নাটোরের বড়াইগ্রামে করোনা মহামারীর মধ্যেও সরকারী নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর মূল্যায়ন পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বনপাড়া সেন্ট যোসেফ্স স্কুল কলেজের কলেজ শাখা। ইতোঃমধ্যে তারা পরীক্ষার রুটিন প্রকাশসহ বকেয়া বেতনাদী পরিশোধের নোটিশ জারী করেছেন। পরীক্ষার আর মাত্র একদিন বাঁকি থাকলেও শিক্ষার্থীদের প্রবল আপত্তি আমলে না নিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ তাদের সিদ্ধান্তে অটল থাকায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, সম্প্রতি কলেজ কর্তৃপক্ষ আগামী ৬ মে থেকে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন পরীক্ষা নেয়ার ঘোষণা দেন। আগামী ২৮ মে এ পরীক্ষা শেষ হবে। পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য সকল শিক্ষার্থীদেরকে তাদের বকেয়া বেতনাদী সম্পূর্ণ পরিশোধ করে প্রবেশপত্র সংগ্রহ করার নির্দেশ দিয়ে নোটিশ জারী করা হয়েছে। কলেজের শিক্ষার্থীদের মাসিক বেতন ৬৮০ টাকা। অধিকাংশ শিক্ষার্থীদেরই প্রায় ১২-১৪ মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। সে হিসাবে তাদের প্রত্যেককে পরীক্ষার আগে ৮ থেকে ৯ হাজার টাকা পরিশোধ করতে হবে। একদিকে, করোনা মহামারীর কারণে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে কোন ক্লাশ না হওয়া, অপরদিকে, সরকার ঘোষিত লকডাউনের মধ্যে পরীক্ষা নেয়ার এমন সিদ্ধান্তে শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। এসব বিষয়ে ইতোঃমধ্যে অনেক অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করে একাধিক পোষ্ট, কমেন্ট করেছেন।
কলেজের শিক্ষার্থী সজিব আহমেদ জানান, কোন ক্লাশ না নিয়ে স্যারেরা কিসের পরীক্ষা নিবেন আমাদের। এটাতো মানসিক চাপ সৃষ্টি করা ছাড়া আর কিছু না। তাহোয়ার মুসতারিন নাইম জানান, স্যারেরা করোনা মহামারী ও লকডাউনের মধ্যে শুধু আমাদের বেতন ও পরীক্ষার ফি হাতিয়ে নিতেই এ পরীক্ষার আয়োজন করেছেন। করোনার মধ্যে তারাতো আমাদেরকে এভাবে বিপদে ফেলতে পারেন না। রাতুল মৃধা মৃদুল জানান, করোনা সমস্যা তো আছেই, তারপরও রোজা রেখে তিন ঘন্টা পরীক্ষা দেয়াটাতো খুবই কষ্টকর। পরীক্ষার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করা উচিৎ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ৫-৬ জন ছাত্র অভিভাবক জানান, করোনা মহামারী ও লকডাউনের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য প্রায় বন্ধ, আয় রোজগার নেই বললেই চলে। এরমধ্যে এতো গুলো টাকা কিভাবে দেবো। আর সারা বছর কোন ক্লাশ হয়নি, অথচ স্যারেরা কোন ছাড় না দিয়ে পুরো বেতন আদায় করছেন-এটা কতটুকু যৌক্তিক।
এ ব্যাপারে সেন্ট যোসেফস স্কুল এন্ড কলেজের কলেজ শাখার পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মুহা: নাজমুল হোসাইনের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তেই পরীক্ষার নোটিশ জারী করা হয়েছে।
Leave a Reply