যশোরের শার্শা উপজেলার কায়বা বাইকোলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে ব্যাপক দূর্নীতি ও নিয়োগ বানিজ্যের অভিযোগ উঠেছে সভাপতির বিরুদ্ধে।
বিদ্যালয়ে অফিস সহায়ক, পরিচ্ছন্নতা কর্মী ও আয়া পদে লোক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে বিভিন্ন অংকে লক্ষ লক্ষ টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করেছেন তিনি।
গত ২৬ জুলাই মঙ্গলবার যশোর থেকে প্রকাশিত দৈনিক স্পন্দন পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর থেকে নিয়োগ বাণিজ্যের খেলায় মরিয়া হয়ে ওঠেন বিদ্যালয়ের সভাপতি আশানুর রহমান।
বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর আয়া পদে নিয়োগের জন্য দরখাস্ত করেন পাঁচ কায়বা গ্রামের আক্তারুজ্জামানের স্ত্রী রুমা খাতুন। সভাপতি আশানুর রহমান রুমা খাতুনের স্বামী আক্তারুজ্জামানের কাছে ৫ লাখ টাকায় তার স্ত্রীকে চাকুরি পাইয়ে দিবে বলে চুক্তি করেন। সেই চুক্তি মোতাবেক সভাপতি আশানুর রহমান অগ্রিম ২,৪০,০০০/-(দুই লাখ চল্লিশ হাজার) টাকা আক্তারুজ্জামান নিলেও স্ত্রী রুমা আক্তারের চাকুরি হবেনা বলে সভাপতি জানিয়ে দেয়।
একই ভাবে অন্যান্য পদে চাকুরি দেওয়ার কথা বলে একাধিক লোকের নিকট থেকে লাখ লাখ টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা।
রুমা আক্তারের স্বামী আক্তারুজ্জামান বলেন, আমার স্ত্রীর আয়া পদে চাকুরির জন্য ৫ লাখ টাকা চুক্তিতে অগ্রিম ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা প্রদান করি সভাপতির হাতে। যার প্রমাণ স্বরূপ অডিও ও ভিডিও চিত্র ধারণ করা রয়েছে। এখন তিনি বলছেন তোমার স্ত্রীর চাকুরি হবেনা। এই পদে আমার মেয়েকে চাকুরি দেওয়া হবে। সেই ক্ষেত্রে আমার কাছ থেকে নেওয়া ২ লাখ ৪০ হাজার টাকও তিনি ফিরিয়ে না দিয়ে দৈনিক নানান রকম টালবাহনা করে যাচ্ছেন।
একই ভাবে প্রতারনার শিকার হয়েছেন অফিস সহায়ক পদে চাকুরির জন্য আবেদন করা সোহাগ মিলন। তিনি বাইকোলা গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে। নিয়োগ বানিজ্যের অভিযোগ এনে সোহাগ মিলনের পিতা আব্দুল জলিল বলেন, আমার ছেলেকে অফিস সহায়ক পদে চাকুরি দেওয়ার কথা বলে প্রথমে ১০ লাখ টাকা দাবি করেন সভাপতি।
ছেলের চাকুরির জন্য গরু, চাষের জমি এবং অন্যান্য জিনিসপত্র বিক্রি করে সভাপতিকে ১০ লাখ দিতে গেলে তিনি আমাকে বলেন তোমার ছেলের চাকুরি হবেনা। অন্য একজন ১২ লাখ টাকা দিবে। এ অবস্থায় গরু, চাষের জমি বিক্রি করে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছি। এমন দূর্নিতীবাজ অর্থ আত্মসাৎকারী সভাপতির কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ ও টাকা ফেরত সহ কমিটি থেকে সভাপতিকে অপসারণ করার দাবী জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে কায়বা বাইকোলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি মো: আশানুর রহমানের কাছে নিয়োগ সংক্রান্ত আনিত অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন প্রার্থীদের কাছ থেকে কোনো টাকা নেওয়া হয়নি তারা আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
শার্শা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার চৌধুরী হাফিজুর রহমান জানান, এ বিষয়ে এখনো কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে বিদ্যালয়ের নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়টি আশেপাশে ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় এলাকাবাসীর মধ্যে এক ধরনের চাপা ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ভূক্তভোগীদের সাথে সাধারণ মানুষেরা অর্থ আত্মসাৎ, অর্থ বাণিজ্য ও ঘুষের টাকা ফেরত সহ বিদ্যালয়ের সভাপতি পদ থেকে অপসারণের দাবি করেন সচেতন মহল।
Leave a Reply