ঠাকুরগাঁওয়ে জমি দখলকে কেন্দ্র করে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদ ও বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে ঘড়বাড়ি ছাড়া অসহায় পরিবারের সদস্যরা। আজ রোববার দুপুরে জেলা শহরের তাঁতীপাড়ায় রিপোর্টার্স ইউনিটির সাংবাদদিকদের সাথে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হওয়া পরিবারের পক্ষে মাসুমা সুলতানা রত্না লিখিত বক্তব্য পাঠ করে বলেন, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি শহরের এসিল্যান্ড বস্তি এলাকায় জমি বিরোধের জেরে আদম আলী ও তার ছেলে শাকিল বাহিনীর সন্ত্রাসীরা দেশীয় ধারালো অস্ত্র নিয়ে বাড়িতে ঢুকে হামলা চালায়। এতে পরিবারের বেশ কয়েকজন আহত হয়।
পরে আহতদের উদ্ধার করে গুরুতর অবস্থায় জেলা সদর হাসপাতালে জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিতে গেলে জরুরি বিভাগে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আবারো শাকিল ও তার বাহিনীর সন্ত্রাসীরা রেজাউল, রুবেল,রাজুর উপর হামলা চালায়। এসময় প্রাণের ভয়ে কর্মরত জরুরি বিভাগের লোকজন অন্যত্র আশ্রয় নেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনলে তাদের পুনরায় তাদের চিকিৎসা দেয়া হয়।
সন্ত্রাসীরা তাতে ক্ষান্ত হয়নি তার জের ধরে পরদিন দেবর রুবেলকে সদরের জামুরিপাড়া বাসা থেকে তুলে এনে বেধরক মারপিট করে মৃত ভেবে রাস্তায় ফেলে পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।
আমরা আমাদের ক্রয়কৃত জমি ভোগদখল করে আসছি। কিন্তু জোরপূর্বক আদম আলী ও তার ছেলে শাকিল আমাদের বেশকিছু জমি দখল করেছে। জমি দখলের বিষয়ে আদালতে মামলা চলমান ইতোমধ্যে দুটি মামলার রায় আমাদের পক্ষে আসে। আদম আলী একজন মাদক ব্যবসায়ী, অত্যন্ত দূর্র্দান্ত প্রকৃতির, দাঙ্গাবাজ, সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ। এছাড়া আদম আলী’র ছোটভাই সোহেল রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে এলাকায় ত্রাসের ও মাদকের রাজত্ব কায়েম করেছে। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা থাকলেও পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না। তাদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে আমরা আজ বাড়ি ছাড়া হয়েছি।
অথচ আদম আলীর সন্ত্রাসী বাহিনী আমাদের উপর হামলা চালিয়ে উল্টো মিথ্যা মামলা দিয়ে পুলিশি হয়রানী করছে। এ অবস্থায় আমাদের বসতভিটায় পরিবারের সদস্যরা প্রবেশ করতে গেলে অনবরত প্রাণ নাশের হুমকি দিচ্ছে। বসতবাড়িতে রেখে আসা আসবাপত্র ভাংচুরসহ ব্যবহৃত মোবাইল, লালন পালনের হাঁস, কবুতর, গরু, বাইসাইকেল, স্বর্নলঙ্কারসহ কাপড় চোপড় লুট করে নিয়ে গেছে তারা।
এ ঘটনার পর আমরা দিশেহারা হয়ে জীবনের নিরাপত্তার কথা ভেবে থানায় অভিযোগ দিতে গেলে ওসি আমাদের মামলা না নিয়ে উল্টো দূর্ব্যবহার করেন। কুলকিনারা না পেয়ে সংবাদ সম্মেলন করতে বাধ্য হয়েছি। আদম আলী ওই এলাকার অনেকের জমি জোরপূর্বক দখল করে নিয়েছে। তাছাড়া আদম আলী ও তার সন্ত্রাসীপুত্র শাকিল প্রশাসনের দেয়া এসিল্যান্ড বস্তির নাম পরিবর্তনের পায়তারা করে আদম নগর বানানোর চেস্টা করছে। অথচ ভোটার আইডিতে আদম নগর বলে কোন গ্রাম নেই। যা খোজ খবর নিলে উল্লেখিত সব তথ্য প্রকাশ পাবে। প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করে জনসন্মুখে তুলে ধরার জন্য অনুরোধ জানানোর পাশাপাশি প্রশাসনের কাছে সন্ত্রাসী হামলার বিচার ও নিরাপত্তার দাবি করে ভুক্তভুগি পরিবারের সদস্যরা। এসময় পরিবারের সদস্য বিউটি আক্তার, মাসুমা সুলতানা, জোসনা বেগম, এলাকাবাসি রাসেল ও ইব্রাহিমসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply