চকরিয়ার বরইতলী ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড সিকদারপাড়া ছড়ারকুল দক্ষিণ বরইতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় লাগোয়া ফসলি জমি থেকে আইন অমান্য করে প্রকাশ্য দিবালোকে ২টি স্কেবটর দিয়ে চলছে মাটি কাটার মহোৎসব। এতে এলাকার ফসলি জমির পরিমাণ কমে জাতীয় ফসল উৎপাদনে ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে এ এলাকার কৃষকরা। এছাড়াও স্কুল ভবন লাগোয়া জমি থেকে গভীর করে মাটি কর্তনের কারণে আসন্ন বর্ষা মৌসুমে স্কুল ভবনটি ধসে গিয়ে বড় ধরনের দূর্ঘটনার শঙ্কা প্রকাশ করছেন স্থানীয়রা। এসময় স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা যায়, অনেকটা জোর জুলুম করেই কেটে নেয়া হচ্ছে স্কুল ভবন লাগোয়া ফসলি জমির এসব মাটি। ফলে কমছে ফসল আর বেকার হচ্ছে কৃষক। পরিবেশও পড়ছে হুমকির মুখে।উপজেলার বরইতলী ইউনিয়নের সিকদারপাড়া ছড়ারকুল এলাকায় এ পর্যন্ত প্রায় ২শত শতক ফসলি জমির মাটি কেটে নেয়া হচ্ছে ইটভাটাসহ বিভিন্ন জলাশয় ভরাটের জন্য। এমনকি, এখনও চলেছে মাটি কাটার এ মহোৎসব। ফলে ব্যাহত হচ্ছে কৃষি পন্য উৎপাদন ক্ষমতা। চকরিয়ার ওই এলাকাটিতে প্রচুর কৃষি জমি রয়েছে। প্রতি বছর ফসলও হয় ভাল। এ থেকে কৃষকের আয় রোজগারও ছিল ভাল। কিন্তু গত কয়েক বছর যাবত সাইফুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তির নেতৃত্বে একটি প্রভাবশালি চক্র কৃষকদের বিভিন্নভাবে ভয়-ভীতি প্রদর্শন, ওয়ারিশ পাওনা ও বিভিন্ন লোভ-লালসা দেখিয়ে সামান্য মাটির কথা বলে জমিতে মাটি কাটতে শুরু করে। কিন্তু একবার জমিতে মাটি কাটা শুর করতে পারলেই তাদের আর ঠেকায় কে! পুরো জমিটি তাদের দখলে চলে যায়। তারা মাটি কাটার মেশিন স্কেবটর দিয়ে পুরো জমি এমন গভীরভাবে কাটে যে, তাতে পাশ্ববর্তী জমির মাটিও কয়েক ঘন্টার মধ্যে ভেঙ্গে পরতে শুরু করে। তখন পাশ্ববর্তী জমি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় ওই জমির মালিকও তখন তার জমি ওই ভূমিদস্যুদের কাছে চাপে পরে স্বল্পমূল্যে জমিটির মাটি বিক্রি করতে বাধ্য হয়। এমনকি ঐ মাটি ইট ভাটায় নেয়ার কোন রাস্তা না থাকায় সাইফুল বাহিনী পার্শ্ববর্তী ফসলী জমির উপর দিয়ে জোর করে ট্রাক ভর্তি মাটি নিয়ে যায়। এতে এ সকল জমির ফসলও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ বছরসহ গত কয়েক বছরে এভাবে মাটি কাটায় ওই এলাকার শত শত বিঘা জমি এখন খালে (প্রায় ১০/১৫ ফুট গভীর) পরিণত হয়েছে। ভূমি দস্যু এই চক্রটি এতই প্রভাবশালী যে, তাদের ভয়ে কোন জমির মালিক কিছু বলতে সাহস পায়না। অথচ আইনের ধারা ৫ এর ১ উপধারা অনুযায়ী এসব অপরাধীর শাস্তি হচ্ছে অনধিক দুই বছরের কারাদন্ড বা দুই লক্ষ টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডেদন্ডিত হবেন। অন্যদিকে সাইফুলের মাটি কাটার জন্য স্কেবটরের যোগান দিয়ে থাকেন কামরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি। তার মালিকানাধীন ৪-৫টি স্কেভটর আছে বলে জানা গেছে। এছাড়াও তিনি চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ল্যাব সহকারী হিসেবে আছেন বলে জানা যায়। এদিকে মাটি কাটার ব্যাপারে সাইফুল ইসলাম ও কামরুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তারা জানান, খতিয়ানী জমির উপরি ভাগের মাটির অংশ টাকা দিয়ে কিনে তারা স্কেবটর দিয়ে কেটে বিক্রি করছে। এখানে কারো অনুমতি বা কাউকে অবগত করার প্রয়োজন নেই। অপরদিকে, এবিষয়ে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেপি দেওয়ানের কাছে জানতে চাইলে তিনি মাটি কাটার ব্যাপারে অবগত ছিলেন না বলে জানান এবং এ বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা নিবেন বলে জানিয়েছেন।
Leave a Reply