পিরোজপুর পৌরসভার কুমারখালী এলাকায় চুরি মামলার আসামী ধরতে গিয়ে পুলিশের উপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলায় ৫ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে এবং হামলায় পুলিশের একটি পিকআপ ভ্যান ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। রবিবার রাত ২টার দিকে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পুলিশ ৮ জনকে গ্রেফতার করেছে।
আহত পুলিশ সদস্যদের মধ্যে দুইজনকে পিরোজপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হামলায় আহতরা হলেন, পিরোজপুর সদর থানার এসআই সৈকত হোসেন সানি, এসআই মাহামুদুল হাসান, এএসআই মো. খাইরুল হাসান, এএসআই সাইফুল ইসলাম এবং কনস্টেবল মো. মারুফ হোসেন হাওলাদার। গুরুতর আহত পুলিশের এএসআই মো. খায়রুল হাসান ও পুলিশ সদস্য মারুফ হোসেন হাওলাদারকে পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পিরোজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মোল্লা মো. আজাদ হোসেন জানান, কয়েকদিন আগে পিরোজপুর সদর হাসপাতাল থেকে সিসি ক্যামেরা চুরি হয়। পুলিশ ঐ চুরির মামলায় রবিবার রাত ২টার দিকে শহরতলীর কুমারখালী এলাকা থেকে মেহেদী হাসান সিকদার ওরফে হাসান সিকদারকে আটক করে থানায় আনার সময় হাসানের সহযোগীরা তাকে ছিনিয়ে নেয়ার জন্য পুলিশের উপর হামলা চালায়। হামলায় এসআই ও এএসআইসহ ৫ পুলিশ সদস্য আহত হয়।
পিরোজপুর জেলা হাসপাতালের চিকিৎসক তারেক আজিজুল্লাহ জানান, আহত ৫ পুলিশ সদস্যদের মধ্যে দুইজনকে জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে, পুলিশের উপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় পুলিশ রবিবার রাতে এবং সোমবার কুমারখালীসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ৮ জনকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃতরা হল- কুমারখালী এলাকার শাহা সিকদারের ছেলে সোহেল সিকদার (৪৫), মৃত আনোয়া হোসেন সিকদারের ছেলে মেহেদী হাসান সিকদার (২৭), আবুয়াল সিকদারের ছেলে ওসমান সিকদার (৩০), সোহেল সিকদারের ছেলে শুভ সিকদার (২০), মো. আবুল বাসার সেখের ছেলে রেজাউল করিম সেখ (২৫), মো. ফারুক খানের ছেলে সৌরভ খান (২০), মো. আবুয়াল কাজীর ছেলে জুয়েল কাজী (২৫) এবং নেছারাবাদ (স্বরূপকাঠী) উপজেলার জলাবাড়ী গ্রামের শিব প্রশাদ দাসের ছেলে শাওন দাস (২২)।
পিরোজপুর সদর থানার ওসি মো. নুরুল ইসলাম বাদল জানান, পুলিশের উপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় পিরোজপুর সদর থানার এসআই মাহামুদুল হাসান বাদী হয়ে ১৬ জন নামীয়সহ আরও ৪০/৫০ জন অজ্ঞাতনামা আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ এ ঘটনায় ৮ জনকে আটক করেছে। অন্য আসামীদের গ্রেফতারের জন্য বিভিন্ন স্থানে পুলিশের অভিযান চলছে।
উল্লেখ্য, পিরোজপুর শহরতলীর কুমারখালী এলাকাটি দীর্ঘদিন থেকে একটি সন্ত্রাসী এবং মাদক ব্যবসায়ীদের জনপথ হয়ে উঠেছে। পিরোজপুর পৌর শহরসহ আশেপাশের বিভিন্ন এলাকায় সন্ত্রাসী কার্যকলাপ ও মাদক ব্যবসার সাথে জড়িতদের বেশীরভাগেই বাড়ী কুমারখালী এলাকায়।
গত বছরের ৭ অক্টোবর পিরোজপুরের বেকুটিয়ায় নির্মাণাধীন ৮ম বাংলাদেশ-চিন মৈত্রী সেতু প্রকল্পের চীফ টেকনিশ্যান লাও ফ্যান হত্যার ঘটনায় পুলিশ সন্দেহভাজন দুই যুবককে কুমারখালী এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছিল। যার একজনের বাড়ি ছিল কুমারখালীতে। অন্যজন সেখানে এসে আশ্রয় নিয়েছিল।
Leave a Reply