বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) একের পর এক ঘটেই চলেছে আত্মহত্যার ঘটনা। এক বছরে প্রায় এক ডজন আত্মহত্যা চেষ্টার ঘটনার ঘটেছে। এরমধ্যে দুজন মেধাবী ছাত্রী গলায় ফাঁস দিয়ে মারা গেছেন। এভাবে ঘন ঘন আত্মহত্যা চেষ্টার বিষয়টি যথেষ্ট উদ্বেগের বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মুখে অবস্থিত একটি মেসের নিজ কক্ষে গলায় শাড়ি পেঁচিয়ে আত্মহত্যার শিকার হন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী বৃষ্টি সরকার। গত জুলাইয়ে একই কায়দায় মেসের কক্ষে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী শাহরিন রিভানা। এছাড়া গত ফেব্রুয়ারী থেকে এ পর্যন্ত অন্তত ১০ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যার প্রচেষ্টা চালালেও শেষ অবধি বেঁচে ফিরেছেন।
এদের মধ্যে বঙ্গবন্ধু হলে দুজন ছাত্র , শেরে বাংলা হলে তিনজন ছাত্র , শেখ হাসিনা হলে একজন ছাত্রী, রূপাতলী হাউজিং এলাকায় নিজ নিজ মেসে দুজন ছাত্র ও একজন ছাত্রী এবং শেখ হাসিনা হলের সামনে একজন ছাত্র এবং ঝালকাঠিতে নিজ বাসভবনে একজন ছাত্র আত্মহত্যার চেষ্টা করে বলে জানা গেছে। এসব ঘটনার বেশিরভাগই হৃদয় ঘটিত ব্যাপার এবং নিঃসঙ্গতার দরুন ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চয়তা পাওয়া গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে গত চারবছর যাবৎ শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতায় কাজ করে যাচ্ছেন অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী সৈয়দা নাবিলা হোসেন। তিনি জানান,বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নানা কারণে মানসিক জটিলতা, সম্পর্কের টানাপোড়েন, উদ্বিগ্নতা – নিঃসঙ্গতায় কাটায়। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হচ্ছে তাদের কথা চিন্তা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার এত বছরেও একজন সাইকোলজিস্ট নিয়োগ দেয়া হয় নি। তাই এখানে দ্রুত একজন সাইকোলজিস্ট নিয়োগের দাবি জানাই। একইসাথে ক্যাম্পাসে যারা মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করে তাদের পাশে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে চাই।
তবে সাম্প্রতিক এসব দুর্ঘটনায় এবার নড়েচড়ে বসেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনিযুক্ত প্রক্টর ড. মোঃ আবদুল কাইয়ুম বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীরা যেভাবে ঘন ঘন নিজেদের জীবননাশের মতো সিদ্ধান্ত নিচ্ছে তা শিক্ষক হিসেবে আমাদের রীতিমতো পীড়া দিচ্ছে এবং উদ্বিগ্নতায় ফেলেছে। তাদের এরকম সিদ্ধান্তের পিছনের কারণ খুঁজে বের করতে ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে প্রক্টর অফিস। শীঘ্রই আত্মহত্যা প্রবণতা রোধে বিভিন্ন কর্মসূচী হাতে নেবো আমরা। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (রুটিন দায়িত্ব) ড.মোঃ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন,দ্রুত মনোরোগ বিশেষজ্ঞ নিয়োগ চূড়ান্ত করা হবে।
Leave a Reply