চকরিয়া-পেকুয়া উপজেলার মধ্যবর্তী বাঘগুজারা মাতামুহুরী নদীর ওপর নির্মিত রাবার ড্যামের ব্যাগ ছিঁড়ে গিয়ে চাষাবাদ চরম ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। একটি স্প্যানের রাবার ব্যাগ ছিঁড়ে যাওয়ায় বোরো চাষের জন্য আটকানো যাচ্ছে না মিঠাপানি। ছেড়া অংশ দিয়ে লবণাক্ত পানি ঢুকে চকরিয়া-পেকুয়ার অন্তত ৫ হাজার হেক্টর চাষাবাদে ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। রাবার ড্যামটির কেয়ারটেকার আবদুর রহিম বাঘগুজারা রাবার ড্যামের দুই নাম্বার স্প্যানের রাবার ছিঁড়ে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সোমবার ভোরে সামুদ্রিক জোয়ারের সময় এ রাবার ড্যামটির দুই নাম্বার স্প্যানের একটি অংশের রাবার ছিঁড়ে যায় বলে জানান তিনি। কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, ২০১২ সালে সরকার মাতামুহুরী নদীর মিঠা পানি আঁটকিয়ে শুস্ক মৌসুমে বোরো চাষের জন্য এ নদীর চকরিয়া-পেকুয়া অংশে চকরিয়ার পালাকাটা, পেকুয়ার বাঘগুজারা ও পেকুয়া ভোলা খালে পৃথক তিনটি রাবার ড্যাম নির্মাণ করে। মাতামুহুরী নদীতে এ রাবার ড্যামগুলো নির্মাণ করার মাধ্যমে প্রতি বছর শুস্ক মৌসুমে চকরিয়া-পেকুয়ায় প্রায় ৬০ হাজার একর জমিতে ইরি বোরো চাষ ও রবি শষ্যের চাষ হয়ে আসছে। ইরি বোরো চাষ শেষে প্রতি বছরের মে মাসের শুরুর দিকে রাবার ড্যামগুলোর রাবার ব্যাগ আবার নামিয়ে দিয়ে মাতামুহুরী নদীর পানি চলাচল স্বাভাবিক করা হয়। কিন্তু বোরো চাষে পানি সেচের প্রয়োজনীয়তা আরও প্রায় এক মাস রয়ে গেছে। এ অবস্থায় সোমবার ভোর রাতের কোনো এক সময় পেকুয়ার বাঘগুজারা রাবার ড্যামটির দুই নাম্বার স্প্যানের রাবার ছিঁড়ে গিয়ে নদীর ওপরের দিকের আটকানো মিঠাপানি বের হয়ে যাচ্ছে। এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, রাবার ড্যামের ওপরের দিকে বেশ কয়েকটি বালি তোলার কাজে ব্যবহৃত ড্রেজার আটকে আছে। রাবার ড্যাম নামিয়ে দিয়ে আটকে পড়া ওই ড্রেজারগুলো বের করে নেওয়ার জন্য ড্রেজার মালিকেরা বেশ কিছুদিন ধরে তদবির চালিয়ে আসছেন। এলাকাবাসীর মতে পানির চাপে নয়, এমনও হতে পারে স্বার্থান্বেষী মহল হয়তো রাবার ছিঁড়ে দিয়েছে, যা তদন্ত করলেই বেরিয়ে আসবে। এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের শাখা কর্মকর্তা জামাল মুরশেদ বলেছেন, ওই ড্যামের দুই নাম্বার স্প্যানের ব্যাগের উপরের অংশ সোমবার ভোর রাতের কোনো এক সময় ছিঁড়ে গেছে। এটি মেরামত করার জন্য জরুরি ভিত্তিতে উদ্যোগ নেওয়া হবে। বালি তোলার ড্রেজার বের করে নেওয়ার জন্য ড্যামে কোনো নাশকতা করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানান।
Leave a Reply