পার্বত্য বান্দরবানের লামায় জায়গা জমির বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় নারীসহ ৭ জনকে গুরুতর আহত করার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে গত ১৫ নভেম্বর (শুক্রবার) লামা থানার সামনে বড় নোনারবিল পাড়া এলাকায় দুপুর ১২টার দিকে। এঘটনায় আহতরা হলেন- মৃত মো. আলতাফ হোসেনের ছেলে মো. সিরাজুল ইসলাম (৭৪), তার স্ত্রী রোকেয়া বেগম (৬৫), ছেলে মো. মিজানুর রহমান (২৮), এনামুল হক (৪৮), নাতী আরিফুল ইসলাম (৩৫) ও তৌহিদুল ইসলাম (২১)। সরেজমিন গেলে ভুক্তভোগী পরিবার জানান, পার্বত্য বান্দরবানের লামা উপজেলার ২৩৯ নং ছাগলখাইয়া মৌজার বি.এস ১৪৬ নং খতিয়ানের ৬৩৮ নং দাগের ৭৪ শতক বসত-ভিটার জায়গার উপর মো. সিরাজুল ইসলামের পরিবার দীর্ঘদিন যাবত ভোগ-দখলে রয়েছেন। কিন্তু, সম্প্রতি জায়গা-জমির মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় লোলুপ দৃষ্টি পড়ে একই এলাকার নাসির উদ্দিন গংদের পরিবারের। বেশ কয়েকবার ভুক্তভোগী মো. সিরাজুল ইসলাম ও তার পরিবারের উপর দফায় দফায় হামলা চালিয়ে দখলে নেওয়ার অপচেষ্টা করে নাসির উদ্দিন গংরা। এনিয়ে, লামা উপজেলা এক্সিকিউটিভ আদালতে নাসির উদ্দিন গংদের বিরুদ্ধে ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৪৫ ধারা মোতাবেক ১৯/২০২৪ইং পিটিশন দায়ের করেন ভুক্তভোগী মো. সিরাজুল ইসলাম। বর্তমানে মামলাটি বিচারাধীন। কিন্তু, নাসির উদ্দিন গংরা আদালতকে অবমাননা করে গায়ের জোরে মো. সিরাজুল ইসলামের বসত-ভিটার জায়গা দখলের উদ্দেশ্যে গত ১৫ নভেম্বর (শুক্রবার) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে হাতে ধারালো দা, লোহার রড, হাতুড়ি, লাঠি ইত্যাদি মারাত্মক দেশীয় অবৈধ অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে, পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে বাড়ি ভিটার উঠানে অনধিকার প্রবেশ করে বাউন্ডারি নির্মাণ কাজ শুরু করে। এসময়, ভুক্তভোগী মো. সিরাজুল ইসলাম ও তার স্ত্রী রোকেয়া বেগমসহ পরিবারের অপরাপর সদস্যরা বাঁধা প্রদান করলে নাসির উদ্দিন গংরা পূর্ব পরিকল্পনা মতো তাদের হাতে থাকা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে বেদড়ক হামলা চালিয়ে নারীসহ ৭জনকে রক্তাক্ত হাড়কাটা জখম করে। পরে, স্থানীয় এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ভুক্তভোগী সিরাজুল ইসলামের পরিবারের ৭ সদস্যকে উদ্ধার করে লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ভুক্তভোগী মো. সিরাজুল ইসলামকে চিকিৎসা দিয়ে ভর্তি রাখা হলেও অপরাপর ৬ জনকে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও কক্সবাজার সদর হাসপাতালে রেফার করা হয়। আহত ৭জনের মধ্যে ভুক্তভোগী সিরাজুল ইসলামের স্ত্রী রোকেয়া বেগমের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। বর্তমানে তিনি কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বে মো. সিরাজুল ইসলামের পরিবারের উপর সংঘবদ্ধ হামলা চালানো অন্যান্যরা হলেন-মৃত নুরুল কবিরের ছেলে জসিম উদ্দিন (৩৫), শাহাব উদ্দিন (২৮) ও কন্যা মনোয়ারা বেগম (৩৭) সহ অজ্ঞাতনামা আরো ৭/৮জন। এবিষয়ে জানতে নাসির উদ্দিনের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সম্ভব হয়নি। এদিকে, এঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবার লামা থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
Leave a Reply