ঈশ্বরদীতে বাসাভাড়া নিয়ে প্রতারণা করে একটি চক্র লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়।২০১৯ সালের পর নতুন করে প্রতারক চক্রের এক সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঈশ্বরদী থানা পুলিশ।
পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলায় অভিনব পন্থায় বাসাভাড়া নিয়ে প্রতারণা করছিলো এক চক্র।অভিযোগ বেশ পুরনো।হয়েছিলো মামলাও।লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়া এই চক্রটিকে পুলিশ গ্রেফতার করতে চালিয়েছে একাধিক অভিযান। ২০১৯ সালে তিনজন গ্রেফতারের পর নতুন করে গ্রেফতার হয়েছেন আরেকজন।নারায়ণগঞ্জ থেকে গ্রেফতার হওয়া আসামী দিয়েছেন অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্যও।ঈশ্বরদী ছাড়াও পাবনাতে থেকেও করেছেন বিভিন্ন অপকর্ম। ঈশ্বরদী থানার ওসি শেখ নাসির উদ্দীন এর থেকে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে। এদিকে ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের অফিসিয়াল ফেইসবুক একাউন্ট থেকে বিষয়টি প্রথম জানা যায়।
তার একাউন্ট থেকে জানানো হয় ” সম্প্রতি একটি প্রতারক চক্রের সন্ধান পাওয়া গেছে যারা ভুয়া নাম ঠিকানা ব্যবহার করে শহর এলাকায় অভিজাত বাসা ভাড়া নিয়ে সহজ সরল কিছু লোককে টার্গেট করে কোটি কোটি টাকার ব্যবসার প্রলোভন দেখিয়ে সর্বস্ব লুটে নিয়ে পালিয়ে যায়।
চক্রটি প্রথমে তার টার্গেটকে তাদের কথা কাজ ও টাকায় মোড়ানো কাগজের বান্ডিল প্রদর্শনের মাধ্যমে বিশ্বাস করতে বাধ্য করে যে তারা কোটি কোটি টাকার মালিক অথবা এমন কোন মালিকের হয়ে কাজ করছে। তারা টার্গেটকে সেই এলাকায় বিড়াট কোন প্রজেক্ট স্হাপনের জন্য জমি বা লোকজন সংগ্রহ করতে বলে এবং তাকে এই কাজে সহযোগিতা করার জন্য সেই প্রজেক্টে একটি বড় পদ অথবা বড় পার্সেন্টেজের শেয়ার দেয়ার প্রস্তাব দেয়। এতে টার্গেট স্বভাবতই খুশি হয়ে তাদের নির্দেশ মতো সব কাজ করতে থাকে। এক পর্যায়ে তারা তাদের কোম্পানির নিয়ম অনুযায়ী (টার্গেটের সামর্থ্য বিবেচনায়) ১০, ২০ বা ৩০ লাখ টাকার ব্যাংক স্টেটমেন্ট লাগবে বা কোম্পানির প্রয়োজনে দুই এক দিনের জন্য এই টাকা টার্গেটের ব্যাংক একাউন্টে রাখতে হবে বলে টার্গেটকে বোঝায়। এত অল্প সময় দেয়া হয় যে সে অন্য কারো সাথে তেমন একটা আলোচনা করার সময় পায়না। টার্গেটও বড় পদ বা লাভের আশায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই আশপাশের লোকজনের নিকট থেকে ধার দেনা করে এবং তার সর্বস্ব দিয়ে টাকা নিয়ে প্রতারকদের ভাড়া বাসায় হাজির হয়। সেখানে তারা কোম্পানির বস, কর্মচারী(অভিনয় করা), টার্গেট সবাই মিলে একসঙ্গে খাওয়া দাওয়া শেষে পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রতারকদের একজন রুমের বাইরে যায় এবং টার্গেটকেও একটু পরে রুমের বাইরে পাঠানো হয় তাকে ডাকার জন্য। এ সময় বাইরে থাকা প্রতারক নিজেকে একটু আড়াল করে রাখে। রুমের বাইরে টার্গেট তাকে খুঁজে না পেয়ে মোবাইলে কল দিলে সে কৌশলে টার্গেটকে একটু দূরে ডাকে। সে অনুযায়ী টার্গেট সেখানে গিয়ে প্রতারককে সেখানেও খুঁজে না পেয়ে ফোন দিলে ফোন রিসিভ হয়না অথবা ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। তখন টার্গেট তাড়াতাড়ি উক্ত ভাড়া বাসায় ফিরে বাসায় তালাবদ্ধ দেখতে পায় এবং তাদের সকল ফোন আজীবনের জন্য বন্ধ হয়ে যায়। এভাবে তার টাকা, চাকুরী এবং ব্যবসায়ের লভ্যাংশ সবকিছুর সমাধি ঘটে। ঈশ্বরদীতে এরকম দুইটি ঘটনায় তথ্য আমাদের কাছে এসেছে যার মাধ্যমে বিশ লক্ষাধিক টাকা খোয়া যায়।”
এ বিষয়ে ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ নাসির উদ্দীন বাংলাদেশ সারাবেলা এর ঈশ্বরদী প্রতিনিধিকে বলেন “২০১৯ সালে এই চক্রের ৩ জন আসামি গ্রেফতার হয়।নতুন করে আরো একজন আসামি গ্রেফতার করা হয়েছে নারায়ণগঞ্জ এর ফতুল্লা থেকে।তাকে গ্রেফতার করার পর আরো চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসে।।সে দীর্ঘদিন ধরে পাবনায় থেকে অপকর্ম চালায় বলেও ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে পুলিশের কাছে। “
Leave a Reply