প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতার চিকিৎসায় এগিয়ে এসেছেন সাইফুল্লাহ আল মামুন।
এক সময়ের ত্যাগী রাজনৈতিক কর্মী। আওয়ামীলীগের পরিক্ষীত, একনিষ্ঠ ও ত্যাগী কর্মী বলতে যা বোঝায় শামসুল হুদা ঢালী তাই ই। আওয়ামীলীগের দুঃসময়, সুসময় সকল সময়ে পাশে থেকেছেন, উত্তর বেদকাশী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের দল গোছাতে, দল সাজাতে, দলের সাংগঠনিক ভিত্তি মজবুত করতে এই লোকটির অবদান বেদকাশী-কয়রার কোনো রাজনীতিবিদ অস্বীকার করতে পারবে না। তাঁর বিনয়, তাঁর রাজনৈতিক ঔদার্যের কথা সমসাময়িক সকল রাজনীতিক অকপটে স্বীকার করতে বাধ্য হবেন।
যখন চারিদিকে হাইব্রিড, স্বার্থান্বেষী, সহমত ভাই কর্মীদের ছড়াছড়ি, যখন হাইব্রিড নেতাদের নিয়ে চলে নাচানাচি তখন এসব নির্ভীক, দলীয় আনুগত্য প্রদর্শনকারী, দুঃসময়ের রাজনৈতিক সহযোদ্ধারা, রাজনৈতিক কর্মীরা হয়ে পড়েন উপেক্ষিত ও অবহেলিত।
বয়সের ভারে ন্যুব্জ, দীর্ঘদিন, ডায়াবেটিস, প্রেসার, লিভার ও পাকস্থলীর জটিলতা জনিত নানান রোগের উপসর্গ মাথায় নিয়ে এই একনিষ্ঠ কর্মী হুদা ঢালী বাস করেন বেদকাশী দিঘীরপাড়, ঢালিবাড়ীর উত্তরপাশের খাস জমিতে। অথচ এই হুদা ঢালী এক সময়ে ছিলেন ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক। সাবেক এই সাধারণ সম্পাদক ছিলেন নব্বইয়ের দশকে তৎকালীন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক ভিত্তি মজবুত করার কারিগর আওয়ামীলীগের তুখোড় রাজনৈতিক নেতা ও বীরমুক্তিযোদ্ধা জালাল ঢালীর ঘনিষ্ঠ সহচর।
পারিবারিক সূত্রে ও শামসুল হুদা ঢালীর নিজস্ব বয়ানে জানা যায় যে, তিনি নিজ জমি বিক্রি করে উঃ বেদকাশী ইউনিয়নের তিনবারের সফল চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা মরহুম জালাল ঢালীর প্রথম নির্বাচনী প্রচারণার সিংহভাগই বহন করেছিলেন। অজপাড়াগাঁয়ে জন্ম নেয়া এই ব্যক্তিটির দলের প্রতি সীমাহীন অনুরাগ, ছিল না পদের প্রতি কোনো আকাঙ্খা। তাঁর দেয়া তথ্যমতে ১৯৭২-২০১৬ পর্যন্ত তিনি ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবেই দায়িত্ব পালন করেছেন, যা দলের প্রতি সীমাহীন আনুগত্যের প্রাপ্তি বলে মনে করেন। সেই ব্যক্তিটি আজ অসুস্থ ও অসহায় অবস্থায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। ছোট্ট এক টুকরো জমির একাংশ ইতোমধ্যে বিক্রি করে দিয়ে নিজের চিকিৎসা করিয়েছেন।
কিন্তু আজ তিনি অচল, দু পায়ে ভর দিয়ে উঠে দাঁড়াতে পারেন না, ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ভঙ্গুর বসতভিটায় এখনও লোনাজল ওঠানামা করে। মাথা গোঁজার একমাত্র ঠাঁই হয়েছে দিঘিরপাড়ের শহীদ মিনারের পাশে খাসজমিতে খড়ের তৈরি করা ঝুপড়িতে। দুই ছেলে রতন ঢালী ও জয়নাল ঢালী ভাগ্যের ফেরে ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে। শারিরীকভাবে অসুস্থ এই সাবেক ওয়ার্ড সাধারণ সম্পাদক আফসোসের সুরে বলেন, “আমার এই দুঃসময়ে দলের কেউ খোঁজ নেয়নি। নিজের কষ্টের কথা কাউকে বলতেও পারিনা, আমাদের এই দু’হাত বেদকাশীর অসহায় মানুষদের জন্য, দলের জন্য ছিল। অথচ আজ আমার খোঁজ নেয় না কেউ। তবে খুলনা -৬ আসনের এমপি জনাব আক্তারুজ্জামান বাবু ভাইয়ের নজরে আসায় করোনাকালীন এই সময়ে এমপি বাবু ভাই ৫ কেজি চাল, দুই কেজি আলু, এককেজি ডাল সমেৎ এক বস্তা খাদ্য সহায়তা ছাত্রলীগের ছেলেদের দিয়ে পাঠিয়েছিলেন বলে অসুস্থ হুদা ঢালী জানান। কিন্তু চিকিৎসা সে ছিল দুঃস্বপ্নের মত।
তাঁর এই অসুস্থতার খবরে, দুঃসময়ে পাশে দাঁড়িয়েছেন আওয়ামীলীগের তরুণ রাজনীতিক ও সমাজসেবক বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক ও কয়রা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল্লাহ্ আল মামুন। কয়রা উপজেলা আওয়ামী লীগের দুঃসময়ের সাধারণ সম্পাদক সানা ইউনুছুর রহমানের সন্তান তিনি।
তিনি আশ্বাস দিয়েছেন সুচিকিৎসার। ইতোমধ্যে চিকিৎসার প্রাথমিক খরচের একাংশ পৌঁছে দিয়েছেন সাবেক এই সাধারণ সম্পাদক এর হাতে।
এ প্রসঙ্গে সাইফুল্লাহ্ আল মামুন বলেন, আমরা যারা মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী, আওয়ামী লীগ করি- আমি মনে করি আমরা সবাই মিলেই একটি পরিবার। বৃহৎ এ পরিবারে একে অপরের বিপদে পাশে দাঁড়াব এটাই হওয়া উচিত।এমনি করে বেঁচে থাকুক মানবতা। দলীয় ত্যাগী কর্মীদের দুঃখে পাশে দাঁড়াক দলীর ভাই বন্ধু ও রাজনৈতিক সহযোদ্ধারা।
Leave a Reply