গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ.কিউ.এম. মাহবুব বলেছেন ” এখানকার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সুপেয় পানির যে দাবি,সেটা বরং দাবি নই,এটা পাওয়া তাদের অধিকার। ”
বশেমুরবিপ্রবি প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক কে.এম. ইয়ামিনুল হাসান আলিফ’কে দেয়া এক একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এসব বলেন।
তিনি আরো বলেন “আমি অনেক কাজ করতে পারতাম। কাজের উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছি। একেবারে হারিয়ে ফেলিছি এ কথা বলবো না। কারণ আমি অনেকগুলি কাজের অর্ডার দিয়েছি। এটা করো, ওটা করো এবং একটা ওয়ার্ক প্ল্যান তৈরি করো। ওই যে বিল্ডিং টা হচ্ছে ওটাও কিন্তু ওয়ার্ক প্ল্যানের। আমি এসে ওয়ার্ক প্ল্যান টা চালু করি। আর ওয়ার্ক প্ল্যান টা হলো জুন মাসে কাজ হ্যান্ড ওভার করলে কোন মাসে কতটুকু কাজ হলো তার হিসাব থাকবে। ওয়ার্ক প্ল্যান এবং মনিটরিং এই দুইটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ যেকোনো কাজের জন্য। সে একাডেমিক ফিল্ডে হোক, ভৌত পরিবেশ হোক, বিল্ডিং তৈরির কাজ হোক। এরা ওয়ার্ক প্ল্যান কি,তা বুঝে না। আসলে কেউ বুঝতে চায় না। ওরা বুঝতে পারতো যে স্যার কোন জায়গায় হাত দিছে। ওয়ার্ক প্ল্যান দিতে গেলে এর একটা নিয়ম আছে। আমি প্রথমেই পিডি দিয়ে কাজ করার জন্য ঠিকাদারকে ডাকলাম। পিডির কাজ তো মনিটরিং করা। কিন্তু এরা ওয়ার্ক প্ল্যান মতো কাজ করছে না। সেটা কেন হচ্ছে না সেটাও দেখলাম। যেমন আমাদের কিছু গাফিলতি আছে। এখান থেকে টাকা দেওয়া হয় নাই।আমরা মন্ত্রণালয় থেকে টাকা পাইনি এটা জানতে দুই আড়াই মাস লাগছে। তারপর আমি যখন ইন্টারফেয়ার শুরু করলাম, তখন টাকার সোর্স শুরু হলো সেটা সময় লাগলো। ওদের টাকা ছাড়তে দেরি হয়েছে এটা একটা গাফিলতি আছে আর এখানকার কাজ প্রগ্রেস খুবই স্লো প্রকৃতির এবং সেই ওয়ার্ক প্ল্যান মতো হয় না। এতে আমার প্রশাসনের যে সেকশন দায়বদ্ধ আছে, তাতে আমি তাদের দায়বদ্ধতা দেখছি না। এতে আমার উদ্ভুদ্ধতায় ভাটা পড়ে গেছিলো। কিন্তু আমি হাল ছেড়ে দিই নি।”
ছাত্রদের সুপেয় পানির অভাব এবং মধুমতী নদী থেকে পানি আনতে হয় কিংবা পানি কিনে খেতে হয়,তবুও এতদিনে পানির সমস্যার সমাধান না হওয়ায় ক্ষোভ ঝেড়ে বশেমুরবিপ্রবি উপাচার্য বলেন ” যে জিনিসটা ছাত্রদের একটা বড় দাবি, দাবি বলা যাবে না। দাবি বলা ঠিক না। শিক্ষার্থীরা সুপেয় পানি চায়। এটা দাবি মানে,এটা একটা হিউম্যান রাইটস। একটা ছেলে মেয়ে যে নিরাপদ পানি চায় এটা আমি দাবি মনে করি না, এটা আরও অনেক আগে হওয়া উচিত ছিলো। এটা আমি তৎক্ষনাৎ শুনছি। কিন্তু এখানকার যারা এই সংশ্লিষ্ট প্রশাসন আছে তারা এ ব্যাপারে কোনো গঠনমূলক চিন্তা করে না। তারপর সেদিকে আমি এগিয়ে গেছি। মেয়রের শরণাপন্ন হয়ছি। আমার ফান্ডে টাকা ছিলো বহু আগে সে টাকাটা ছেলেমেয়েদের পানির জন্য খরচ করা হয়নি। এখানকার মধুমতির পানি সাপ্লাই দিয়েছে, যা খাওয়ার উপযুক্ত না।আর ছেলেমেয়েরা যে পানি খায়,সেটা কিনে খায়।পানি শিক্ষার্থীরা কিনে খাবে,সেটা তো হতে পারে না। সেটার সমাধানে আমরা যাচ্ছি। আর হইতো কয়েকমাস সময় লাগবে।”
হলের বেহাল অবস্থার কথা উল্লেখ করে বশেমুরবিপ্রবি উপাচার্য বলেন ” হল গুলোর পরিবেশ আরও খারাপ। হল গুলোর ভিতরে যে পরিবেশ সেটি আজ ১০ বছর হয়ে গেছে. এই বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে সে ১০ বছরের মধ্যে হল গুলোর কোনো রিপেয়ারিং কাজ হয় নাই। যদি ভিতরে যায় আমি টয়লেটে ঢুকতে সাহস করি নাই। এখানে কোনো প্রোভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটি নাই। অর্থাৎ প্রত্যেক প্রভোস্টরা বসে একটা কমিটি গঠন করতে হবে। এই কমিটির মাসে অন্তত একটা মিটিং করতে হবে,নইলে পরিবেশ ঠিক হবে না।”
Leave a Reply