গত ২০ নভেম্বর, শুক্রবার, রাজধানীর পুরান ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতালের শিক্ষার্থীদের হলের ছাদ থেকে বিশালাকার পলেস্তারা খসে পরে।
স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ, বাংলার প্রথম চিকিৎসা শিক্ষাকেন্দ্র এবং দেশের দ্বিতীয় মেডিকেল কলেজ।
সুত্রমতে জানা যায়, জুমার নামাজের আগে হলের বারান্দার ছাদ থেকে ১০ বর্গফুটের অধিক বিশালাকার পলেস্তারা বিকট শব্দে খসে পরে। যা কারো মাথার উপর পরলে হতো নির্ঘাত মৃত্যু। বারান্দায় ঠিক এমন জায়গায় পলেস্তারা খসে পরেছে যেখানে বসে শিক্ষার্থীরা পড়াশুনা করেন।
পড়ার টেবিলগুলোর অবস্থান ঠিক সেখানেই!
প্রতিবছর তিনশত MBBS,BDS শিক্ষার্থী চিকিৎসক হওয়ার জন্য এখানে পড়াশোনা করতে আসেন। তার সিংহভাগই কলেজের হলে থেকে শিক্ষাজীবন সমাপ্ত করেন।
এরমধ্যে ছেলেদের জন্য বরাদ্দকৃত হলের একটি নলগোলা ‘মেইন হল ছাত্রাবাস’ নামে পরিচিত।
যেখানে তৃতীয় থেকে পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থীরা থাকেন। মেইন হলের সামনের বিল্ডিংটি পাকিস্তান আমলে নির্মিত। যা অনেক আগেই মেয়াদোত্তীর্ন হয়েছে। প্রতিনিয়ত হলের ছাদ থেকে পলেস্তারা খসে পরছে। ইতিমধ্যে প্রতিটি রুমের ছাদ থেকে পলেস্তারা খসে এক ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।
এই ব্যাপারে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী শাকের আহমেদ বলেন, “সারাদিনের ক্লান্তি শেষে রুমে এসে বিছানায় শোবার পর ছাদের দিকে তাকালে আতকে উঠি। কখন জানি মাথার উপর ফাটল ধরা ছাদ থেকে পলেস্তারা খসে পরে।”
৪১০ নম্বর রুমের এক শিক্ষার্থী জানান,তার ছাদ থেকে প্রতিনিয়ত খসে পড়ার পরিপেক্ষিতে ছাদের নিচে কাপড়ের সামিয়ানা টানিয়ে,জীবনভীতি নিয়ে ঘুমান!
কলেজ প্রশাসনকে পলেস্তারা খসে পড়ার বিষয়ে আগেও অনেকবার জানানো হলেও তারা এ বিষয়ে নির্লিপ্ত, কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। আর তাই চলছে এভাবেই।বেশি সমস্যা হলে দায়সারা পলেস্তারা করে রং করে চাপিয়ে দেওয়া হয়! শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে গেলে ভয়াবহ রকমের মৃত্যু ঝুঁকিতে বসবাস করতে হবে হলের শিক্ষার্থীদের।
উল্লেখ্য, ১৯৮৫ সালের ১৫ অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচীন জগন্নাথ হলের একটি আবাসিক ভবনের ছাদ ধ্বসে ৩৯ জন ছাত্র, কর্মচারী ও অতিথি নিহত হয়। এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন আর না হয়, সেজন্য দ্রুততম সময়ের মধ্যে কার্যকরী সমাধান চান শিক্ষার্থীরা।
নাহলে হয়তো রানা প্লাজার মত মানবিক পরিস্থিতির সৃষ্টি হওয়া সময়ের ব্যবধান মাত্র
Leave a Reply