চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের চুনতি রেঞ্জের আওতাধীন হারবাং বনবিটের অধীনে সরকারি আগর বাগান ও বনভূমি দখলের উদ্দেশ্যে আগর বাগান ধ্বংস করে বসতবাড়ি নির্মাণ ও কলাগাছ রোপন করেছেন খোদ উপকারভোগীদের মধ্যে জয়নাল আবেদীন নামের এক ব্যক্তি। জানা যায়, ২০০২/২০০৩ অর্থ বছরে সরকারের পক্ষে চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তার মাধ্যমে আগর বাগান সৃজনের লক্ষ্যে হারবাং এর ১৭ জন উপকারভোগীর নামে ১৬.৯২ (ষোল দশমিক বিরানব্বই) হেক্টর বনভূমি চুক্তিপত্র সম্পাদন করা হয়। আর এ চুক্তিপত্রে ছিলো বেশকিছু শর্তাবলীও। তৎমধ্যে অন্যতম শর্ত হলো- আগর বাগান সৃজিত সরকারি বনভূমি’র সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে এবং আগর বাগান দখল করে যেকোন ধরনের বসতবাড়ি নির্মাণ বা কলাগাছ রোপন করা যাবে না। কিন্তু, রক্ষণাবেক্ষণের অভাব, গাছ চুরি, আগর বাগানের ভূমি দখল করে বসতবাড়ি নির্মাণ, স্বল্পসময়ে আয়ের লক্ষ্যে আগর বাগান উজাড় করে কলাবাগান চাষের কারণে অর্ধেকের কম বাগান টিকে আছে বর্তমানে। আর এসব কর্মকান্ডের নেপথ্যে নেতৃত্বদানকারী হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন সম্পাদিত চুক্তিপত্রের ১১নং উপকারভোগী ও তথাকথিত আওয়ামীলীগ নেতা জয়নাল আবেদীন। সূত্রে জানা যায়, চুক্তিবিধি ভঙ্গ করে অন্তত ৫ কোটি টাকা সমমূল্যের আগর বাগানের একটি অংশ দখল করে জয়নাল আবেদীন নামের এ ব্যক্তি বসতবাড়ি নির্মাণ এবং কলাগাছ রোপন করলেও সংশ্লিষ্ট বন কর্মকর্তারা রয়েছেন রহস্যজনক ভূমিকায়। বন কর্মকর্তাদের এমন রহস্যজনক ভূমিকার কারণে দিনের পর দিন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে চলে যাচ্ছে এসব আগার বাগানগুলো। আগর বাগান দখল করে বসতি নির্মাণ ও কলাগাছ রোপন ছাড়াও জয়নাল আবেদীন নামের এ ব্যক্তির বিরুদ্ধে রয়েছে সংরক্ষিত বনবিভাগ থেকে গাছ কর্তন, পাহাড় থেকে বালি উত্তোলন, বনভূমির জায়গা দখল করে অন্যত্র বিক্রি করা সহ বেশকিছু অভিযোগ। বলতে গেলে এক প্রকার বনের রাজা। তার ইশারাতেই রাতারাতি বনবিভাগের পাহাড় সমতলে পরিণত হয় বলেও জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এবিষয়ে জানতে চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক (এ.সি.এফ) দেলোয়ার হোসেন এর সাথে তার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। পরে এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) আব্দুল্লাহ আল মামুনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সংরক্ষিত সরকারি আগর বাগানের আগর গাছ কেটে কিংবা তৎসংশ্লিষ্ট ভূমিতে কোন ধরনের বসতি স্থাপন বা কলাগাছ রোপন করা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং অন্যায়। এবিষয়ে খোঁজখবর নেই দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এসময় তিনি (ডিএফও) প্রতিবেদকের কাছে আগর বাগান দখলের সাথে কারা কারা জড়িত তাদের ব্যাপারে তথ্য দিতে অনুরোধ জানান।
Leave a Reply