কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলা কৈয়ারবিল ইউনিয়নের মালয়েশিয়া প্রবাসী বাবুলের ছোট ছেলে হাফেজ সাজ্জাদুল ইসলাম ফাহিম (১৪) কুরআন মুখস্থ তেলাওয়াত শুনালেন মাত্র ১৩ ঘন্টায়। ১৫ পারা করে ৪ বার এবং ২বার পুরো কুরআন ৩০পারা হিফজ শুনালো হাফেজ ফাহিম। মাদ্রাসা সূত্রে জানা যায়, হাফেজ ফাহিম ‘ভরন্যারচর তা’লীমুল ইসলাম মাদ্রাসা হিফজ বিভাগের কৃতি শিক্ষার্থী। তার পরিবারে ৪জন ভাইবোনের মধ্যে ফাহিম সবার ছোট। তার বাড়ি মাদ্রাসা সংলগ্ন ভরন্যারচর গ্রামেই অবস্থিত। এদিকে মাত্র ৮ মাস ১৫ দিনে হিফজ সম্পন্ন করলেন এই মাদ্রাসার হিফজ শাখার ছাত্র হাফেজ মুহাম্মদ আবিদ(১১)।সে মাদরাসার নূরানী শাখা তৃতীয় শ্রেণীর কেন্দ্রীয় সনদ পরীক্ষা-২০ইং সারা বাংলাদেশের মেধা তালিকা ২০ এ ১৮তম স্থান অর্জন করে অনন্য প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছিল। ছাত্রের এ অনন্য দক্ষতায় অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে হাফেজ সাজ্জাদ হোসেন ফাহিমের শিক্ষক হাফেজ মাওলানা আব্দুস সালাম বলেন, নামাজের সময়টুকু আর খাবারের সংক্ষিপ্ত বিরতি ছাড়া (১১ ডিসেম্বর) ভোর ৪টা থেকে রাত ১১টা ৩০মিনিট পর্যন্ত এক নাগাড়ে প্রায়১৩ঘন্টায় পূর্ণ কুরআনুল কারিম তেলাওয়াত (স’বিনা) শুনালো হাফেজ ফাহিম। তিনি বলেন, তাদের শর্ত দেওয়া হয়েছিল, খতম শুরু করলে শেষ হবার আগ পর্যন্ত কুরআন শরীফ আর দেখতে পারবে না। আর আমি মনে মনে নিজেকে শর্ত দিয়েছিলাম, নিজের হিফজ বা মুখস্তের উপর ভিত্তি নয় বরং হারফান দেখে দেখে তার পূর্ণ কুরআন শরিফ শুনবো। আলহামদুলিল্লাহ সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি। তিনি আরো বলেন, খতম শুরুর আগে ফাহিমকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, নির্ভুল শুনাতে পারবা তো? পূর্ণ আত্মবিশ্বাস ও সাহসের সাথে সে বলছিল ‘জ্বি ইনশাআল্লাহ্’। মনে মনে ধরে নিয়েছিলাম, প্রতি দশে একটা লুকমা ক্ষমাযোগ্য। হাফেজ সাজ্জাদ হোসেন ফাহিমের শিক্ষক উচ্ছ্বসিত হয়ে বলেন, ফাহিম আমার জীবনে প্রথম ছাত্র, যে পূর্ণ কুরআন শরীফ বিনাভুলে আমাকে শুনিয়েছে। দুনিয়া-আখেরাতের সমস্ত কল্যাণের দু’আ রইলো প্রিয় ফাহিমের জন্য। ফুলে ফলে ভরে উঠুক তার জীবন নদী। হাফেজ ফাহিমের’মা’ জানান, আমাদের ছোট ছেলে ফাহিম ছোটবেলা থেকেই নম্র স্বভাবের ছিলো।ছেলে কুরআনের হাফেজ হওয়ায় আমরা অনেক খুশি। চকরিয়া ভিত্তিক’বহদ্দারকাটা জমিয়তুল উলামা, কর্তৃক মেধাবৃত্তি পরীক্ষা-২২ইং প্রথম স্থান অর্জন এবং আল কোরআন সংগঠন কর্তৃক কোরআনে পাকে প্রতিযোগীতায়-২২ইং তে প্রায় সাড়ে চারশত প্রতিযোগীর মধ্য ৫ম বারের মতো প্রথম স্থান সহ প্রতিষ্ঠান ভিত্তিক ফলাফলে প্রথম স্থান অধিকার করে অসাধারণ সফলতা বয়ে আনেন কৃতি শিক্ষার্থীবৃন্দ। মাদ্রাসা পরিচালক মাওলানা হাবিবুল্লাহ্ মিসবাহ বলেন, হিফজখানার ছাত্র ফাহিম আমাদের প্রথম ছাত্র। পুরো কোরআন এভাবে আয়ত্ব করে পেরেছে, তাই আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করছি। একি সাথে আমাদের আরেক ছাত্র হাফেজ আবিদ(১১) ও খুব অল্প সময়ে কুরআন হিফজ করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। শিক্ষকবৃন্দদের অক্লান্ত পরিশ্রম আর শিক্ষার্থীদের মেহনতের কারণেই এই সফলতা এসেছে। আমাদের এই সফলতা অব্যাহত রাখতে দেশবাসী সহ সকলের দোয়া ও সহযোগীতা কামনা করছি।
Leave a Reply