বরিশাল শুধু ভৌগোলিকভাবে নয়, সম্ভাবনার দিক থেকেও দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল বলে মন্তব্য করেছেন পদাতিক প্রাইভেট লিমিটেডের চেয়ারপারসন মিসেস শারমিন বিনতে সিদ্দিক। বরিশাল বিভাগ উন্নয়ন ও স্বার্থ সংরক্ষণ কমিটির আয়োজিত মানববন্ধনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, “এ অঞ্চলের উন্নয়ন শুধু দক্ষিণাঞ্চল নয়, গোটা দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করবে।”
মঙ্গলবার সকাল ১০টায় বরিশাল নগরের অশ্বিনী কুমার টাউন হলের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। বরিশালের বিভিন্ন শ্রেণি, পেশার মানুষ, নাগরিক সংগঠন ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা এতে অংশ নেন। মানববন্ধনের মূল দাবি ছিল ২৭ দফা উন্নয়ন কর্মসূচি দ্রুত বাস্তবায়ন।
শারমিন বিনতে সিদ্দিক তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন, “বরিশাল হতে পারে দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নের মডেল। আমাদের ২৭ দফা দাবিগুলো বাস্তবায়িত হলে শিল্প, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পর্যটন খাতে এক নতুন যুগের সূচনা হবে। বিশেষ করে কুয়াকাটাকে বিশ্বমানের পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুললে বিদেশি পর্যটক আকৃষ্ট হবে এবং স্থানীয় অর্থনীতিতে বিপুল কর্মসংস্থান তৈরি হবে।”
তিনি আরও বলেন, শুধু অবকাঠামোগত উন্নয়ন নয়, বরিশালের পরিবেশ ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ করাও জরুরি। এজন্য উন্নয়ন প্রকল্পগুলো পরিকল্পিত ও দীর্ঘমেয়াদি হতে হবে, যাতে ভবিষ্যত প্রজন্ম উপকৃত হয়।
মানববন্ধনের করেন অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম খান রাজন, সঞ্চালনা করেন ডা. মিজানুর রহমান। সাবেক এমপি, বিসিসি মেয়র এবং বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মুজিবুর রহমান সারোয়ার, মুক্তিযোদ্ধা আহমেদ হোসেন, ব্যবসায়ী নেতা জসিম উদ্দিন, শিক্ষক মো. আসাদুজ্জামানসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
বিভিন্ন বক্তারা ২৭ দফা দাবির মধ্যে উল্লেখ করেন — বরিশাল সিটির বাইপাস সড়ক নির্মাণ, ভাঙ্গা-বরিশাল-কুয়াকাটা ছয় লেনের মহাসড়ক বাস্তবায়ন, ঢাকা-বরিশাল ডুয়েল গেজ রেললাইন স্থাপন, বরিশাল-ভোলা সেতু নির্মাণ, বরিশালে আধুনিক স্পেশালাইজড হাসপাতাল ও ইপিজেড স্থাপন, বরিশাল বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীতকরণ, কুয়াকাটাকে বিশ্বমানের পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা, বরিশাল শহরের খাল উদ্ধার, আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রকল্প বাস্তবায়ন, শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা এক হাজারে উন্নীতকরণ, বরিশাল জেনারেল হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা ২৫০ এ উন্নীতকরণ এবং বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ প্রকল্প চালু।
বক্তারা আরও বলেন, এসব দাবি বাস্তবায়ন দক্ষিণাঞ্চলের দীর্ঘদিনের বঞ্চনা ঘুচিয়ে দেবে। হুঁশিয়ারি দিয়ে তারা জানান, দাবিগুলো দ্রুত পূরণ না হলে বৃহত্তর আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে এবং প্রয়োজনে রাজপথে নেমে লাগাতার কর্মসূচি পালন করা হবে।
Leave a Reply