একের পর এক কৃষ্ণাঙ্গ হত্যায় এখন প্রতিবাদের ঝড় বইছে আমেরিকা জুড়ে,সমালোচনার মুখে পরেছে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও তার নিয়ন্ত্রণাধীন প্রশাসন।বিশ্বের ক্ষমতাধর রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজপথে কৃষ্ণাঙ্গ হত্যা কোন নতুন বিষয় নয়।তবে এবারের হত্যাকাণ্ডটি মার্কিন শাসন ব্যবস্থাকে নাড়িয়ে দিয়েছে।মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কৃষ্ণাঙ্গদের বিরুদ্ধে বর্ণ বৈষম্য এবং সহিংসতা দেশটির জন্মলগ্ন থেকেই চলে আসছে। এই পুরো সময়টাতে কৃষ্ণাঙ্গরা তাদের অধিকার আদায়ের জন্য বিভিন্ন সময় প্রতিবাদে রাজপথে নেমেছে।তবে কোন ক্ষেত্রেই ফলাফল লাভজনক হয় নি। বরং বারবার পুলিশি নির্যাতনসহ বিচিত্র বৈষম্যের শিকার হয়েছে তারা।
২০১৪ সালে এরিক গার্নার নামের এক কৃষ্ণাঙ্গকে হত্যা করা হয়েছিল।কিন্ত এখন পর্যন্ত সেই হত্যার বিচার সম্ভব হয়নি। এমন অসংখ্য হত্যাকাণ্ডের ফাইলে ধুলা জমেছে।
গত ২৫ মে আমেরিকার মিনিসোটা অঙ্গরাজ্যের মিনিয়াপোলিস শহরে ড্রেক শোয়িন নামে এক পুলিশ কর্মকর্তা জর্জ ফ্লয়েড নামে এক কৃষ্ণাঙ্গের ঘাড়ে ৮ মিনিট ৪৬ সেকেন্ড হাটু চেপে রেখে নির্মম ভাবে হত্যা করে।
এদিকে এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ফেটে পড়েছে গোটা আমেরিকা। কৃষ্ণাঙ্গদের পাশাপাশি প্রতিবাদে যোগ দিয়েছে অসংখ্য শ্বেতাঙ্গ। ২৯ মে ড্রেক শোয়িন নামে সেই পুলিশকে নামমাত্র গ্রেফতার করা হলেও মাত্র ৫০০ ডলার মুচলেকায় তার জামিন মঞ্জুর হয়েছে।এরপর থেকেই মার্কিন জনতা নানা ধরনের মিছিল ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে আসছে।
তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বেশ কড়া ভাবেই এই বিক্ষোভ পরিস্থিতি সামাল দিতে চেয়ে প্রায় ৪০ টি অঙ্গরাজ্যে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন ও জনগণের চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। এমনকি বিক্ষোভকারীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষের সময়ে হওয়া ক্ষয়ক্ষতির জন্য বিক্ষোভকারীদের দ্বায়ী করে,তাদের কঠোর ভাবে দমনের পরিকল্পনা করে আমেরিকার বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের মেয়র ও গভর্নরদের নির্দেশ দিয়েছেন।ন্যাশনাল গার্ডকেও বিক্ষোভ কঠিনভাবে দমনের জন্য বলেছেন ট্রাম্প। বিক্ষোভকারীদেরকে সম্পদ বিনষ্টকারী বলে আখ্যা দিয়ে দীর্ঘ মেয়াদে আটকে রাখার নির্দেশ জারি করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
আজকের আধুনিক বিশ্বে বর্ণবাদের মত কুৎসিত বৈষম্য কাম্য নয় বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।তারা আরো মনে করছেন,একটি দেশের প্রেসিডেন্টের উচিত বিভিন্ন মত ও পথের মাঝে ঐক্য প্রতিষ্ঠার দিকে লক্ষ্য দেওয়া।ট্রাম্পের এই বর্ণবাদী চিন্তার ফলে আজ গোটা আমেরিকা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।বিশ্বদরবারে মার্কিন শাসন ব্যবস্থা নিয়ে উঠছে নানা প্রশ্ন।অনাগত দিনে ট্রাম্প প্রশাসন কিভাবে সমালোচনাকে কাটিয়ে উঠে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনবেন তা নিয়ে রয়েছে নানা সংশয়।
Leave a Reply