কুষ্টিয়ার সুদক্ষ এবং চৌকস জেলা শিক্ষা অফিসার জায়েদুর
রহমানকে তাঁর মূলপদ প্রধান শিক্ষক পদে রাঙ্গামাটি জেলায় বদলি করা হয়েছে।
তিনি ২০১২ সালে সরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি পেয়েছেন। তিনি
জাতীয় বেতন স্কেলের ৫ম গ্রেডে বেতন ভাতা প্রাপ্ত হন। অতি সম্প্রতি তিনি
জাতীয় বেতন স্কেলের ৪র্থ গ্রেড পাবেন। বদলিতে তাঁর বেতন ভাতা কমে নাই বা
পদাবনতি হয় নাই। তবে সুদক্ষ এবং চৌকস জেলা শিক্ষা অফিসার হিসেবে জায়েদুর
রহমান জেলা এবং পার্শ্ববর্তী জেলাসমূহে পরিচিতি পেয়েছেন। তাঁর বদলিতে
কুষ্টিয়া জেলার রাজনীতিবিদ, প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ এবং শিক্ষক সমাজ সহ
সর্বস্তরের মানুষ মর্মাহত হয়েছেন। বদলিকৃত জেলা শিক্ষা অফিসার জায়েদুর
রহমান ২০১৭ সালের জুন মাস হতে ২০২২ সালের জুন মাস পর্যন্ত পুরো পাঁচ বছর
দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি অত্যন্ত সততার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং
জেলা শিক্ষা অফিস, কুষ্টিয়া কে দুর্নীতি মুক্ত অফিসে পরিণত করেছেন। নাম
প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক প্রধান শিক্ষক বলেন, অনৈতিক সুবিধা না পেয়ে হাতে
গোনা কয়েকজন প্রধান শিক্ষক জেলা শিক্ষা অফিসার জায়েদুর রহমানের বিরুদ্ধে
ষড়যন্ত্র শুরু করেন। তাঁরা আরও বলেন, তথ্য প্রযুক্তির এ যুগে দুর্নীতি
করলে তিনি জেলা শিক্ষা অফিসার হিসেবে একই কর্মস্থলে পাঁচ বছর দায়িত্ব
পালন করতে পারতেন না। তাঁর দুর্নীতি করার প্রয়োজন পড়ে না কারণ তাঁর
স্ত্রীও সরকারি চাকুরী করেন।
জায়েদুর রহমান ষড়যন্ত্রের শিকার হলেন যেভাবে ঃ
কুষ্টিয়া জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ম্যানেজিং কমিটি গঠণকে
কেন্দ্র করে কয়েকটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শারীরিক ভাবে লাঞ্চিত
হয়েছেন। এ কারণে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার প্রতিষ্ঠান প্রধানগণ গত ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২২ তারিখে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক
জননেতা মাহবুবউল আলম হানিফ এমপির সঙ্গে উক্ত বিষয়ে তাঁকে অবগত করেন এবং এ
সমস্যা সমাধানের জন্য অনুরোধ করেন। ঐ সময়ে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হাউজিং
এষ্টেট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাইদুর রহমান
প্রতিষ্ঠান প্রধানদের তড়িঘড়ি করে সাদা কাগজে হাজিরা/ উপস্থিতির স্বাক্ষর
গ্রহণ করেন। তিনি প্রতিষ্ঠান প্রধানদের উপস্থিতি পত্রের সাদা কাগজের উপরে
ইচ্ছেমত ভাষা প্রয়োগ করে এবং উপস্থিতি পত্র ব্যবহার করে জেলা শিক্ষা
অফিসার, কুষ্টিয়া’র বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক ব্ল্যাকমেইলিং পত্র হিসেবে অসৎ
উদ্দেশ্যে ব্যবহার করেছে। অর্থাৎ ৪৭ জন অধ্যক্ষ/প্রধান শিক্ষক/সহকারী
প্রধান শিক্ষক/সহকারী শিক্ষক স্বাক্ষর করার সময় উপরে কোন লেখা ছিল না। এ
সুযোগ গ্রহণ করে হাউজিং এষ্টেট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক
সাইদুর রহমান জেলা শিক্ষা অফিসার, কুষ্টিয়া’র বিরুদ্ধে ইচ্ছেমত ভাষা
ব্যবহার করে মহাপরিচালক, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর, বাংলাদেশ,
ঢাকা বরাবর দাখিল করেছেন। অর্থাৎ প্রধান শিক্ষকগণ জেলা শিক্ষা অফিসারের
বিরুদ্ধে অভিযোগ করার জন্য স্বাক্ষর করেছিলেন না। এটা যে ব্ল্যাক মেইলিং
পত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে সেই মর্মে ২৭ জন অধ্যক্ষ/ প্রধান শিক্ষক/
সহকারী প্রধান শিক্ষকদের লিখিত বক্তব্যের প্রমাণ পত্র প্রতিবেদকের হাতে
রয়েছে। ব্ল্যাক মেইলিং পত্র ব্যবহার করে অভিযোগ পত্র দাখিল করে জেলা
শিক্ষা অফিসার জায়েদুর রহমানকে শুধু বদলি করেই ক্ষান্ত হয়নি বরং তাঁর
বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। এটা অত্যন্ত দুঃখ জনক। জেলা
শিক্ষা অফিসার জায়েদুর রহমান এর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে শুধুমাত্র তাঁর
মানহানী করা হয়নি বরং কুষ্টিয়া জেলার শিক্ষা পরিবারের মানহানি করা হয়েছে।
একজন প্রধান শিক্ষকের এ ধরণের কার্যকলাপের প্রতি ঘৃণা জানিয়েছেন
কুষ্টিয়ার সর্বস্তরের মানুষ।
উল্লেখ্য যে, কুষ্টিয়ার পদ্মা প্রিন্টার্সে নকল গাইড ছাপানোর অভিযোগে
র্যাবের হাতে আটক হয়েছিলো এই প্রধান শিক্ষক সাইদুর রহমান। মুক্তিযুদ্ধের
চেতনা বিরোধীদের নিয়ে অনৈতিক সুবিধা না পেয়ে এরকম ন্যাক্কারজনক ঘটনা
ঘটিয়েছে। সাইদুর রহমান হাউজিং এষ্টেট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের
শিক্ষার্থীদের গাইড কিনতে বাধ্য করে। ক্লাস না নিয়ে এবং স্কুল
ব্যবস্থাপনার দিকে খেয়াল না রেখে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেই বেরিয়ে পড়ে
ব্যক্তিগত ব্যবসা বানিজ্যে। এ বিষয়ে জেলা শিক্ষা অফিসার বারবার সতর্ক
করার কারণে তার উপরে ক্ষিপ্ত হয়ে সে সাদা কাগজে স্বাক্ষরের পাতাটি মওকা
বুঝে অসৎ উদ্দেশ্যে ব্যবহার করেছে। সততা ও নিষ্ঠার সাথে সরকারের যে সকল
কর্মকর্তা এই জেলায় নিরলসভাবে কাজ করছেন তাদের বুকে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে
এই ঘটনায়। কুষ্টিয়া জেলার পিছিয়েপড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোও জেলা শিক্ষা
অফিসার জায়েদুর রহমানের সার্বিক সহযোগিতায় বর্তমানে অনেকদুর এগিয়েছে। একই
ভাবে জেলার শিক্ষার অগ্রগতির বিষয়ে শতভাগ নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন
করেছেন তিনি। যা কুষ্টিয়ার উন্নয়নের রূপকার জননেতা মাহবুবউল আলম হানিফ
এমপিসহ জেলার শীর্ষ কর্মকর্তাদের নজরে রয়েছে।
Leave a Reply