গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি অনির্দিষ্টকালের জন্য প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে। আজ সোমবার বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষক সমিতি এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায়।শিক্ষক সমিতির প্যাডে সভাপতি ড. মো. কামরুজ্জামান ও সাধারণ সম্পাদক ড. মো. আবু সালেহ স্বাক্ষরিত এ বিবৃতিতে জানানো হয়েছে “দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষকদের ন্যায্য অধিকার আর্থিক সুবিধাসহ প্রাপ্যতার তারিখ থেকে আপগ্রেডেশন, শিক্ষা ছুটি বিপরীতে যোগদানকৃত শিক্ষকদের চাকুরী স্থায়ীকরণ নিয়ে প্রশাসনের খামখেয়ালি আচরণ ও সময়ক্ষেপণ নীতি আপগ্রেডেশনের বিষয়টিকে জটিল থেকে আরও জটিলতর করে তুলেছে, যার নিমিত্তে শিক্ষকদের আপগ্রেডেশন একটি অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ধাবিত হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে আটকে থাকা শিক্ষকদের আপগ্রেডেশন দ্রুত কার্যকর করতে মাননীয় উপাচার্যের সাথে শিক্ষক সমিতি বারবার আলোচনা করলেও তা শুধু আশ্বাসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। শিক্ষক সমিতির চাপের মধ্যে আপগ্রেডেশন এর ভাইভা শেষ করলেও, দীর্ঘ ১ মাস ধরে রিজেন্ট বোর্ড সভা আয়োজনের কোন কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি, যা প্রশাসনের আন্তরিকতার অভাব বলেই শিক্ষক সমিতি মনে করে। এমতাবস্থায় শিক্ষক সমিতি কর্তৃক আয়োজিত সাধারণ সভায় সাধারণ শিক্ষকদের সম্মতিক্রমে ৫এপ্রিলের মধ্যে রিজেন্ট বোর্ড সভা আয়োজনের কোন কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা না হলে ৬ এপ্রিল থেকে সকল প্রকার একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে এবং প্রয়োজনে আরও কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করার যে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়, তা শিক্ষক সমিতি মাননীয় উপাচার্যকে অবহিত করে। এরই ধারাবাহিকতায়, শিক্ষক সমিতির সাথে মাননীয় উপাচার্য আলোচনায় বসেন। উক্ত আলোচনায় মাননীয় উপাচার্য ১২ এপ্রিলের মধ্যে প্রাপ্যতার তারিখ থেকে আপগ্রেডেশন কার্যকর করার লক্ষ্যে রিজেন্ট বোর্ড সভা আয়োজন করবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন। এই আলোচনার প্রেক্ষিতে শিক্ষক সমিতি মাননীয় উপাচার্য কে তার প্রতিশ্রুতি আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করার দাবি জানায়। উপাচার্য মহোদয় ৫ এপ্রিলের মধ্যেই আনুষ্ঠানিক ভাবে রিজেন্ট বোর্ডের তারিখ (১২ এপ্রিল) আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করবেন বলে শিক্ষক সমিতিকে প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় এই যে, গত ৪ এপ্রিল শিক্ষক সমিতি পুনরায় রিজেন্ট বোর্ড আয়োজন করার অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে উপাচার্যের সাথে দেখা করে। কিন্তু লকডাউন এর কথা বলে রিজেন্ট বোর্ড আয়োজন করার বিষয়ে মাননীয় উপাচার্য অপারগতা প্রকাশ করে। কারণ হিসেবে আরও বলেন যে, হায়ার বোর্ড, কর্মকর্তা – কর্মচারীদের আপগ্রেডেশন বোর্ড করতে অফিস খোলা রাখা লকডাউনের জন্য সম্ভব না। শিক্ষক সমিতি বিকল্প হিসেবে অনলাইনে ভাইভা নেয়ার জন্য অনুরোধ করে। কিন্তু মাননীয় উপাচার্য অনলাইনে ভাইভা নিবে না বলে শিক্ষক সমিতিকে অবহিত করেন।”
বিবৃতিতে আরো জানানো হয় শিক্ষক সমিতি আপগ্রেডেশন নিয়ে উপাচার্যের উদাসীনতা ও আন্তরিকতার অভাব বলে তীব্র প্রতিবাদ করে। পরিশেষে মাননীয় উপাচার্য কোন অবস্থায় এখন কিছু করতে পারবে না বলে শিক্ষক সমিতি কে জানায় এবং লকডাউন পরিস্থিতির উত্তরণ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে, বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষক সমিতি কার্যকরী কমিটির একটি জরুরী সভা ৫ এপ্রিল দুপুর ১ঃ০০ টায় অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় সর্বসম্মতিক্রমে গত ২২/০৩/২০২১ তারিখে অনুষ্ঠিত সাধারণ সভায় সকল শিক্ষকদের মতামত অনুযায়ী ৬ এপ্রিল থেকে সকল একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ রাখার যে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়, সেটি কার্যকর করার নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
এরই ধারাবাহিকতায়, আগামী ৬ এপ্রিল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সকল ধরনের একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার ঘোষণা করা হল। শিক্ষকদের ন্যায্য অধিকার আদায়ে একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার জন্য জন্য সম্মানিত শিক্ষকবৃন্দের নিকট সবিনয় আহবান জানানো হল। উল্লেখ্য যে, লকডাউন এর জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করায় বিশ্ববিদ্যালয় খোলার সাথে সাথে সকল প্রকার প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার ঘোষণা করা হল।”
Leave a Reply