তিনি আরও বলেন, ‘আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার বর্তমান প্রধানমন্ত্রী কোনও প্রশ্ন না করেই এই বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বাজেট দিয়েছেন। তার প্রতিফলন আজ আমরা দেখতে পাচ্ছি।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এমরান কবির চৌধুরী বলেন,”কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রকল্প বাস্তবায়নে যে গড়িমসি তা জানতে পেরে মাননীয় অর্থমন্ত্রীর সাথে পরামর্শ করে এ প্রকল্পের কাজ সেনাবাহিনীকে দেওয়া হয়েছে।”
মঙ্গলবার (১৬ মার্চ) দুপুর আড়াইটায় এক ভার্চুয়াল সভায় বিশ্ববিদ্যালয়টির ১৬৫৫ কোটি ৫০ লাখ টাকার মেগা প্রকল্পের কাজ উদ্বোধন করেন অর্থমন্ত্রী আ.হ.ম মুস্তফা কামাল। সভা শেষে গেইটের কাজ উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরী। এতে করে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্যদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশার বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে।
এসময় রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহেরের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরী, কোষাধ্যক্ষ ড. মো. আসাদুজ্জামান, সেনাবাহিনীর প্রকল্প পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্ণেল মোহাম্মদ আলী, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. মো: শামিমুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক ড. কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দীনসহ বিভিন্ন অনুষদের ডীন, বিভাগের প্রধানবৃন্দ, কর্মকর্তা ও শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।
শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় একটি ফ্লাগশিপ শিক্ষালয়। আধুনিকতার সাথে তাল মিলিয়ে শিক্ষার্থীরা যেন প্রফেশনাল শিক্ষাকে গুরুত্ব দিতে শেখে বর্তমান শিক্ষা কাঠামোতে সরকার সে বিষয়ে গুরুত্ব প্রদান করছে। আমি আশা করছি যে সনাতন মনোভাব থেকে বেরিয়ে এসে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রফেশনাল শিক্ষাকে জড়িয়ে নেবে। কর্মসংস্থানে যোগ্য করে তোলার জন্য কতৃপক্ষ নতুন নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করবে। প্রয়োজন হলে চলমান বিভাগ এবং কোর্স সমূহের মডিউল পরিবর্তন করবে। কারন আমরা যুগোপযোগী দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. শামীমুল ইসলাম ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়ক থেকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত স্বতন্ত্র সড়কের দাবী তুলে বলেন, এমন বড় প্রকল্প একটুর জন্য অপূর্ণতা থেকে যাবে সেটি আমরা প্রধান অতিথির দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। একটি স্বতন্ত্র সড়ক খুবই প্রয়োজন। বর্ধিত ক্যাম্পাস আর ভিতরে হওয়ায় সেটি নতুন করে সবার দাবী হয়ে উঠছে।
লেফটেন্যান্ট কর্ণেল মোহাম্মদ আলী বলেন, যে আশা নিয়ে সেনাবাহিনীর কাছে অর্পণ করা হয়েছে। আমরা একান্ত চেষ্টা করব নির্ধারিত সময়ে বাস্তবায়ন কাজ শেষ করা। আমরা সবার জ্ঞাতার্থে জানাতে চাই আগামী ৫০ বছর পরে বিশ্ববিদ্যালয়টি কেমন হবে সে বিষয়ে আমরা মাস্টার প্লান তৈরি করেছি। এক্ষেত্রে আমরা শিক্ষক শিক্ষার্থী সহ সংশ্লিষ্ট সকলের মতামতকে প্রাধান্য দেয়ার প্রতিশ্রুতি প্রদান করছি। তবে আমরা সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।
জানা যায়, গত ১১ মার্চ ভৌত অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন বিগ্রেডের সাথে চুক্তি করে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়। এ প্রকল্পের প্রধান প্রধান কার্যক্রমগুলো হল ২০০.২২ একর ভ‚মি অধিগ্রহণ, ১০০ একর ভ‚মি উন্নয়ন, ৪ টি ১০ তলা একাডেমিক ভবন, ২য় প্ৰশাসনিক ভবন, ৪টি ১০ তলা আবাসিক হল, উপাচার্যের বাসভবন, শিক্ষকদের আবাসিক ভবন, ১০ তলা ডরমেটরি, কর্মচারীদের আবাসিক ভবন, স্কুল বিল্ডিং নির্মাণ, ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র, অডিটোরিয়াম, ইন্টারন্যাশনাল কমপ্লেক্স, মেডিকেল ও ডে কেয়ার সেন্টার, কেন্দ্রীয় মসজিদ, স্মৃতিস্তম্ভ, স্পোর্টস কমপ্লেক্স, পারিবারিক বিনোদন এলাকা উন্নয়ন, প্রধান ফটক, ৫০ হাজার বর্গ মিটার অভ্যন্তরীণ রাস্তা, লেক খনন ও ব্রিজ নির্মাণ, ওয়াচ টাওয়ার, ২০টি মোটরযান ক্রয় (৫ টি মাইক্রোবাস, ৫টি বাস, ২টি অ্যাম্বুলেন্স, ১টি জীপ, ১টি পিকআপ, ১টি কার, ৫টি মোটরসাইকেল), শেডসহ গাড়ির ওয়ার্কশপ ও যন্ত্রপাতি ক্রয়, পরামর্শক ব্যয়।
Leave a Reply