যুক্তরাজ্যে পাওয়া করোনাভাইরাসের নতুন স্ট্রেইন ‘এন৫০১ওয়াই’ বাংলাদেশে পাওয়া গেছে।গতকাল মঙ্গলবার (৯’ই মার্চ) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা।
রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরিন বলেন, ‘আমরা জানুয়ারির প্রথম দিকে পাঁচ বা ছয় জনের নমুনায় যুক্তরাজ্যের নতুন ধরনের করোনাভাইরাস খুঁজে পেয়েছি।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. এ বি এম খুরশীদ বলেন, ‘এই ভাইরাস দেশে কতটা ছড়িয়েছে তার বিস্তারিত জানতে কন্টাক্ট ট্রেসিং চলছে।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্র জানায়, গত ৫ জানুয়ারি প্রথম এই ভাইরাস পাওয়া যায়। আক্রান্ত ব্যক্তি যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফিরেছিলেন। ঢাকা ও সিলেটেও এই ভাইরাসের সন্ধান পাওয়া গেছে।
যুক্তরাজ্য থেকে যারা দেশে ফিরছেন তাদের কোয়ারেন্টিনে রাখার বিষয়ে জোর দিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক। অন্যথায় এই ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পরবে বলে আশঙ্কা করেন তিনি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের ৮৩টি দেশে করোনার নতুন এই স্ট্রেইনের সংক্রমণ হয়েছে।
বিজ্ঞানীদের মতে, যুক্তরাজ্যে পাওয়া করোনাভাইরাসের এই নতুন স্ট্রেইন আরও বেশি সংক্রামক।
আইইডিসিআরের উপদেষ্টা মোশতাক হোসেন বলেন, ‘এই নতুন স্ট্রেইনের কারণে শনাক্তের হার বাড়ছে কি না, তা এখনই বলা কঠিন হবে। এর জন্য জিনোম সিকোয়েন্সিং করতে হবে।’
ব্যয়বহুল হলেও ভাইরাসটির রূপ পরিবর্তন হচ্ছে কি না, তা জানতে সরকারের নিয়মিতভাবে জিনোম সিকোয়েন্সিং করা উচিত’, যোগ করেন তিনি।
যুক্তরাজ্যের নতুন স্ট্রেইন সম্পর্কে জানতে চাইলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘মানুষ সামাজিক দূরত্ব ও মাস্ক পরার বিষয়ে উদাসীন বলেই সংক্রমণের হার বাড়ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সব ধরনের স্ট্রেইনের জন্য নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা একই। আমাদের শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে, নিয়মিত হাত ধুতে হবে, মাস্ক পরতে হবে এবং ভিড় থেকে দূরে থাকতে হবে। আমরা যদি এই স্বাস্থ্য বিধিগুলো মেনে চলি তাহলে ভাইরাসকে পরাস্ত করতে পারব।’
গত ফেব্রুয়ারিতে নতুন স্ট্রেইন বিষয়ে যুক্তরাজ্য সরকার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, নতুন এই স্ট্রেইন আগের স্ট্রেইনের চেয়ে ৭০ শতাংশ বেশি সংক্রামক হতে পারে।
গত সেপ্টেম্বরে প্রথম শনাক্ত হওয়ার পর করোনার নতুন ধরনটি অত্যন্ত দ্রুত যুক্তরাজ্যে ছড়িয়ে পড়েছে।
ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে নিউইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্রিটিশ সরকারের বিজ্ঞানীরা অন্য সব স্ট্রেইনের তুলনায় যুক্তরাজ্যের নতুন স্ট্রেইনটিকে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করছেন। এতে আরও বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্যের এই নতুন স্ট্রেইন হাসপাতালে ভর্তির ঝুঁকি আরও বাড়িয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিজ্ঞানীদের ধারণা অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রে অন্যান্য স্ট্রেইনের তুলনায় এই স্ট্রেইনটি ৩৫ থেকে ৪৫ শতাংশ বেশি তাড়াতাড়ি সংক্রমিত করছে।
Leave a Reply