ফরিদপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের (ডিসি অফিস) সামনে গৌরাঙ্গ কর্মকার নামে এক স্বর্ণ ব্যবসায়ী গায়ে পেট্রোল ঢেলে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। স্কুল শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছেন।
মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুমন রঞ্জন সরকার গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে সোমবার (১৮ জুলাই) দুপুরে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তিনি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার বৃক্ষমেলা উপলক্ষে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হয়। ঠিক তার আগ মুহূর্তে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের প্রধান ফটকের পাশেই পেট্রোল ঢেলে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন স্বর্ণ ব্যবসায়ী গৌরাঙ্গ কর্মকার।
পরে র্যালিতে উপস্থিত থাকা বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থী ও স্থানীয় জনতার সহযোগিতায় ওই ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করে ফরিদপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ সময় ওই স্বর্ণ ব্যবসায়ীর পকেটে একটি খোলা চিঠি পাওয়া যায়। উদ্ধারকৃত ওই চিঠিটি ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র বরাবর লেখা।
চিঠির লেখা থেকে জানা যায়, স্বর্ণ ব্যবসায়ী গৌরাঙ্গ কর্মকার ও তার অন্য প্রতিবন্ধী ভাই শহরের নিলটুলিতে নয়ন জুয়েলার্স নামক একটি প্রতিষ্ঠানের স্বত্ত্বাধিকারী। গত ২৫ বছর ধরে ওই দুই প্রতিবন্ধী ভাই স্বর্ণের ব্যবসা করে আসছেন। তবে ওই প্রতিষ্ঠানে স্বর্ণ সাজিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করতে না পারায়, তা মজুদ করে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলেন তারা। পূর্ণ জুয়েলার্সের স্বত্ত্বাধিকারী অয়ন কর্মকার সুমন ও তার বাবা সুধীর কর্মকার দুজনে ভরি প্রতি ২০০ টাকা বেশি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ২৪ ক্যারেটের মোট ২৪০ ভরি ওজনের স্বর্ণ নেয়। এই স্বর্ণ দেওয়ার পর টাকা চাইতে গেলে দুই প্রতিবন্ধী স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে টাকা বা স্বর্ণ ফেরত না দিয়ে বিভিন্ন টালবাহানা করতে থাকেন অয়ন কর্মকার। স্বর্ণ বা টাকা না দিয়ে দুই প্রতিবন্ধী স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে বিভিন্ন হুমকি ধমকি দিতে থাকেন তারা। গত ২৫ মে প্রতিবন্ধী গৌরাঙ্গকে বাসায় ডেকে নিয়ে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ ও এসিড দিয়ে পুড়িয়ে মারার ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন কাগজপত্রে সই করাতে বাধ্য করেন অয়ন কর্মকার। যার কারণে তিনি আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেন।
এ ব্যাপারে পূর্ণ জুয়েলার্সের স্বত্ত্বাধিকারী অভিযুক্ত অয়ন কর্মকার সুমনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটিও বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুমন রঞ্জন সরকার বলেন, এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তবে ঘটনাটি জানতে পেরেছি। তিনি আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন তার সন্ধান করে বিস্তারিত ঘটনা জানতে চেষ্টা করছি।
Leave a Reply