খুলনার কয়রার শাহবাজ আলী সেখ (৬৪) প্রায় ২০ দিন ধরে খুঁজে ফিরছেন তার মেয়ে আসমা বেগমকে (৩৭)। দুই কন্যাসহ তিনি খুলনার ফুলতলা উপজেলার শ্বশুরবাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়েছেন।
শাহবাজ আলীর অভিযোগ, তার মেয়ে দীর্ঘদিন ধরে স্বামী মিলন খন্দকারের (৪০) নির্যাতনের শিকার হয়ে আসছিলেন। মদ, গাঁজাসহ নেশাজাতীয় দ্রব্যে আসক্ত মিলন প্রায়ই স্ত্রীকে মারধর করতেন। যৌতুকের দাবিতেও চাপ দিতেন। মোবাইল গেম ও জুয়ায় আসক্তির কারণে সংসারে নিত্য অশান্তি তৈরি হতো।
প্রায় ২০ বছর আগে আসমার বিয়ে হয় ফুলতলার দামোদর গ্রামের মৃত মুজিবর খন্দকারের ছেলে মিলন খন্দকারের সঙ্গে। বিয়ের পর তাদের সংসারে দুই কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। সংসারের শুরু থেকেই স্বামীর সঙ্গে দ্বন্দ্ব ও নির্যাতন চলতে থাকলেও শাহবাজ আলী বারবার মেয়েকে বুঝিয়ে স্বামীর সংসারে পাঠান।
গত ২ আগস্ট রাত ৮টার দিকে মিলন শ্বশুরকে ফোন করে জানান, আসমা দুই সন্তানকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি থেকে বেরিয়ে গেছেন। এরপর থেকে তাদের আর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। তবে মেয়ের খোঁজ চাইতে গেলে জামাতা উল্টো শ্বশুরকে ভয়ভীতি ও প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছেন বলে দাবি করেছেন শাহবাজ।
মেয়েকে ফিরে পেতে ইতিমধ্যে কয়রা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন তিনি। একই সঙ্গে ঘোষণা দিয়েছেন, কেউ যদি তার মেয়ে ও নাতনিদের খুঁজে দিতে পারেন, তবে তিনি ১০ হাজার টাকা পুরস্কার দেবেন। সম্প্রতি কয়রা সাংবাদিক ফোরামে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি শ্বশুরবাড়ি থেকে মেয়ে নিখোঁজের বিষয়টি তুলে ধরে প্রশাসনের সহযোগিতা চান।
শাহবাজ আলীর পরিবার জানায়, মেয়ের শোকে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তার স্ত্রী। খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে দিন দিন তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়ছেন। আর শাহবাজ আলী প্রতিদিন দফায় দফায় বিভিন্ন মানুষের দরজায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন কেবল মেয়ের খোঁজে।
কয়রা থানার ওসি মো. ইমদাদুল হক বলেন, নিখোঁজ সংক্রান্ত একটি জিডি করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
Leave a Reply