করোনাকালিন সময়ে আইন অমান্যকারি বিভিন্ন পয়েন্টে প্রায় ৫০জন টমটম চালককে শাস্তির বদলে খাদ্য সামগ্রী উপহার দিয়ে লকডাউন চলাকালিন বাড়িতে থাকার অনুরোধ করে ছেড়ে দিলেন ৩৪ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) টহলরত সহকারী পরিচালক ইয়ার হোসাইন এর নেতৃত্বে একটি টিম। টমটম চালকদের গুনতে হয়নি জরিমানা। তারা আজ হাসিমুখে ঘরে ফিরে গেছে।
রবিবার (৮ আগস্ট) দুপুর থেকে তাদের আটক করা হয় বলে জানা গেছে। একইদিন বিকালে তাদের জরিমানা বা শাস্তির আওতায় না এতে খাদ্য সামগ্রী উপহার দিয়ে বাড়িতে চলে যেতে বলেন। করোনার শুরু থেকে কক্সবাজারে করোনাকালিন লকডাউন বাস্তবায়নে কাজ করছে ৩৪ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) কক্সবাজারের টহলদল। বিশেষ জরুরিকাজে বের হয়েছেন তাদের লকডাউন সম্পর্কে অবগত করে ছেড়ে দিচ্ছে। যারা লকডাউন আইন অমান্য করে সড়কে টমটম নিয়ে বের হয়েছে তাদেরকে কক্সবাজারের দুটি পয়েন্টে আটক করে ৩৪ বিজিবি কক্সবাজার। একটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সামনে আরেকটি বিজিবি ক্যাম্পের সামনে।
আটককৃত টমটম চালকরা জানান, এই করোনাকালিন সময়ে আমাদের পরিবার না খেয়ে আছে বাধ্য হয়ে টমটম নিয়ে বের হয়েছি।কক্সবাজার বিজিব ক্যাম্পের সামনে চলাচলকালে আটককৃত মোস্তফা কামাল জানান, আমি আজকে টমটম নিয়ে বের হয়েছি কিছু রোজগার করে পরিবারের জন্য কিছু চাল ডাল কিনবো বলে। কিন্তু বিজিবি আমাদের আটক করেছে এটি সত্যি। কিন্তু আমাদের যখন ছেড়ে দেন তখন পরিবারের জন্য চাল, ডাল তেলসহ অন্যান্য সামগ্রী হাতে দিয়ে বলেন বাড়িতে চলে যেতে।আমার চোখে পানি ধরে রাখতে পারিনি। আমরা মনে করেছিলাম আমাদের শাস্তি দেওয়া হবে। তার বদলে এই খাদ্য সামগ্রী উপহার দিলো বিজিবি। সিএনজি চালক শহিদুল্লাহ জানান, আমি এসেছি টেকনাফ থেকে। আমাকে বিজিবি আটক করার পর আমার মনে ভয় চলে আসে। হয়তো আইনগত ব্যবস্থা নিবেন। কিন্তু বিকালে আলীরজাহান বিজিবি ক্যাম্পের সামনে আটককৃতদের একত্র করে আমাদের এই করোনা কালিন সময়ে নিজ নিজ বাড়িতে থাকার অনুরোধ জানিয়ে আমাদের সকলকে খাদ্য সামগ্রী উপহার দিলো। যা আমি কল্পনাও করি নাই। টমটম চালক বিমল শহিদুল্লাহর কথার সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে বলেন, সত্যি ভয়ে ছিলাম। যদি আমাদের শাস্তি দেন। তবে বিজিবির মানবিকতায় অবাক হয়েছি। তারা আমাদের বুঝিয়ে বলে খাদ্য সামগ্রী উপহার দিয়ে বাড়িতে চলে যেতে বলেছেন। আমরা আজকে থেকে লকডাউন চলাকালীন বের হবো না। ৩৪ বিজিবি’র কক্সবাজার সহকারী পরিচালক ইয়ার হোসাইন জানান, আমরা এই করোনাকালিন সময়ে লকডাউন শুরু হওয়ার পর থেকে আমাদের বিজিবি সৈনিকরা রাতদিন পরিশ্রম করে যাচ্ছে। যারা লকডাউন আইন অমান্য করছে তাদের আইনে আওতায় আনা হচ্ছে। আর যারা কোন কাজে বের হচ্ছে তাকে লকডাউন সম্পর্কে ও করোনা সম্পর্কে অবগত করে ছেড়ে দিচ্ছি। কক্সবাজারের বিভিন্ন পয়েন্টে আইন অমান্যকারি অনেক টমটম আটক করা হয়।তাদের প্রাথমিকভাবে লকডাউন সম্পর্কে অবগত করে তাদের পরিবারের জন্য খাদ্য সামগ্রী দিয়ে বাড়িতে চলে যেতে অবগত করেছি। আশা করছি তারা লকডাউন শেষ না হওয়া পর্যন্ত আর বের হতে হবে না। গত শনিবার একইভাবে কক্সবাজার শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে টমটম চালকদের আটক করে সতর্ক করে দিয়ে তাদের খাদ্য সামগ্রী উপহার দিয়ে বাড়িতে থাকার অনুরোধ জানান। বিতরণকালে উপস্থিত ছিলেন, নায়েক সুবেদার তোফাজ্জেল ও একদল বিজিবি সৈনিক।
Leave a Reply