মোঘল সুবেদার শায়েস্তা খাঁ’র আমলে নাকি এক টাকার বিনিময়ে পাওয়া যেতো ৮ মণ চাল। সে কয়েকশত বছর আগের কথা। এখন টাকায় এক পোয়া চালের কথাও ভাবা সম্ভব নয়। কিন্তু এক টাকার বিনিময়ে এখনো মিলছে খাবার। প্রতি রোজায় অসহায় মানুষকে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন “ছবিঘর” এক টাকার বিনিময়ে পৌঁছে দিচ্ছে ইফতার। ৩ এপ্রিল শুরু হয়েছে পবিত্র রমজান মাস। পবিত্র সিয়াম পালনের পর এক দিনে যেমন অনেকে বাহারি রকমের ইফতার খান তেমনই অনেক অসহায় মানুষ এক টুকরো খেজুর দিয়েই সেরে ফেলেন সারাদিন শেষে সাধনার ইফতার।
তাই ছবিঘর সংগঠন দিনে প্রায় শ’ খানেক মানুষের জন্য ব্যবস্থা করছে এক টাকার বিনিময়ে খাবার। অসহায় মানুষের কাছে এক টাকার বিনিময়ে বিক্রি করা হচ্ছে এই খাবার।৩ এপ্রিল প্রথম রোজায় বিকেল ৫ টায় সাভার বাজার রোড থেকে শুরু করা হয় এবারের এক টাকার দোকান। যা পুরো রমজান মাসব্যাপী চলবে।
আজ শুক্রবার (৮ এপ্রিল) এক টাকা নেওয়ার ব্যপারে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা প্রিন্স ঘোষ বলেন, “মানুষ যাতে মনে না করে যে তারা বিনামূল্যে নিচ্ছে বা আমরা তাদের দান করছি ;তাই তাদের কাছে পণ্য হিসেবে নামেমাত্র এক টাকা মূল্য রেখে এই খাবার বিক্রি করা হচ্ছে। কোন লজ্জা বা ইতস্ততা বোধ না রেখে সকলে যাতে এই খাবার নিতে পারে তাই ব্যবস্থা করা হয়েছে।’
ছবিঘর সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রাতুল ঘোষ বলেন ‘আমরা চেষ্টা করবো পুরো রমজান মাস জুড়ে সাভারের বিভিন্ন এলাকায় আমাদের এই কার্যক্রম পরিচালনা করার।’
উক্ত সংগঠনের উপদেষ্টা ও স্বাধীন বাংলা বেতারের কন্ঠ সৈনিক এ উদ্যোগকে স্বাগত জানান এবং বলেন যাতে এই কার্যক্রম সারা মাস ব্যাপি রাখা হয়।
‘এক টাকার দোকান’ থেকে খাবার নেওয়া ফারুক হাসান বলেন “আমি অসহায় মানুষ, ভ্যান চালাই। প্রথম রোজায় রোজা রেখে বেশি খ্যাপ দিতে পারি নাই। কিন্তু দিন শেষে এক টাকায় ইফতার পেয়ে খুব ভাল লাগতাছে।”
খাবার নেওয়া পথচারী শ্যামলী আক্তার বলেন “ভিক্ষা করে খাই। এখানে আইসা দেখি বাজানেরা এক টাকায় খাওন বিক্রি করতাছে; এক টাকায় তো কিছুই পাওন যায় না কিন্তু এইখানে এক টাকায় খাওন দেইখা কিনা নিলাম। অনেকের জন্যই উপকার হইবো।”
উল্ল্যেখ্য,স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘ছবিঘর’ ‘২০১৮ সাল থেকে ‘এক টাকার দোকান এর মাধ্যমে প্রতি রমজানে অসহায় মানুষের কাছে খাবার পৌঁছে দেওয়া হয়।
২০২০ এর লক ডাউন ও ২০২১ এর লক ডাউনের সময়ে প্রায় ৩০০০ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয় খাবার, বাচ্চাদের দুধ, জামা কাপড়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীর মাধ্যমে ২০২১ সালে যুদ্ধ বিধস্থ দেশ ফিলিস্তিনেও পাঠানো হয় সাহায্য।
Leave a Reply