পটুয়াখালীর মুরাদিয়া ইউপি নির্বাচনে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মোছাঃ আকলিমা খাতুন তাঁর নির্বাচনী প্রচারণার অংশ হিসেবে সম্প্রতি ভোটারের ঘরে ঘরে একটি করে মৌসুমী রসালো ফল ‘আনারস’ পৌছে দিতে ট্রাকভর্তি আনারস আমদানী করে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছন।
গত বুধবার (১৬ জুন) দুপুর ২টার দিকে উপজেলার মুরাদিয়া বোর্ড অফিস বাজারস্থ তার নিজস্ব বাসভবনের সামনে ট্রাক থেকে আনারসের চালান আনলোড হয়। আনলোডকৃত আনারস থেকে ৩/৪টি অটোবাইক বোঝাই করে দক্ষিন মুরাদিয়া, চরগরবদি ফেরীঘাটসহ বিভিন্ন এলাকায় পাঠানো হয়েছে। বাকী আনারস ওই গুদামে রাখা হয়েছে। স্থানীয়দের ধারণা, আমদানীকৃত আনারস স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আকলিমা বেগমের পক্ষে তার স্বামী মেহেদী হাসান মিজান এনে অটোবাইকে করে বিভিন্ন ওয়ার্ডে তাদের কর্মীদের দ্বারা ভোটারের বাড়ি বাড়ি পৌছে দেয়া হবে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে প্রতিদ্বন্দী অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে মোবাইল ফোনে থানা পুলিশ, সাংবাদিকসহ স্থানীয় প্রশাসনকে অবহিত করেন। এদিকে আনারসের খবর চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লে ওই ইউনিয়নের ভোটারসহ সাধারণ মানুষের মাঝে ব্যপক আলোচনা সমালোচনার ঝড় ওঠে।
খবর পেয়ে দুমকী থানার দু’এসআই সঞ্জীব ও মাসুদ ঘটনাস্থলে গেলেও রহস্যজনক কারনে তারা ফেরত চলে যায়। অভিযোগ ওঠেছে, পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন ম্যানেজ করেই নির্বাচনী আচরণবিধি অগ্রাহ্য করে সাধারণ ভোটারদের সমর্থন আদায়ের অভিনব কৌশল অবলম্বন করেছেন আকলিমা খাতুন।
এ বিষয়ে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আকলিমা খাতুন বলেন, এটি আমার নির্বাচনী প্রচারণার সাথে কোনভাবেই সম্পৃক্ত নয়। ব্যবসায়িরা যে কেউ আনারস আনতে পারে। আমার বাসার সামনে বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ির গুদাম আছে। সেই গুদামে কাল কিছু আনারসের চালান এসেছে বলে শুনেছি। নির্বাচনে প্রতিপক্ষের লোকজন এ সুযোগটি কাজে লাগিয়ে আমার ইমেজ নষ্ট করতেই এমন বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।
স্বতন্ত্র প্রার্থী আকলিমার স্বামী মেহেদী হাসান বলেন, কর্মীদের খাওয়ানোর জন্য কিছু আনারস আনতে বলছিলাম। এখন যেহেতু এ নিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে তাই ওই ব্যবসায়িকে বিক্রি করে দিতে বলেছি। ভোটারদের বাড়ি বাড়ি দেয়ার অভিযোগ সঠিক নয়। আনারসের চালান তার নামে এসেছে এমন অভিযোগেরও কোন ভিত্তি নেই।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, আনারস বোঝাই ট্রাকটি ওই স্থানে রেখে চালক আকলিমা বেগমের স্বামী, সাবেক ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতা মেহেদী হাসান মিজানের লোকজনের সাথে কথা বলে ওই দোকানে ওঠায়। পুলিশ এসে দেখেও না দেখার ভান করে মোবাইলে কথা বলতে বলতে অন্য দিকে চলে গেছেন।
দুমকী থানার এসআই সঞ্জীব মোবাইল ফোনে ঘটনাস্থল পরিদর্শণের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, খবর পেয়ে গিয়েছিলাম কিন্ত ওই আনারসের চেয়ারম্যান প্রার্থী আকলিমা খাতুনের এমন কোন প্রমান না পাওয়ায় ফেরত চলে আসতে হয়েছে। ম্যানেজের প্রশ্ন অবান্তর।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ আবদুল্লাহ সাদীদ বলেন, গুদামে বা কোন দোকানের আনারস কোন চেয়ারম্যান প্রার্থীর এমন অভিযোগ আমলে নেয়া যায় না। নির্বাচনী প্রচারণা কালে ভোটারদের মাঝে বিতরণ করলে সেটি আচরণ বিধির লঙ্ঘণ। ভোটারদের মাঝে বিতরণের অভিযোগ পেলে অবশ্যই মোবাইল কোর্টের অভিযান পরিচালনা করা হবে।
Leave a Reply