প্রতি বছর মার্চ মাসের ৮ তারিখে পালিত হয় “আন্তর্জাতিক নারী দিবস”।বিশ্বজুড়ে এইদিন সব মেয়েদের সম্মান জানানো হয়। যদিও আজকের দিনে নারী বলে আমাদের জন্য আলাদা কোনও দিনের প্রয়োজন নেই। আমরা এখন কারও উপরে নির্ভরশীল নয়। তাই সকল নারীকে জানাই নারী দিবস এর অনেক অনেক শুভেচ্ছা।
বিশ্ব নারী দিবসে ডিআইইউ নারী শিক্ষার্থীদের সাথে নারীদের নিয়ে তাদের ভাবনা বিষয়ে কথা বলেছেন “বাংলাদেশ সারাবেলা’র” প্রতিনিধি তানজিলা আক্তার লিজা।
আনিতা সরকার :
নারী দিবসে সকল নারীর প্রতি রইলো আমার অনেক শুভকামনা।
আমরা অনেকেই নারী দিবসের উদ্দেশ্য না জেনে এ দিনটি পালন করে আসছি। একটি কথা বলা হয়ে থাকে নারী পুরুষের সমান অধিকার। আসলেই কি তাই? সমাজ আমাদের অধিকার দিয়েছে ঠিকই কিন্তু নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ।
এই নিরাপত্তাহীন অধিকার নিয়ে আমরা কি করবো? যেখানে একজন পুরুষ সারারাত অবাধে চলাফেরা করতে পারেন সেখানে রাত আটটা বাজলেই নারীদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করতে হয়। শুধু রাত নয় আমরা দিনের বেলায় ও কি নিরাপদ? দিনের বেলায় বাসে ওঠার আগে ভাবতে হয় বাস কি খালি , আরো যাত্রী আছে কিনা?
কারন এসব না ভেবে বাসে উঠলে আমিও ধর্ষিত হতে পারি যখন তখন। এরকম আরো অনেক উদাহরণ আছে। পরিশেষে এই নারী দিবসে সবার কাছে আমার একটাই অনুরোধ, আসুন আমরা আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন করে নারীদের প্রাপ্য সম্মান দেই এবং তাঁরা যেন নিরাপত্তাহীনতায় না ভোগেন সেই ব্যবস্থা করি।
আন্নি আক্তার দিয়া: আমার মতে নারী দিবসে নারীদের কে শুধু মাত্র শুভেচ্ছা না জানিয়ে বরং জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে তাদের প্রাপ্য সম্মান টুকু যেদিন থেকে দেয়া হবে সেদিন থেকেই “নারী দিবস” টি তার যথাযথ পূর্ণতা পাবে। আমাদের সকলের দৃষ্টি ভঙ্গি বদলে নারী কে স্বতন্ত্র একজন মানুষ হিসেবে ভাবতে শিখতে হবে, দিতে হবে তাকে সদিচ্ছা পূরণের অধিকার। জয় হোক সব ভালোর, জয় হোক নারীর, জয় হোক নারীর আত্মসম্মানের।
তাছলিমা রুপ পুতুল:
নারী বরাবরের মতোই থেকে গেছে অধিকারবঞ্চিত, ক্ষেত্রবিশেষে অধিকতর। এর কারণ হল, আমাদের মনে যা ক্রিয়াশীল তা হল নারীকে বাঁচিয়ে রাখা, সকল ক্ষেত্রেই যে তাদেরকে অধিকার দেয়া তা নয়। এ সমাজে নারীরা শারীরিকভাবে যতটা না নির্যাতিত তার চেয়ে ঢের বেশি হয় মানসিক নির্যাতনের শিকার। পদে পদে তাকে অপমান সইতে হয়। লজ্জার কথা হল, এ সমাজে এখনও আমরা নারীকে ‘মেয়েলোকের’ বেশি ভাবতে পারিনি।
তারপরেও যারা নারী অধিকারের পক্ষে যেসব পুরুষ নারী অধিকার বাস্তবায়নে একাধারে কাজ করে যাচ্ছে এবং সহায়তা করছে তাদেরকেও শুভেচ্ছা। শুধুমাত্র নারীদের উদ্যম মনোভাব আর তাদের সহায়তায় সমাজে নারীরা আজ এত এগিয়ে।
তানিয়া সুলতানা:
মিনা কার্টুনের গল্পগুলো কিন্তু বাস্তব থেকেই নেওয়া। ঘরের কাজগুলো করে মিনা। আর পড়াশোনা করে তার ভাই রাজু। কাজ মিলাতে গেলেই লেগে যায় হুলুস্থুল। খাবারের ভালো ও বড় অংশ পায় বাড়ির ছেলে। এখন কি আর সেই অবস্থা আছে?
নারী দিবস, বছরে বছরে আসে, দিনটিতে সবাই সোচ্চার হন।নারী হল পরিবারের স্তম্ভ, তাঁর অনুপ্রেরণা ছাড়া কোনও কিছু সম্ভব নয়। নারী দিবস এর অনেক অনেক শুভেচ্ছা।
হোসনে আরা তুশি:
বাবার বাড়িতে চরম নিরাপত্তায় রেখে হঠাৎ করেই হয়তোবা একদম অজানা কারও সঙ্গে বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়।শ্বশুরবাড়ি যাই আরেকজনের আমানত হয়ে। নিরাপত্তা পুরোপুরি নির্ভর করে স্বামী মানুষটি কেমন হবে, তার ওপর। আর একসময়ের চরম নিরাপদ স্থান বাবার বাড়ি হয়ে যায় অতিথিশালা। নিজস্ব গণ্ডি, নিজস্ব ঘরটি ছেড়ে দিতে হয়। ঠিক আছে, বাস্তব প্রেক্ষাপটে বলতে হয়, এমনটিই তো হওয়ার কথা,হয়ে আসছে।
নিজেকে সব সময় স্পেশ্যাল ভাববো জানবো আমি সবার চেয়ে এগিয়ে আছি।যতই যা হক আমি দারুণ, আমি আলাদা, আমি সুন্দর আর তাই তো আমি নারী।
অপরাজিতা মন্ডল: ৮ই মার্চ, নারী দিবস। নারী ছাড়া আজ গোটা জাতি অচল। নারীদের এই অধিকার পেতে পার করতে হয়েছে কত চড়াই-উৎরাই। তারা আজ তাদের অধিকার পেয়েছে, মাথা উঁচু করে বেঁচে থাকার অঙ্গিকার পেয়েছে।
কবি বলেছেন,
বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর, অর্ধেক তার করিয়াছে নারী অর্ধেক তার নর। অর্থাৎ আমরাও পারি পুরুষের সঙ্গে কাধে কাধ মিলিয়ে চলতে। নারী পারে না এমন কোনো কিছুই নেই..আজ কোথায় নেই নারী! স্থল থেকে বিমান, পর্বত আরোহন সর্বএ তার পদচারণা রয়েছে। পরিশেষে, এই নারী দিবসে সকল নারীদের প্রতি সম্মান জানিয়ে এটাই বলতে পারি, “আমরা নারী,আমরা সব পারি “।
Leave a Reply