ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে ইট ভাটাগুলোয় কয়লার পরিবর্তে ইট পোড়ানোর জন্য ভাটাগুলোতে স্তুপ করা হচ্ছে কাঠখড়ি’র পাহাড়। শীতের মৌসুম আসার এক মাস পূর্ব থেকেই ইট ভাটার মালিকগুলো কাঠখড়ি সংগ্রহ করার প্রতিযোগিতা শুরু করে দেয় ।
ইট ভাটার মালিকগুলো চাহিদা অনুযায়ী কয়লা মজুদ না করে কাঠখড়ি প্রায় সংগ্রহ করে মজুদ করেছেন বলে জানান ইটভাটায় সংশ্লিষ্ট একাধিক ব্যক্তি।
কাঠখড়ির গাড়ীগুলো রাতের আধারে লোকচক্ষুর আড়ালে চলাফেরা করে এমন বিষয়টিও নিশ্চিত করে জানান তারা।
রাণীশংকৈল উপজেলা ভুমি অফিস সুত্রে জানা গেছে উপজেলায় মোট ২২টি ইটভাটা চলমান রয়েছে। ইটভাটা গুলোয় এখনো আগুন দেওয়া হয়নি।
ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০১৩-এ ইটভাটায় ইট পোড়ানোর কাজে জ্বালানি কাঠের ব্যবহার নিষিদ্ধ করে বলা আছে,। আপাতত বলবৎ অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোন ব্যক্তি ইটভাটায় ইট পোড়ানোর কাজে জ্বালানি হিসাবে কোন কাঠ ব্যবহার করিতে পারিবেন না। যদি কোন ব্যক্তি এই ধারা লঙ্ঘন করিয়া ইটভাটায় ইট পোড়ানোর কাজে জ্বালানি কাঠ ব্যবহার করেন,তাহা হইলে তিনি অনধিক তিন বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক তিন লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
সরেজমিনে পৌরশহরের দক্ষিণ সন্ধারই গ্রামে এমআর ব্রিক্স ফিল্ডে দেখা যায়, ইটভাটার যেখানে সেখানে কাঠখড়ির স্তুপ করে রাখা হয়েছে।
আবার কোথাও কোথাও কাঠখড়িগুলো সাজিয়ে গুছিয়ে কোথাও আবার এলোমেলোভাবে রেখে দেওয়া হয়েছে।
কর্মরত কয়েকজন শ্রমিক ভাটায় আগুন দেওয়ার জন্য ইটভাটা প্রস্তুত করার কাজ করছেন।
শ্রমিকদের কাঠখড়ি দিয়ে কি হবে এমন প্রশ্নে তারা বলেন- ইটভাটায় খড়ি জ্বালানো হয় এটা আপনি জানেন না।
এখানে যত কাঠখড়ি আছে সবই ইট পোড়াতে জ্বালানি হিসাবে ব্যবহৃত হবে। আশেপাশে যত কাঠখড়ি দেখছেন সব ইটভাটার।
ভাটার চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে যে খড়িগুলো আছে তা প্রায় এক হাজার মণের অধিক হবে। এছাড়াও ভাটা থেকে কিছুটা দুরে সন্ধারই সাতঘড়িয়া সড়ক ঘেঁষে একটি জমিতে রয়েছে প্রায় দুই হাজার মণের কাছাকাছি কাঠখড়ি এমনটা বলে নিশ্চিত করেন ইটভাটার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শ্রমিক।
একইভাবে উপজেলার প্রায় প্রত্যেকটি ইটভাটায় জ্বালানী হিসাবে ব্যবহৃত হবে কাঠখড়ি।প্রত্যেক ইটভাটায় প্রায় ৭ দফা ইট পোড়ানো হয়। প্রতি দফায় সাড়ে ৩শ থেকে ৪শ মণের কাছাকাছি কাঠখড়ি লাগে। উপজেলার প্রায় ২২টি ভাটায় প্রতি দফায় ৮ হাজার আটশত মণ কাঠখড়ি পোড়াতে হয়। এতে ৭ দফায় প্রায় ৬১ হাজার ৬শত মণ খড়ি পোড়াতে হবে।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে এমআর ব্রিক্স ফিল্ডের তদারকিকারী মুনজুর আলম জানান, কাঠখড়ি কি হবে তা মাহাজান জানেন, কিছু সময় অপেক্ষা করেন মাহাজান চলে আসবেন তার সাথে কথা বলিয়েন।
রাণীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী মৌসুমী আফরিদা’র নিকট কয়লার পরিবর্তে কাঠখড়ি মজুদের বিষয়টি জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ইটভাটায় কাঠখড়ি পোড়ানো হলে সেটার আইন অনুযায়ী যা ব্যবস্থা নেওয়ার তা অবশ্যই নেওয়া হবে।
Leave a Reply