পটুয়াখালীর অনেকেই ঢাকা থেকে পটুয়াখালীর আসার জন্য নদী পথকে বেছে নেয়। পটুয়াখালীর দক্ষিণ অঞ্চলে শীত মৌসুমে লাউকাঠি, লোহালিয়া, কারখানা ও কবাই নদ-নদীতে ডুবোচরে প্রায়ই আটকে পড়ছে লঞ্চ। আরও কয়েকটি স্থানে ডুবোচর আছে।
নদীতে অন্তত ২ মিটার গভীরতা থাকলে নৌযান চলাচল করতে পারে। কিন্তু ভাটার সময় অনেক স্থানে দেড় মিটার গভীরতা পাওয়া যায়।
শীত মৌসুমের শুরুতে পটুয়াখালীর নদ-নদীর পানি কমে যাওয়ায় নাব্যতা-সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। নাব্যতা ফেরাতে প্রতিবছর নদীতে খননকাজ চললেও তা তেমন কাজে আসছে না।
এ অবস্থায় ঢাকা-পটুয়াখালী নৌপথে চলাচলকারী যাত্রীবাহী লঞ্চগুলো ভাটার সময় প্রতিদিনই ডুবোচরে আটকে পড়ছে। ব্যাহত হচ্ছে চলাচল।
পটুয়াখালী-ঢাকা নৌপথে মোট ১০টি দ্বিতল লঞ্চ চলাচল করে। এ ছাড়া গলাচিপা থেকে পটুয়াখালী হয়ে এই পথে ঢাকায় যাতায়াত করছে ৪টি দোতলা লঞ্চ।
এই লঞ্চগুলো ঢাকার উদ্দেশে পটুয়াখালী থেকে ছেড়ে যাওয়ার পরপরই পটুয়াখালী নদীবন্দর প্রবেশমুখে লাউকাঠি নদীর ডুবোচরে লঞ্চগুলো বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে। এরপর লোহালিয়া, কারখানা, কবাই নদ-নদীর ডুবোচরে প্রায়ই আটকে পড়ছে লঞ্চগুলো।
এ সময় গন্তব্যে পৌঁছাতে জোয়ারের জন্য অপেক্ষা করতে হয় লঞ্চগুলোকে। নৌপথের নাব্যতা সংকটের কথা উল্লেখ করে লঞ্চের মাস্টাররা যৌথভাবে নদীবন্দরে লিখিত আবেদনে বলেছেন, যেকোনো সময়ে এই নৌপথ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ার আশঙ্কা
রয়েছে। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) সূত্রে জানা গেছে, পটুয়াখালী নদীবন্দর থেকে নদী খননের জন্য বিআইডব্লিউটিএ ঢাকা ড্রেজিং বিভাগের তিনটি খননযন্ত্র নদী খননের কাজ শুরু করেছে।
নদীর নাব্যতা ফেরাতে ডি-পূর্ণভার নামের ড্রেজারটি ৯ অক্টোবর থেকে আফালকাঠি-সোনাকান্দা এলাকায় কবাই নদে খননকাজ শুরু করেছে।
আরডিএল-১ ড্রেজারটি ২০ অক্টোবর থেকে কবারই-সোনাকান্দা এলাকায় খননকাজ করছে। এ ছাড়া ১৩ অক্টোবর থেকে ডি-১৩৮ ড্রেজারটি লোহালিয়া নদীতে খনন শুরু করেছে।
এদিকে নদী খনন করা হলেও এখনো নাব্যতা ফেরেনি। ১৩ নভেম্বর রাতে পটুয়াখালী থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া এআর খান-১ লঞ্চটি শত শত যাত্রী নিয়ে আফালকাঠি এলাকার কারখানা নদে ডুবোচরে আটকে পড়ে।
এর পরদিন ১৪ নভেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে নাব্যতা-সংকটের কারণে একই স্থানে তিনটি দোতলা লঞ্চ সহস্রাধিক যাত্রী নিয়ে ডুবোচরে আটকে পড়ে।
লঞ্চগুলো হচ্ছে সুন্দরবন-১৪, রয়েল ক্রুজ-১ ও জামাল-৫। প্রায় তিন ঘণ্টা পর জোয়ারের সময় নদীর পানি বাড়লে লঞ্চগুলো নির্দিষ্ট গন্তব্যে ছেড়ে যায়।
গলাচিপা টু ঢাকা এম ভি পূবালী লঞ্চের সিনিয়র মাষ্টার মোঃ জসিমউদদীন জানান, দীর্ঘদিন ধরে নদী খনন চললেও নদীর নাব্যতা ফিরে আসেনি।
নদীতে ২ মিটার গভীরতা থাকলেও নৌযান চলাচল করতে পারে। কিন্তু ভাটার সময় অনেক স্থানে দেড় মিটার গভীরতা পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে নদীবন্দরের সহকারী পরিচালক খাজা সাদিকুর রহমান বলেন, সকল নৌ-জান লঞ্চের মাষ্টার লিখিত ভাবে আমাদের জানিয়েছেন।
আমরা বিষয়টি আমলে নিয়ে বিআইডব্লিউটিএ’র ড্রেজিং বিভাগের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে লিখিত ভাবে জানিয়েছি। আশা করছি নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে দ্রুত’ই এর সমাধান হয়।
Leave a Reply