জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে দশতলা একাডেমিক ভবন নির্মাণকাজে শ্রমিকদের মাথায় হেলমেট পড়া বাধ্যতামূলক আইনটি মানছে না ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কে এস বি এল।
জাতীয় বিল্ডিং কোড(২০১৪) আইন অনুযায়ী নির্মাণ কাজের সময় শ্রমিকের মাথায় হেলমেট পড়া বাধ্যতামূলক হওয়া সত্ত্বেও সরেজমিনে প্রকল্পটির নির্মাণ কাজ দেখতে গিয়ে শ্রমিকদের মাথায় হেলমেট, পায়ে বুট জুতা, সানগ্লাস, গ্লাভস কোনো কিছুই পড়তে দেখা যায়নি। এমনকি কে এস বি এল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির থেকেও উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি।
তবে উদ্যোগ না নেয়ার কথা অস্বীকার করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের আঞ্চলিক ম্যানেজার মোঃ আবু হানিফ বলেন, আমরা তাদের সকল উপকরণ দিয়েছি। আমি সাইটে না আসায় এরকম করেছে। আমি সাইটে থাকা লোকদের বলে দিচ্ছি যেনো শ্রমিকেরা হেলমেট, জুতা পড়ে কাজ করে।
শ্রমিকরা কেন হেলমেট পড়ে না জিজ্ঞেস করলে সেখানে থাকা এক শ্রমিক মনির বলেন, ভার্সিটির স্যাররা যখন আসে তখন তো সবাইকে পড়তেই হয়।এছাড়াও কেউ কেউ পড়ে মাঝে মাঝে। গরম লাগে এর জন্য পড়ে না অনেকে।
তবে হেলমেট সহ সকল প্রকার সেইফটি গার্ড ব্যবহার না করাটা দুঃখজনক বলেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী ইঞ্জিনিয়ার(সিভিল) এ কে এম জহিরুল হাসান। তিনি আরো বলেন, প্রশাসনিক ভাবে আমরা আলোচনা করবো কিভাবে শ্রমিকদের এগুলো ব্যবহারে উৎসাহিত করা যায়।
প্রকল্পে শ্রমিকদের বিল্ডিং কোড অনুযায়ী নিরাপত্তা প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার(ভারপ্রাপ্ত) কৃষিবিদ ড. হুমায়ুন কবীর বলেন, যদি শ্রমিকরা সেইফটি কোড মেনে না কাজ করে তাহলে প্রাথমিক ভাবে আমরা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দিবো কেনো তারা তা পালন করছে না সেই সাথে এই প্রক্রিয়ায় সমাধান না আসলে কাজ বাতিলের মতো সিদ্ধান্তও নিতে পারে প্রশাসন। কেননা সবার আগে জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে শ্রমিকের ।
উল্লেখ্য, এর আগে পড়ে গিয়ে শ্রমিকের মৃত্যুর মতো ঘটনাও ঘটেছিল বিশ্ববিদ্যালয়টির ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ এবং সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ভবন নির্মাণের সময়। মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষতিপূরণ সঠিকভাবে প্রদান না করার অভিযোগও উঠেছিলো। এছাড়াও, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ(বিলস) এর মতে ২০২০ সালে কর্মক্ষেত্রে বিভিন্ন দুর্ঘটনায় ৭২৯ জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ৭২৩ জন পুরুষ, ৬ জন নারী শ্রমিক। অন্যদিকে কেবল নির্মাণ কাজে ২০১৭-২০২০ সাল পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৫১৩জন শ্রমিকের।
Leave a Reply