ইসলামী ব্যাংক ভেড়ামারা শাখার ম্যানেজার, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিবিরের সাবেক সভাপতি ও জামায়াতে ইসলামির নায়েবে আমির আব্দুস সাত্তারের বিরুদ্ধে বেড়িয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর নানা তথ্য। ইতিমধ্যে এই ব্যাংক কর্মকর্তার তদন্তে নেমেছে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা। আজ বুধবার মাগুড়া সদর থানায় আব্দুস সাত্তারের রোষানলের শিকার মোঃ মিলনুজ্জামান বাদী হয়ে জামায়াত নেতা সাত্তারের স্ত্রী সহ ৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে। অভিযোগ উঠেছে নিজ স্ত্রীর একমাত্র ভাই রফিক কে শ্বশ্বুরের সম্পত্তি গ্রাস করতে খাটিয়েছেন জেলের ঘানি। কে এই আব্দুস সাত্তার? সাধারন পরিবারের সন্তান হয়েও কিভাবে তিনি অঢেল সম্পত্তির মালিক হলেন? এ নিয়ে শুরু হয়েছে নানা জল্পনা কল্পনা। কুষ্টিয়া শহরের প্রাণকেন্দ্র কোর্টপাড়ায় আব্দুস সাত্তারের নিজস্ব বিলাশ বহুল ফ্ল্যাট, হাউজিং ডি ব্লকে নির্মানাধীন ৭ তলা ভবনের ৫ তলার নির্মান কাজ চলছে, ঢাকায় মিরপুর পীরেরবাগে জামায়াত টাওয়ার নামে পরিচিত সকল জামায়াত নেতারা মিলে সেভেনটি ওয়ান টাওয়ার নামে যে ভবন করেছেন সেখানেও দুই কোটি টাকা মুল্যের দু’টি ফ্ল্যাট রয়েছে, এই শহর দাপিয়ে বেড়াচ্ছে আব্দুস সাত্তারের ৭টি ট্রাক, ১টি হাইচ, মিরপুর উপজেলায় চলছে ব্যাংকের নিয়মনীতি উপেক্ষা করে অন্যনামে এজেন্ট ব্যাংকিং সহ বহুবিধ অর্থনৈতিক কর্মযজ্ঞের মধ্যে নিমজ্জিত ব্যাংকার আব্দুস সাত্তার। একজন ব্যাংকারের এত অর্থ সম্পদ ভাবতে অবাক হয় সাধারণ মানুষ। যেখানে ব্যাংকের বড় বড় কর্মকর্তারা আর্থিক টানা পোড়েনের মধ্যে কালাতিপাত করেন সেখানে আব্দুস সাত্তারের মতো বিলাস বহুল এবং অর্থ সম্পদের পাহাড়ে হাবুডুবু খাওয়ার পেছনে রহস্য কি? এই অর্থের যোগান দাতা কারা? জামায়াতে ইসলাম পরিচালনার বিদেশী অর্থের সন্ধান পেয়েছে জামায়াতের নায়েবে আমীর ব্যাংকার আব্দুস সাত্তার? অনুসন্ধানে জানা যায়, আব্দুস সাত্তার কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার বিরামপুর গ্রামের মৃত ছাদেক আলীর ছেলে। জামায়াতের দূর্গ নামে খ্যাত তার নিজ গ্রাম থেকেই ছাত্র শিবিরের রাজনীতির হাতে খড়ি। এরপর কলেজ এবং ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নকালে ছাত্র শিবিরের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। তার কুষ্টিয়া শহরে সনো টাওয়ারের পেছনের বাসায় রহস্যজনক মানুষের যাতায়াত লক্ষ্য করা যায়। সিসি ফুটেজে দেখা যায় সরকার পতনের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আমির হামজা কারাগারে বন্দি। এর আগে নিয়মিত তার যাতায়াত ছিলো আব্দুস সাত্তারের বাসায়। জামায়াতের মহিলাকর্মীদের বোরখা পরিহিত অবস্থায় তার বাসায় অহরহ যাতায়াত করতে দেখা যায়। জামায়াতে ইসলামের আমীর, নায়েবে আমীর, রোকন এবং সাথী সদস্যরা গোপন বৈঠক করে আব্দুস সাত্তারের বাসায়। সম্প্রতি রোজার ঈদের পর তার পরিবার যখন মাগুরায় শশুর বাড়িতে তখন তার বাসাতে জামায়াতের নেতাদের নিয়ে গোপন বৈঠক করতে দেখা যায়। জামায়াত নেতাদের পাশাপাশি বোরখা পরিহিত দু’জন মহিলা কর্মীকেও ঐ সভায় উপস্থিত থাকতে দেখা যায়।
আব্দুস সাত্তার তার বড় ভাইয়ের নামে রড, সিমেন্ট ও সারের ব্যবসা পরিচালনা করে থাকেন। বিষয়গুলো নিয়ে গোয়েন্দা সংস্থা মাঠে নেমেছে। ইতোমধ্যে তার বাড়ির সামনে অন্যান্য প্রতিষ্ঠান থেকে সিসি ফুটেজ সংগ্রহ করেছে গোয়েন্দা সংস্থা। তার ছাত্র জীবন থেকে কর্মজীবন এবং বর্তমানে ব্যাংকের চেয়ারে বসে জামায়াতে ইসলামের পদে থেকে এই রাজনীতি সংগঠনের নেতৃত্ব দেওয়ার সকল তথ্য গোয়েন্দাদের হাতে। এছাড়াও তার এবং তার পরিবারের একাধিক মোবাইল কল রেকর্ড ও সিডিআর এখন গোয়েন্দাদের হাতে।
বিষয়টি গণমাধ্যমে আসার পর তোলপাড় শুরু হয়েছে কুষ্টিয়ায়। আইন শৃংখলা বাহিনীর কাছেও আব্দুস সাত্তারের বিরুদ্ধে তথ্য প্রমানসহ একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে। ব্যাংক কর্মকর্তা সাত্তারের স্ত্রীর বিরুদ্ধে রয়েছে জামায়াতের নারী কর্মীদের সংগঠনের গতিশীলতা আনতে দফায় দফায় কুষ্টিয়ায় বৈঠক। স্বাধীনতা বিরোধী এসব চক্র কে রুখতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ জরুরী বলে মতামত দিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা পক্ষের শক্তি।
Leave a Reply