পৌরশহরের ব্যস্ততম ও গুরুত্বপূর্ণ বেশির ভাগ সড়কের ফুটপাত এখন ফল ও বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের দখলে। ফুটপাত দখল করে বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা মালামাল নিয়ে বেচাকেনা করছেন। টি-স্টল থেকে শুরু করে ভাজাপোড়া খাবারের দোকানও গড়ে তোলা হয়েছে সেখানে। এ ছাড়া কিছু ফুটপাত ছাপিয়ে সড়কের ওপরও ব্যবসা খুলে বসেছেন তাঁরা। এভাবে ফুটপাত দখল হওয়ায় পথচারীরা সড়কের ওপর দিয়ে চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছে। এর ফলে ওই সব সড়কে ছোটখাটো দুর্ঘটনার শিকার হওয়া ছাড়াও প্রতিনিয়ত যানজট পোহাতে হচ্ছে পৌরবাসীকে। এ কারণে ট্রাফিকব্যবস্থা ভেঙে পড়াসহ নগরীর সৌন্দর্যও হারাতে বসেছে। চকরিয়া পৌর প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের উদাসীনতায় দখলবাজরা বেপরোয়া বলে অভিযোগ উঠেছে। গত বুধ ও বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, পৌরশহরের জনতা মার্কেট রোড, সরকারী বালক উচ্চ বিদ্যালয় রোড, নিউ মার্কেট রোড, কাঁচা বাজার বিমান বন্দর রোড, হাসপাতাল সড়ক ও থানার রাস্তা মাথা আরাকান সড়ক পর্যন্ত সড়কের দুই পাশে ফুটপাত দখল করে বিভিন্ন ধরনের মালামাল নিয়ে ব্যবসা খুলে বসা হয়েছে। পৌরশহরের এসব সড়ক অত্যন্ত ব্যস্ততম বাণিজ্যিক এলাকা ও গুরুত্বপূর্ণ সড়ক হিসেবে বিবেচিত। এই সড়কগুলোয় প্রতিদিন শত শত বিভিন্ন প্রকার যানবাহন ও হাজারো পথচারী চলাচল করে। ফুটপাতগুলো দখল হয়ে যাওয়ায় পথচারীরা সড়কের ওপর দিয়ে চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছে। এর ফলে প্রায় প্রতিদিন ছোটখাটো দুর্ঘটনাসহ যানজটে নাকাল হচ্ছে পৌরবাসী। পৌরশহরের থানা রাস্তার মাথা থেকে জনতা মার্কেট পর্যন্ত রোডের দুই পাশের সড়কের ফুটপাত ও ফুটপাতসংলগ্ন সড়কের ওপর কাপড়, জুতা-স্যান্ডেল, বিভিন্ন ধরনের তৈজসপত্র, ফলের দোকান, মনোহারি সামগ্রী, টি-স্টল, পুরি-শিঙাড়া, ঘড়ি মেরামত, মাছ-তরকারিসহ বিভিন্ন ধরনের মালামাল নিয়ে দিব্যি ব্যবসা করে চলেছে। পৌরশহরের এতগুলো ব্যস্ততম সড়কের ফুটপাত ও সড়কের অংশবিশেষ দখল হওয়ায় যানবাহন ও পথচারী চলাচলে মারাত্মক বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। এ সময় ফুটপাতের ব্যবসায়ী বেশ কয়েকজনের সঙ্গে আলাপ করলে তাঁরা জানান, ফুটপাত ব্যবসায়ীরা প্রতিদিন কিছু স্থানীয় সরকার দলীয় নেতাদের একটি নির্দিষ্ট অঙ্কের অর্থ দিয়ে ব্যবসা করার সুযোগ পাচ্ছেন। পুলিশ বা অন্য কোনো ব্যক্তি তাঁদের কাছ থেকে টাকা আদায় করে না। এ ছাড়াও ফুটপাতের ব্যবসা নিয়ে একটি সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। এদিকে, এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ফল ব্যবসায়ী সমিতির নেতার সাথে কথা বলে জানা যায়, তারা পৌর কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করেই তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছে। তারা দাম্ভিকতার সাথে আরো বলেন, পৌর কর্তৃপক্ষকে টাকা না দিলে একদিনও ফুটপাত দখল করে ব্যবসা করতে দিবে না। পৌরশহরের ফুটপাত অবৈধভাবে দখল করে বিভিন্ন দোকানপাট গড়ে তোলার বিষয়ে চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শিগগিরই অবৈধভাবে ফুটপাত দখলকারীদের উচ্ছেদ করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। প্রয়োজন উপজেলা প্রশাসনের সাথে কথা বলে অতিশীঘ্রই মোবাইল পরিচালনা করা হবে। আর ফল ব্যবসায়ী সমিতির নেতারা পৌর কর্তৃপক্ষকে যে ম্যানেজ করার কথাটি বলেছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। ফুটপাত ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে ফুটপাত দখলে রাখতে দিয়েছি এমন প্রমাণ যদি কেউ দিতে পারে তাহলে আমি নিজে থেকেই সেচ্ছায় মেয়র পদ থেকে পদত্যাগ করবো। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেপি দেওয়ান বলেন, পৌরসভার মেয়র যদি আমাদের সহযোগিতা চায় তাহলে আমরা সহযোগিতা করবো। তবে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা কোন স্থায়ী সমাধান নয়। কী করলে স্থায়ীভাবে এটার সমাধান করা যায় তা খুঁজে বের করতে হবে। তবে মেয়র সাহেব সহযোগিতা চাইলে আমরা মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে পারি।
Leave a Reply