কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে একই ব্যক্তির দুই স্ত্রী পরস্পরের বিরুদ্ধে প্রার্থী হওয়ায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে ভোটারদের মধ্যে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। স্বামী এক স্ত্রীকে সমর্থন দেওয়ায় এবং অপর স্ত্রী প্রার্থীতা প্রত্যাহার না করায় ‘ঘরের লড়াই’ এবার নেমে এসেছে নির্বাচনি ময়দানে। ওই এলাকার ভোটাররাও উৎসুখ হয়ে আছে দুই সতীনের ভোটের কাঙ্ক্ষিতে ফলাফল নিয়ে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ফুলবাড়ী সদর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডে সংরক্ষিত নারী সদস্য নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন ওই এলাকার চন্দ্রখানা বুদারবান্নি গ্রামের ফজলু কসাইয়ের দুই স্ত্রী আঙ্গুর বেগম ও জাহানারা বেগম। স্বামী ফজলু কসাই আঙ্গুর বেগমের পক্ষ নিলেও তার অপর স্ত্রী জাহানারা বেগম ভোটযুদ্ধ থেকে নিজের নাম প্রত্যাহার করতে রাজী নন। ফলে এক পরিবারে দুই বউ প্রার্থী হওয়া এলাকাজুড়ে রসালো আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
এ ব্যাপারে ফজলু কসাই জানান, আমার তিন স্ত্রীর মধ্যে আঙ্গুর বেগম প্রথম স্ত্রী, নাজমা বেগম দ্বিতীয় স্ত্রী ও জাহানারা বেগম তৃতীয় স্ত্রী। প্রথম ও দ্বিতীয় স্ত্রী আমার সাথে রয়েছে। তৃতীয় স্ত্রী জাহানারা বেগমকে আলাদা বাড়ি করে দিয়েছি। সেখানেই অবস্থান করছে সে। এবারের নির্বাচনে পাড়া-প্রতিবেশী ও আত্মীয়-স্বজনদের সমর্থনে প্রথম স্ত্রী আঙ্গুর বেগম সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। কিন্তু আমার তৃতীয় স্ত্রী জাহানারা বেগম আমাদের বাঁধা-নিষেধ সত্বেও সে একাই নির্বাচনি প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে জাহানারা বেগম জানান, ‘২০১৭ সালে আমি স্বামীর সমর্থনে প্রথম নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলাম। সেবার আমি দ্বিতীয় হয়েছিলাম। আমার জনপ্রিয়তার ঈর্ষান্বিত হয়ে আমার সতীন আঙ্গুর বেগম স্বামীকে ফুসলিয়ে প্রার্থী হয়েছে। নির্বাচন থেকে সড়ে দাঁড়াতে আমাকে চাপ দেওয়া হচ্ছে। তাতে আমি ভীত নই। জনগণ আমার সাথে রয়েছে। আমিই শেষ হাসি হাসবো।’
এ দিকে, গত ১২ নভেম্বর প্রতীক বরাদ্দে আঙ্গুর বেগম পেয়েছেন কলম আর জাহানারা বেগম পেয়েছেন তালগাছ প্রতীক। এ ছাড়াও তাদের সাথে নুরী বেগম, আনজুমা বেগম ও আঙুর বেগম নামে অপর একজনসহ মোট ৫ জন এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
অন্যদিকে, প্রতীক পাওয়ার পর মাঠ দাপিয়ে বেড়াচ্ছে দুই সতীন। উৎসাহ নিয়ে সমর্থকরাও ভোটারদের দ্বারস্থ হচ্ছেন।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, তৃতীয় বিয়ের পর এমনিতে ফজলু কসাইয়ের পরিবারে অশান্তি নেমে এসেছে। এখন দুই সতীন পরস্পরের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় বিপাকে পড়েছে সে। সংসারে বেড়েছে ঝগড়া-বিবাদ। অনেক বুঝিয়েও জাহানারা বেগমের প্রার্থীতা প্রত্যাহার করা যায়নি। এখন দুই সতীন পুরো ফুলবাড়ী উপজেলায় নির্বাচনি আলোচনা-সমালোচনার খোরাক হয়েছেন।
আগামী ২৮ নভেম্বরের নির্বাচনে এই দুই গৃহবধূ পরস্পরের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। এখন অপেক্ষা ফলাফল কার পক্ষে যায়। কে নিয়ে আসতে পারে বিজয়ের তিলক।
Leave a Reply