পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে(পাবিপ্রবি) ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে ভগবান শ্রী কৃষ্ণের ৫২৪৮তম শুভ জন্মাষ্টমী উপলক্ষে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা ও নাম সংকীর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার সকালে (১৯ আগষ্ট) শুভ জন্মাষ্টমী উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য, প্রক্টর, ছাত্র উপদেষ্টা, শিক্ষক,কর্মকর্তা- কর্মচারী ও সনাতন শিক্ষার্থীবৃন্দের উপস্থিতিতে, শোভাযাত্রাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন এর সামনে থেকে শুরু হয়ে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ার সামনে এসে শেষ হয় এবং শোভাযাত্রা পরবর্তী আলোচনা সভা ও নাম সংকীর্তন অনুষ্ঠিত হয়।
ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ছিলেন দেবকি ও বাসুদেব এর সন্তান এবং সনাতন ধর্মাম্বলীরা তার জন্মদিনে জন্মাষ্টমী হিসেবে পালন করে। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মের সময় চারিদিকে অরাজকতা, নিপীড়ন, অত্যাচার চরম পর্যায়ে ছিল। সেই সময় মানুষের স্বাধীনতা বলে কিছু ছিল না। সর্বত্র ছিল অশুভ শক্তির বিস্তার। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের মামা কংস ছিলেন তার জীবনের শত্রু। মথুরাতে শ্রীকৃষ্ণের জন্মের সাথে সাথে সেই রাতে তার বাবা বাসুদেব তাঁকে যমুনা নদী পার করে গোকুলে পালক মাতা-পিতা যশোদা ও নন্দর কাছে রেখে আসেন।
সনাতন ধর্মাবলম্বীরা বিশেষত বৈষ্ণবদের কাছে জন্মাষ্টমী একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসব। এই উৎসব নানা ভাবে উদ্যাপন করা হয়। যেমন – ভাগবত পুরাণ অনুযায়ী নৃত্য, নাটক যাকে বলা হয় রাসলীলা বা কৃষ্ণ লীলা, মধ্যরাত্রি তে শ্রীকৃষ্ণের জন্মের মুহূর্তে ধর্মীয় গীত গাওয়া, উপবাস, দহি হান্ডি প্রভৃতি।
রাসলীলা তে মূলত শ্রীকৃষ্ণের ছোটবেলার বিভিন্ন ঘটনা দেখানো হয়।
অন্যদিকে দহি হান্ডি প্রথায় অনেক উঁচুতে মাখনের হাড়ি রাখা হয় এবং অনেক ছেলে মিলে মানুষের পিরামিড তৈরি করে সেই হাড়ি ভাঙ্গার চেষ্টা করে। তামিলনাড়ুতে এ প্রথা উড়িয়াদি নামে পরিচিত।
এই দিন মানুষ কৃষ্ণের প্রতি ভালোবাসা ব্যক্ত করার জন্য উপোস থাকে, ধর্মীয় গান গায় এবং উপবাস পালন করে।
ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্ম তিথিতে মধ্যরাতে তার ছোট ছোট মূর্তি কে স্নান করিয়ে কাপড় দিয়ে মোছা হয় এবং দোলনায় সাজানো হয়। তারপর উপাসক মন্ডলী নিজেদের মধ্যে খাদ্য ও মিষ্টান্ন বিনিময় করে উপবাস ভঙ্গ করে।
গৃহস্ত মহিলারা বাড়ির বিভিন্ন দরজার বাইরে, রান্নাঘরে ভগবান শ্রী কৃষ্ণের পদচিহ্ন এঁকে দেন, যা ভগবান শ্রীকৃষ্ণের যাত্রা হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
জন্মাষ্টমী উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাফিজা খাতুন বলেন, – “ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার, উৎসব সবার”
এসময় তিনি সবাইকে জন্মাষ্টমীর শুভেচ্ছা জানান এবং বঙ্গবন্ধুর অসাম্প্রদায়িক চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে বাংলাদেশ বিনির্মানে সকলকে এগিয়ে আসতে বলেন।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মোঃ কামাল হোসেন, ছাত্র উপদেষ্টা দপ্তরের পরিচালক ড.সমীরণ কুমার সাহা, সহযোগী অধ্যাপক ড.প্রিতম কুমার দাস, সহকারী অধ্যাপক লিটন কুমার পাল, সহকারী অধ্যাপক রতন কুমার পাল, সহকারী অধ্যাপক উদয় বসাক, প্রভাষক তরুন দেবনাথ; এছাড়াও ‘সনাতন বিদ্যার্থী সংসদ’ পাবিপ্রবি শাখার সভাপতি বিজয় কুমার শীল ও সাধারণ সম্পাদক সুইট মন্ডল, বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সনাতনী শিক্ষার্থীবৃন্দ।
Leave a Reply