গত ১৬ জুন সিলেট এবং সুনামগঞ্জ জেলা দ্বিতীয় দফা বন্যার শিকার হয়েছে মানুষ। পাহাড়ি ঢল এবং টানা বর্ষণে জেলা দুটির অধিকাংশ অঞ্চল এখন পানির নিচে। জনগণ পানিবন্দী অবস্থায় দিনাতিপাত করছে। প্লাবিত অঞ্চলগুলোয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ নেই, মোবাইল নেটওয়ার্ক নেই। অনিশ্চয়তায় দিন পাড় করছে সেখানকার মানুষজন। এছাড়াও কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, শেরপুর, নেত্রকোনার বিভিন্ন অঞ্চলের লাখো পানিবন্দী।
বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি মোঃ ফয়েজউল্লাহ এবং সাধারণ সম্পাদক দীপক শীল এক যৌথ বিবৃতিতে বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে দুর্যোগকালীন জরুরি অবস্থা জারি করে দ্রুত মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে ছাত্র ইউনিয়নের উদ্যোগে বন্যা দুর্গতদের জন্য মানবিক ত্রাণ তহবিল গঠনের উদ্যোগ নেয় ছাত্র ইউনিয়ন।সারা দেশের নেতা-কর্মীরা ত্রান তহবিল সংগ্রহ করতে শুরু করে ১৮ জুন থেকে। অন্যদিকে সিলেট জেলা ছাত্র ইউনিয়নের নেতৃত্বে সর্বস্তরের জনগণকে নিয়ে গড়ে তোলেন রেড ভলান্টিয়ার্স টিম। তারা ১৬ জুন হতে নেমে পড়েন বন্যা দুর্গত মানুষের পাশে বিভিন্ন মানবিক সাহায্য সহযোগিতা নিয়ে। ছাত্র ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃত্বে যে তহবিল গঠন করা হয়েছে সে তহবিল থেকে সিলেটের রেড ভলেন্টিয়াররা প্রতিদিন বন্যা দুর্গত মানুষের জন্য তিন বেলা রান্না খাবার-বিশুদ্ধ যাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে তাদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন আর যাদের সাথে নিয়মিত যাতায়াত করা সম্ভব হচ্ছে না তাদের শুকনো খাবার, পানি বিশুদ্ধ করণ ট্যাবলেট পৌঁছে দিচ্ছেন ছাত্র ইউনিয়নের নেতৃত্বে রেড ভলেন্টিয়ারেরা।
এবিষয়ে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক সুমাইয়া সেতু বলেন, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন সিলেট- সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা-কুড়িগ্রামে বন্যায় ক্ষতি গ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। আমরা সিলেটের সর্বস্তরের জনগণকে নিয়ে রেড ভলান্টিয়ার গঠনে করে প্রায় দশ হাজার মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। সিলেটের মানুষের জন্য তিন বেলা রান্না খাবার, শুকনো খাবার সহ বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করতে পেরেছি গণ তহবিলের অর্থ দিয়ে।
আমরা ইতিমধ্যে নেত্রকোনা ও কুড়িগ্রামে স্থানীয় ছাত্র ইউনিয়নের নেতাকর্মীদের মাধ্যমে বন্যকবলিত মানুষের পাশে শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করতে সক্ষম হয়েছি। এই সহযোগিতা পরিমাণ অর্থ দিয়ে বিবেচনা করলে প্রায় চার লক্ষ টাকা। আমরা ইতিমধ্যে ছাত্র ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় কমিটি বন্যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসার পর ওই অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক শিক্ষা জীবনে কিভাবে ফিরিয়ে আনা যায় তা নিয়ে চিন্তা ভাবনা করছি।
উল্লেখ গত ১৫ জুন বুধবার হতে প্রবল বৃষ্টির পাশাপাশি পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকায় সিলেট, সুনামগঞ্জ,নেত্রকোনা, কুড়িগ্রাম সহ দেশের বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। বানভাসি মানুষের দুর্বিষহ জীবনে মানুষের সরকারি সাহায্য সহযোগিতা তেমন একটা চোখে না পড়লেও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মানুষ ও সংগঠন গুলো মানবিক সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন।
Leave a Reply