পটুয়াখালীর দুমকির চরগরবদী এলাকায় কীটনাশক পানে হনুফা নামের এক গৃহবধূর আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ এনে কলেজ শিক্ষককে ফাঁসাতে মানববন্ধনের আয়োজন করেন তার পরিবার। এর প্রতিবাদে দুমকি প্রেসক্লাব অডিটোরিয়ামে ৩০মে বেলা ৩ টায় এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, আজিজ আহম্মেদ কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিষয়ের সহকারী অধ্যাপক মোঃ জাকির হোসেনের নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে মোসাঃ জাকিয়া সুলতানা জুঁই-কে উপজেলার চরগরবদী এলাকার মজিবর মুন্সির দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ুয়া ছেলে মোঃ জাকারিয়া স্কুলে আসা-যাওয়ার পথে প্রায়ই বিভিন্ন প্রলোভন দেখাতো। জাকারিয়ার দিনমজুর বাবা মজিবর মুন্সি এসব জানতে পেরে কুচক্রী মহলের ইন্ধনে ও অর্থলোলুপ হয়ে শিক্ষক দম্পতির মেয়েকে বিয়ে করে অর্থ আত্মসাৎ করে রাতারাতি বড়লোক হওয়ার দিবাস্বপ্ন দেখেন। একপর্যায়ে গত বছরের ৬ এপ্রিল বিকেল আনুমানিক ৩টার সময় জুঁই বাসা থেকে প্রাইভেট পড়তে গেলে জাকারিয়া ভুলভাল বুঝিয়ে জোরপূর্বক জুঁই-কে উঠিয়ে নিয়ে যায়। এঘটনায় দুদিন পরে জুঁইয়ের বাবা জাকির হোসেন বাদি হয়ে জাকারিয়ার বিরুদ্ধে দুমকি থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করলে পুলিশ জাকারিয়াকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করেন। ৩ মাস জেল হাজত খেটে জামিনে বের হয়ে এসে আরো বেপরোয়া ও ক্ষিপ্ত হয়ে ২৯ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় দফায় জুঁই স্কুলে যাওয়ার পথে জোর করে উঠিয়ে নিয়ে লাপাত্তা হয়ে যায়। এঘটনায় জাকির হোসেন দুমকি থানায় জাকারিয়ার বিরুদ্ধে পরের দিন একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
প্রায় ৭ মাস পরে ৯ এপ্রিলের ওই মামলায় নিয়মিত হাজিরা না দেয়ায় কোর্ট ওয়ারেন্ট ইস্যু করলে এ বছরের ৬ মে পুলিশ জাকারিয়াকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন এবং পরের দিন ৭মে দিবাগত রাত ৮ঃ৪৮ মিনিটে ও ৯ঃ২৭ মিনিটে (01733842106) নম্বর থেকে ২টি মেসেজে জুৃঁই পরিচয় দিয়ে অসুস্থতার কথা তার বাবা জাকির হোসেনকে জানায়। পটুয়াখালীর একটি ক্লিনিকে অসুস্থ বাচ্চার জন্ম হলে চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশালে রেফার করেন এবং সেখানে বাচ্চার মৃত্যু হয়। এদিকে সাধারণ ডাইরীর সূত্রে পুলিশ ২৪ মে জুঁই-কে উদ্ধার করে তার বাবার হেফাজতে দিয়ে দেন এবং পরের দিন ২৫ মে জাকারিয়ার মা তথা মজিবর মুন্সির স্ত্রী কীটনাশক পান করে আত্মহত্যা করেন। ছেলেকে কারাগারে প্রেরণ, নাতির মৃত্যু ও স্ত্রীর আত্মহত্যার মত নানান অভিযোগ এনে গত ২৭ মে বিকেল বেলা চরগরবদী ফেরীঘাট এলাকায় কলেজ শিক্ষক মোঃ জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেন জাকারিয়ার বাবা মজিবর মুন্সি।
অভিযোগ অস্বীকার করে জাকির হোসেন জানান, জাকারিয়া আমার মেয়েকে ২য় দফায় জোরপূর্বক নিয়ে যাওয়া থেকে শুরু করে প্রায় ৭ মাস আমাদের কারো সঙ্গে যোগাযোগ ছিল না। মানববন্ধনে যেসব কথাবার্তা বলা হয়েছে তা মিথ্যা, বনোয়াট ও বিভ্রান্তিকর।
গৃহবধূ হনুফার আত্মহত্যা সম্পর্কে জাকারিয়ার আপন চাচা আবুল মুন্সি জানান, ছেলে ও ছেলের বউকে নিয়ে ঝামেলার কারণে আত্মহত্যা করেছে।
মুরাদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মিজানুর রহমান শিকদার বলেন, আমি বিষয়টি অবগত হয়েছি। যতটুকু জেনেছি পারিবারিক কলহের কারণে আত্মহত্যা করতে পারে।
Leave a Reply