গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) এক শিক্ষার্থীকে এলোপাতাড়িভাবে হাতুড়িপেটা করার অভিযোগ উঠেছে পিতাপুত্রের বিরুদ্ধে। হাতুড়িপেটায় গুরুতর আহত হলে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে শিক্ষার্থীকে। এ বিষয়ে গোপালগঞ্জ সদর থানায় একটি মামলা করা হয়েছে।
আহত শিক্ষার্থীর নাম মোঃ শরীফ রাজু (২৩)। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ তৃতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত।আহত শিক্ষার্থীর বাড়ি নড়াইল জেলায়। অপরদিকে, আক্রমণকারীরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একই বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তুফান চৌধুরী (২২), তার বড় ভাই মোর্শেদ চৌধুরী (৩০) ও তাদের পিতা মুরাদ চৌধুরী (৭০)। ঘটনার সময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা।
রবিবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুর একটার পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিকটবর্তী গোবরা এলাকার সোবহান সড়কে এ ঘটনা ঘটে। পরে সেখান তাকে থেকে বাংলা বিভাগের শিক্ষক আবদুর রহমান এসে উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যায়। কিন্তু অবস্থার অবনতি হলে এম্বুলেন্সে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় গোপালগঞ্জ সদর থানায় বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী গোলাম রুসুল বাদী হয়ে মোর্শেদ চৌধুরী ও তুফান চৌধুরীকে প্রধান আসামী করে অজ্ঞাত ৫-৭ জনের নামে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় উল্লেখ করা হয়, গোবরা সোবহান সড়কে শরীফ রাজু ও তার সহপাঠী মুন্না হেঁটে যাচ্ছিলো। পথিমধ্যে ১ ও ২ নং বিবাদী এসে হাতুড়ি দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে। এ সময় বাদী গোলাম রুসুল এগিয়ে ঠেকানোর চেষ্টা করলে তাকেও মারধর করা হয়। পরে রাজুকে ৫-৭ জন মোর্শেদ চৌধুরীর বাসায় আটকে রাখলে বাংলা বিভাগের শিক্ষক আবদুর রহমান তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।
এ ঘটনায় ভিক্টিম রাজু বলেন, আমি ও বন্ধু হেঁটে সোবহান সড়কে যাচ্ছিলাম কম্বল আনতে। কিন্তু পথিমধ্যে পূর্ব শত্রুতার জেরে তুফান চৌধুরী ও তার বড় ভাই মোর্শেদ চৌধুরী আমাকে হাতুড়ি দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে।
প্রত্যক্ষদর্শী মুন্না বলেন, আমি এবং রাজু আমাদের অপর এক সহপাঠীর সাথে একটি মেস থেকে কম্বল আনতে যাচ্ছিলাম। সামনে একটা মেয়ে ছিলো। মেয়েটি মনে করে আমরা তাকে অনুসরণ করছি। কিন্তু আমরা যাচ্ছিলাম কাজে। পরে মেয়েটি মেস মালিককে জানান। মেস মালিক এসে আমাদের সাথে কথা বললে আমরা তখন তার এই অভিযোগ অস্বীকার করি এবং বাড়িওয়ালাকে বিষয়টি বুঝিয়ে বলি। বাড়িওয়ালা রাজুর পূর্ব পরিচিত হওয়ায় এক পর্যায়ে তিনি আমাদের চলে যেতে বলেন। কিন্তু আমরা যখন ফিরে আসছিলাম তখন বাড়িওয়ালার বড় ছেলে মোর্শেদ চৌধুরী ছুটে এসে রাজুকে কিল ঘুষি মারতে শুরু করে।
এছাড়া মুন্না আরও বলেন, আমরা মোরশেদকে থামানোর চেষ্টা করলে একপর্যায়ে তার ছোট ভাই তুফান চৌধুরী একটি হাতুড়ি এনে রাজুকে এলোপাতাড়ি মারতে শুরু করে। পরে শিক্ষকদের জানালে তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে রাজুকে উদ্ধার করে।
এ বিষয়ে ইভটিজিং এর অভিযোগকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ছাত্রী (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) বলেন, “আমাকে রাজু নামের ছেলেটি বাজে কথা বলছিলো ও অনুসরণ করছিলো বলে মনে হয়।পরবর্তীতে আমি বিষয়টি মেস মালিককে জানাই।যদি সেই ছেলের গায়ে হাত তোলা হয়,তবে তা অন্যায় হয়েছে।”
গোপালগঞ্জ সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাইফুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় যারা জড়িত আছে তদন্ত সাপেক্ষে অবশ্যই তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। এজন্য যা যা কাজ করা দরকার তা করে যাচ্ছি। ভিক্টিম যেন ন্যায় বিচার পায় তার জন্য চেষ্টা করছি।
Leave a Reply