কক্সবাজারের চকরিয়ায় সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে ডেঙ্গু রোগীর কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে চকরিয়া জমজম হাসপাতালর বিরুদ্ধে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) ডাঃ শেখ দাউদ আদনান স্বাক্ষরিত গত ৭ নভেম্বর তারিখের বিশেষ বিজ্ঞপ্তি তে স্বাস্থ্য মন্ত্রী জাহিদ মালিক এমপি’র নির্দেশনায় বেসরকারি হাসপাতাল/ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ডেঙ্গু পরীক্ষার মুল্য তিনশ টাকা পুনঃ নির্ধারণ করা হয়। সরকারের নির্দেশনা অমান্য করে ডেঙ্গু পরীক্ষায় রোগীদের কাছ থেকে এক হাজার পঞ্চাশ টাকা করে হাতিয়ে নিচ্ছে চকরিয়া জমজম হাসপাতাল। এছাড়াও বিভিন্ন পরীক্ষায় গলাকাটা মুল্য নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে এই হাসপাতালের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী উপজেলার বরইতলী ইউনিয়নের বাসিন্দা এনামুল হক চৌধুরী বলেন, শারিরীক অসুস্থতায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার সময় চকরিয়া জমজম হাসপাতালে ডেঙ্গু পরীক্ষার জন্য গেলে, হাসপাতালের রিসিপশনে ডেঙ্গু পরীক্ষার ফি একহাজার পঞ্চাশ টাকা উল্লেখ করে, ডিসকাউন্ট বাদ দিয়ে তার কাছ থেকে সাতশত আশি টাকা জমা নেন। পরবর্তীতে চকরিয়ার অন্য ক্লিনিকে আরও কয়েকটি পরীক্ষা করতে গেলে সেখানে জানতে পারেন ডেঙ্গু পরীক্ষার সরকারি নতুন নির্ধারিত ফি তিনশো টাকার পরিবর্তে সাতশো আশি টাকা হাতিয়ে নিলো জমজম হাসপাতাল! তিনি আরও বলেন, আমি একজন স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী লোক, যেখানে আমাকে ঠকিয়ে জমজম হাসপাতাল অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নিলো, না জানি দেশের সাধারণ মানুষকে কি পরিমাণ ঠকাচ্ছে এই হাসপাতাল। তিনি এই হাসপাতালের কর্মকাণ্ডের প্রতি নজরদারি বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন কতৃপক্ষের কাছে। এ বিষয়ে হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম কবিরের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরকারি নির্দেশনা বা সিভিল সার্জন অফিসের কোন চিঠি পাইনি, তাই পূর্বের তালিকা অনুযায়ী পরীক্ষার ফি নেওয়া হচ্ছে। চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ শোভন দত্ত বলেন, ডেঙ্গু পরীক্ষার ফি পুনঃ নির্ধারণ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা যথাযথ ভাবে দেওয়া হয়েছে। এটি নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোন অবকাশ নেই। কেউ যদি এটি অমান্য করে, প্রশাসনিক ভাবে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডাঃ মাহবুবুর রহমান বলেন, সরকারি নির্দেশনা পাওয়ার সাথে সাথে প্রতিটি উপজেলায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট ও যথাযথ মাধ্যমে বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। কেউ যদি নির্দেশনা পায়নি অজুহাতে অতিরিক্ত টাকা আদায় করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার জেপি দেওয়ান বলেন, দেশে ডেঙ্গু রোগ বেড়ে যাওয়ায়, জনসাধারণের সুবিধার্থে ডেঙ্গু পরীক্ষার ফি কমিয়েছে। সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে জমজম হাসপাতালে ডেঙ্গু পরীক্ষায় অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার বিষয়টি জানতে পেরেছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply