পানছড়ি বাজারসহ তবলছড়ি রোডে ড্রেনের দূষিত পানিতে উৎকট গন্ধ।পয়নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় দুর্ভোগে সাধারণ মানুষ।
পার্বত্য খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ি বাজারের তবলছড়ি রোডে রাস্তার পাশের ড্রেনের পয়নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় ড্রনের ময়লা আবর্জনা ও নোংরা পানি বিবর্ণ হয়ে প্রকট আকার ধারণ করেছে। এতে করে চারপাশে ছড়াচ্ছে উৎকট গন্ধ, আর আবর্জনাযুক্ত পানিতে উপদ্রব বৃদ্ধি পাচ্ছে মশা-মাছি। ড্রেনে জমে থাকা এই ময়লা আবর্জনার দুর্গন্ধে দুর্ভোগের শেষ নেই সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ী মহলের।
পানছড়ি বাজারের তবলছড়ি রোডের এই ড্রেনটি নদীর সাথে সংযোগ থাকলেও সেই ড্রেনের উপর চায়ের দোকানের বিভিন্ন ময়লা ও আবর্জনা ফেলার কারণে এবং তা পয়ঃনিষ্কানের ব্যবস্থা না করার ফলে ময়লা ও দুর্গন্ধময় পানি থেকে প্রতিনিয়ত নানা কীটপতঙ্গের জন্ম হচ্ছে এবং এর ফলে পানিবাহিত রোগজীবণু ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করছেন জনসাধারণ।
তবলছড়ি রোডের পাশেই রয়েছে সানরাইজ কিন্ডার গার্টেন স্কুল। অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, এসাইনমেন্ট জমা দিতে মাঝে মধ্যে হেটে এবং অটোরিকশায় (ইজিবাইক) দিয়ে স্কুলে চলাচল করি। মাঝে বেশ কিছুদিন ড্রেনের পানি ভালো ছিলো। তবে বর্তমানে দুর্গন্ধের কারণে যাতায়াতে মারাত্মক ভোগান্তি হচ্ছে। ড্রেনের পানি কমলে দুর্গন্ধ আরও মারাত্মক আকার ধারণ করবে। প্রতি বছর আমরা একই দৃশ্য দেখে অভ্যস্ত। পানি শোধনের ব্যবস্থা না করলে পরিবেশ আরও হুমকির মুখে পড়বে।
অপর এক অভিভাবক বলেন, স্কুল থেকে শিশুকে নিয়ে বাড়ি ফেরার সময় তবলছড়ি রোড হয়েই বাড়ি যেতে হয়। তিনি বলেন, তবলছড়ি রোডের পরিবেশ খুব খারাপ হয়ে গেছে। ময়লা দুর্গন্ধে বসা তো দূরের কথা, হাঁটাও যায় না! আমি বাচ্চা নিয়ে বাসায় যাই এই পথে। প্রতিদিনই এই ময়লা গন্ধ নাকে আসে। একদিন তো আমার বাচ্চাটা বমিই করে দিয়েছে।
এই ব্যাপারে পানছড়ি বাজার উন্নয়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এই বিষয়ে কয়েকবার এমপি সাহেবের সুপারিশ নিয়ে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত আবেদন করেছি। কিন্তু দু্ঃখজনক এ বিষয়ে কোন সহযোগিতা পাইনি। প্রতিবৎসর বাজার ফান্ড ইজারা দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা রাজস্ব নিচ্ছে, কিন্তু উন্নয়নমূলক তেমন কোন কাজ করছে না।
পানছড়ি বাজার ব্যবসায়ী কাজল দে বলেন, এই ড্রেনের সমস্যাটি দীর্ঘ দিনের সমস্যা। আমি বেশ কয়েকবার এই নিয়ে ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন মহলে সমস্যা সমাধানের জন্য প্রস্তাব রাখেছি। কিন্তু এই সমস্যা সমাধানে কেউ তেমন গুরুত্ব দিইনি। আমি এই বিষয়ে প্রশাসনের সার্বিক সুদৃষ্টি কামনা করছি।
পানছড়ি উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক বিজয় কুমার দেব বলেন, বর্ষার সময় ছাড়া বছরের প্রায় সব সময়ই ড্রনের এই পানিতে গন্ধ থাকে। তবলছড়ি রোডের এলাকা দিয়ে চলাচল করা খুবই দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে শীতকালে ড্রেনের পানি থেকে প্রচণ্ড দুর্গন্ধ ছড়ায়। এতে নানা রোগজীবাণু সৃষ্টি হয়।
প্রতি বৎসর বাজার ফান্ড ইজারা দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা রাজস্ব নিচ্ছে। কিন্তু পানছড়ি বাজারের কোন উন্নয়ন কাজ হচ্ছে না। তবে আমি বাজার ফান্ডদের নেতৃবৃন্দদের বলবো এই সমস্যা সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হোক।
পানছড়ি বাজারের বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা গেছে বিভিন্ন খাবারের উচ্ছিষ্ট, চানাচুর ও চিপসের প্যাকেট, পানির বোতলসহ বিভিন্ন ধরনের ময়লা ড্রেনের পানিতে ভাসছে। বাজারে গড়ে ওঠা বিভিন্ন হোটেল, দোকান ও রেস্তোরাঁর ময়লাও ফেলা হচ্ছে ড্রনের পানিতে।পচাঁ আবর্জনা ড্রেনে প্রবেশ করে নষ্ট করছে পানির স্বচ্ছতা। এ পানি অনেক দিন ড্রেনে আটকে থাকায় ক্রমেই পানির রং কালো হয়ে বাড়ছে দুর্গন্ধ। বাতাসের সঙ্গে উৎকট দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে বাজার ও আশপাশের এলাকায়। একই চিত্র দেখা মেলে বাজারে বিভিন্ন এলাকায়।
Leave a Reply