাচন করে বঙ্গবন্ধু বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে সংসদ সদস্য হয়েছিলেন। ঢাকাবাসী তাকে বিপুল ভোটে জয়ী করেছিলেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে ১৯৭৩ সালের নির্বাচনেও কোতয়ালি-সূত্রাপুর থেকে নির্বাচন করে বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছিলেন। পরে জাতির জনক রাষ্ট্রপতি হওয়ার পরে এই আসন থেকে আমার প্রয়াত পিতা মোহাম্মদ হানিফ উপ-নির্বাচনে জয়ী হন। ১৯৬৫ সনে আমার বাবা জাতির জনকের একান্ত সহকারী হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন এবং জাতির জনকের জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তাঁর সাথে ছিলেন, পাশে ছিলেন। ছায়ার মতো জাতির জনকের সঙ্গে ছিলেন। জাতির জনক এবং তাঁর পরিবারের সঙ্গে আমার পিতার সম্পর্ক অল্প বয়স থেকে।
আলোচনা সভায় কলেজের অধ্যক্ষ আমেনা বেগমের সভাপতিত্বে কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক সালেহ আহমেদ ফকির প্রমূখ বক্তব্য দেন।
Leave a Reply